তিন কেন্দ্রে উপনির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে কংগ্রেস, বামেদের সঙ্গে মধুচন্দ্রিমা শেষ
শেষপর্যন্ত নীচুতলার কর্মীদের মতকে প্রাধান্য দিয়ে তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে কংগ্রেস। সোমবার বিধানসভবনে রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন অধীর।
কলকাতা, ২৪ অক্টোবর : শেষপর্যন্ত নীচুতলার কর্মীদের মতকে প্রাধান্য দিয়ে তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে কংগ্রেস। সোমবার বিধানসভবনে রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সিপিএম তথা বামেদের প্রতি একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েই ভোট-যুদ্ধে নামার কথা ঘোষণা করে দেন তিনি।
দলের কঠিন সময়ে কোন পথ শ্রেয় স্থির করতে হিমশিম অবস্থা হচ্ছিল তাঁর। দেওয়ালে পিঠ থেকে যাওয়া অবস্থায় কী করা উচিত, তা স্থির করতে পারছিলেন না অধীরবাবু। প্রদেশ কমিটির বৈঠকে সবার মত নিয়েই তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি।
তমলুক, কোচবিহার ও মন্তশ্বরে প্রার্থী দেওয়া হবে, নাকি বামফ্রন্ট প্রার্থীদের দিকে পরোক্ষে হাত বাড়িয়ে দেবে কংগ্রেস, সেদিকে তাকিয়ে ছিলেন নীচুতলার কর্মীরাও। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির এই ঘোষণায় তাঁদের উৎকণ্ঠার অবসান হল।
উপনির্বাচন নিয়ে কার্যত দ্বিধাবিভক্ত ছিল বিধানভবন৷ আগেই অধীরবাবু ঘোষণা করেছিলেন, তৃণমূল বা বিজেপি সুবিধা পায় এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। তাতে জল্পনা চলতে থাকে, তবে কি আবার কাস্তে হাতে তুলে নেবেন অধীর? ঠিক এই জায়গা থেকে আলোচনা শুরু হলেও, ক্রমশ আলোচনায় দৃঢ় হতে থাকে একলা লড়াইয়ের তত্ত্বই।
তারপর উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর বামফ্রন্টের তড়ঘড়ি প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা। কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করায় অপমানিত বোধ করে কংগ্রেস। তাই প্রদেশ নেতৃত্বও প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত করে।
বামফ্রন্ট একপ্রকার জানিয়েই দিয়েছে, আর জোটে নেই তারা। এবার কংগ্রেস যদি জোট করতে আগ্রহী হত, তবে তাদের দৈনতাই আবার ফুটে উঠত। তাই সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক চাইছে না কোনও নেতাই। এদিকে তমলুক বা কোচবিহারের কংগ্রেসকর্মীরা চাইছেন ভোটে হার-জিত রয়েছে। তাই হার হোক তাতে আপত্তি নই, কিন্তু ভোটে লড়তে চান তাঁরা।
এদিনের বিশেষ বৈঠকে দুই পূর্বসূরি সোমেন মিত্র ও প্রদীপ ভট্টাচার্যের কাছে অধীরবাবু জানতে চান, এই পরিস্থিতিতে তাঁর কী করা উচিত। পরিষদীয় দলের উপনেতা নেপাল মাহাতো, বিধায়ক অসিত মিত্র, সাংসদ মৌসম বেনজির নুর, আবু হাসেম খান চৌধুরী, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সি এবং পূর্ব মেদিনীপুর, কোচবিহার ও বর্ধমানের জেলা সভাপতিরাও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান রবিবার দিল্লি যাওয়ায় উপস্থিত ছিলেন না। এই বৈঠকে দলে ভাঙন রুখতেও আলোচনা হয়।