ঋতব্রত-র নামে উপরাষ্ট্রপতির কাছে ধর্ষণের অভিযোগ, আত্মহত্যার হুমকি নির্যাতিতার
এবার ঋতব্রতকে আরও বিপাকে ফেলতে তৎপর হলেন নম্রতা দত্ত। তিনি সরাসরি চিঠি দিলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এবং এথিকস কমিটিকে। বিচার না পেলে আত্মহত্যারও হুমকি দিয়েছেন তিনি।
কোথায় ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়? পুলিশের কাছে থাকা দু'টি ফোনের কোনওটিতেই এখন তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু অভিযোগের নাগপাশ আর আইনি জালে তিনি যে ক্রমশই জড়িয়ে যাচ্ছেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। শুক্রবার সকালেই ভবানী ভবনে সিআইডি-র দফতরে বহিষ্কৃত সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই জন্য় ১০ অক্টোবর সন্ধ্যায় কসবার হালতুতে ঋতব্রতর বাড়িতেও নোটিস সাঁটিয়ে এসেছে সিআইডি। এরপরও কোনও খোঁজ মিলছে না সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হওয়া সাংসদের। এমনকী, টুইটারে সমানে তাঁর প্রতিক্রিয়া দিয়ে গেলেও গত চার দিন ধরে সেখানেও দেখা মেলেনি ঋতব্রতর। তাঁর বান্ধবী দূর্বা সেন মাঝে ঋতব্রতর হয়ে জবাব দিলেও এখন তিনি চুপ। সমানে বেজে যাচ্ছে ফোন, কিন্তু উত্তর দিচ্ছেন না দূর্বা। যদিও, এই দূর্বা সেনই ঋতব্রতর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর-এর প্রেক্ষিতে আইনি পদক্ষেপের কথা জানিয়েছিলেন।
এই পরিস্থিতির মধ্যে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিলেন ঋতব্রত-র বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা নম্রতা দত্ত। বৃহস্পতিবার বালুরঘাটের বাড়ি থেকেই তিনি দিল্লিতে সংসদে দু'টো চিঠি পাঠিয়েছেন। এরমধ্যে একটি চিঠি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুকে লেখা। অপর চিঠিটি রাজ্যসভার এথিকস কমিটিকে পাঠিয়েছেন নম্রতা। দু'টো চিঠি-তেই নিজেকে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ধর্ষিতা বলে পরিচয় দিয়েছেন তিনি। ঋতব্রত-র সঙ্গে পরিচয় পর্ব থেকে সহবাস- সমস্ত কথাই এই চিঠিগুলিতে তুলে ধরেছেন নম্রতা। শুধু ধর্ষণই নয় ঋতব্রতর বিরুদ্ধে তোলাবাজিরও অভিযোগ এনেছেন তিনি। সম্পর্ক ভাঙতে চাইলে ঋতব্রত যে আত্মহত্যার হুমকি দিত সে কথাও চিঠিগুলিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও চিঠিগুলির সঙ্গে প্রামাণ্য নথি হিসাবে তাঁর ও ঋতব্রতর বেশকিছু ঘণিষ্ট ছবি, ভিডিও জুড়ে দিয়েছেন নম্রতা। ঋতব্রতকে ধর্ষক ও প্রতারক বলেও নম্রতা বিশেষিত করেছেন। বিচার না পেলে আত্মহত্যা করা ছাড়া তাঁর কোনও রাস্তা খোলা থাকবে না বলেও উপরাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছেন নম্রতা।
উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যসভার এথিকস কমিটিতেও চিঠি দিয়েছেন নম্রতা। সেখানেও একইভাবে বিচার চেয়েছেন। এই চিঠির শেষেও আত্মহত্যার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তিনি।
এদিকে, ৬ অক্টোবর কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকে ই-মেল করেছিলেন নম্রতা। সেখানে সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি। সেই ই-মেলের ভিত্তিতেই ঋতব্রতর বিরুদ্ধে সাউথ অ্যাভিনিউ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। ই-মেলে সেকথা নম্রতাকে জানানোর পাশাপাশি এফআইআর-এর কপিও পাঠিয়েছে তারা। খুব শিগগিরি দিল্লির আদালতে নম্রতার জবানবন্দী নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন দিল্লি পুলিশের তদন্তকারী অফিসার ঊষা কুমারী জোশী।
বৃহস্পতিবার সকালে নম্রতার সঙ্গে দিল্লি পুলিশের তদন্তকারী অফিসার ঊষা কুমারী জোশী বেশ কিছুক্ষণ কথাও বলেন। ঋতব্রতর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বেশকিছুও প্রশ্নও করা হয় নম্রতাকে। অতি দ্রুত যাতে নম্রতা দিল্লি আসেন তার পরামর্শও দেন তদন্তকারী অফিসার। ঋতব্রত-র সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।