জোর করে জমি নেওয়ার বিরোধী আমি! টিকায়েতদের পাশে থেকে আন্দোলনকে সমর্থন মমতার
নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর রাকেশ টিকায়েত বলেছেন, ‘ফসলের সঠিক দাম যাতে পান কৃষকরা, তার ব্যবস্থা করতে হবে। পুঁজিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা যে পথে হাঁটবে, সেই পথ অনুসরণ করবে গোট
ফের একবার কৃষক আন্দোলন নিয়ে মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে আসেণ কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত। কৃষই বিল সহ প্রত্যাহার করা সহ একাধিক দাবিতে এই বৈঠক হয়। এই বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন রাকেশ এবং মমতা।
কৃষক আন্দোলনের নেতা বলেন, পুজিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই লড়াইয়ে জিতেছেন তিনি। সে জন্যে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁর দাবি, বাংলা যে পথে হাঁটবে, সেই পথ অনুসরণ করবে গোটা দেশ।
কৃষক আন্দোলনের পাশে আছি
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রথমদিন থেকে কৃষক আন্দোলনের পাশে আছি। আমাদের অনেক সাংসদ সমর্থন জানাতে সেখানে গিয়েছিলেন। কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করার পাশাপাশি, ওএই আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিলেন মমতা। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, যত দিন দাবি আদায় না হল আন্দোলনকে সমর্থন করতে হবে। জোর করে কৃষকদের জমি নেওয়ার বিরোধী আমি। দেশের মধ্যে বাংলাই একমাত্র এহেন আইন তৈরি করেছে বলে দাবি মমতার।
আইন বাতিল করতে হবে
প্রায় সাত মাস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও কৃষক আইন প্রত্যাহার করে নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। রাকেশ টিকাইতে সঙ্গে সাক্ষাতের পর এই বিষয়ে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ জানিয়ে দিলেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার জোর করে কৃষি আইন পাশ করিয়েছে। এই আইন বাতিল করতে হবে। এবং ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করে নতুন করে কৃষি আইন প্রণয়ন করতে হবে। শুরু থেকেই দিল্লি সীমান্তে সাতমাস ধরে চলে আসা কৃষক বিক্ষোভকে সমর্থন করছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের একবার পাশে থাকার বার্তাই দিলেন মমতা।
কৃষকদের সঙ্গে কেন কথা বলেনি?
"এমন সব আইন পাশ করিয়েছে যাতে আজ কৃষি-শিল্প সব সমস্যায়। কৃষি আইন বাতিল করুক কেন্দ্র। আইন পাশ করানোর আগে কৃষকদের সঙ্গে কেন কথা বলেনি? জোর করে পাশ করিয়েছে। এটা সাত মাসের আন্দোলন। আর খালি পাঞ্জাব-হরিয়ানার বিষয় নয়, এটা গোটা দেশের বিষয়। সব রাজ্যকে একত্রিত করে আন্দোলন করতে হবে। আমি মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলব।" এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, "রোজ পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ছে। কৃষকরা চাষবাস কী করে করবে?" মমতার সঙ্গে বৈঠকের পর কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত বলেন, "বিজেপিকে ভোট দেবেন না। বিজেপি দেশের ক্ষতি হয়েছে। মমতা দিদি বাংলাকে বাঁচিয়ে নিয়েছেন। এবার দেশ বাঁচানোর পালা। বিজেপি থাকলে দেশ থাকবে না। বিজেপি না থাকলে দেশ বাঁচবে।"
২৪ এর লক্ষ্যেই কৃষকদের পাশে মমতা!
সিঙ্গুর আন্দোলনের পরেই বাংলায় পরিবর্তন আসে। মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সামনেই ২৪ এর লড়াই। আর এই লড়াইকে সামনে রেখে ফের একবার একজোট হওয়ার প্রস্তুতি বিরোধী শিবিরে। মমতা বন্দ্যপাধযায়কে সামনে রেখেই শুরু হচ্ছে এই লড়াই। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ভোটের আগে মমতার সঙ্গে যে সুসম্পর্ক শুরু হয়েছে, ২৪-এর লোকসভার আগে তা আরও পোক্ত করার লক্ষ্যেই রাজ্যে এসেছিলেন কৃষক নেতারা। কৃষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী জানান, কৃষক নেতারা চাইছেন সব বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীকে একত্রিত করে একটি ভারচুয়াল সভার আয়োজন করা হোক। সব রাজ্যকে একত্রিত করে আন্দোলন করা হোক। যা তিনি সমর্থন করেছেন। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে সব বিরোধী শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।