মুখে গামছা বেঁধে কারা এসেছিল সেদিন! দায় নিতে হবে বিজেপিকে, হুঙ্কার মমতার
মুখে কালো কাপড় বেঁধে কারা এসেছিল সেদিন? উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে গুলি চালানোর ঘটনায় প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং।
মুখে কালো কাপড় বেঁধে কারা এসেছিল সেদিন? উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে গুলি চালানোর ঘটনায় প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। ইতালির মিলান থেকে বিজেপিকে তাক করে তাঁর হুঙ্কার, দায় এড়াতে পারে না বিজেপি। তিনিও বিজেপি ও আরএসএসকে কাঠগড়ায় তুললেন। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তিনি জানিয়ে দিলেন, পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়নি ছাত্রদের।
শনিবার মিলানে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, মৃতের পরিবারকে আমি সমবেদনা জানাই। যা হয়েছে, তা বড়ই মর্মান্তিক। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে স্কুলে। সেখানে ছাত্রদের কে উসকাল, তা তো জানতেই হবে। এই ঘটনার পিছনে সাম্প্রদায়িক উসকানি রয়েছে। কোনওদিন স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করলে, ছাত্রদের পক্ষে আন্দোলনে নামা সম্ভব নয়। আগে কোনওদিন এই ঘটনা রাজ্যে ঘটেনি। এর পিছনে এবার এক শ্রেণির ইন্ধন রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুরো ঘটনা পরিকল্পিত, ষড়যন্ত্র করে ঘটানো হয়েছে। তারপর দেখা গিয়েছে মুখে গামছা বেঁধে কারা এসেছিল গন্ডগোলের সময়ে। তারা কারা? পুলিশ নয়, বহিরাগতরাই ইসলামপুরে মর্মান্তিক কাণ্ড ঘটিয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে নিরপেক্ষ তদন্ত করছি। যারা দোষী, তারা শাস্তি পাবেই। বিজেপি ও আরএসএসকে হুঁশিয়ারি, আগুন নিয়ে খেলবেন না।
মুখ্যমন্ত্রী একই সঙ্গে দাবি করেন, বিজেপি মানুষকে উসকে দিয়ে, তারপর বাংলা বনধ ডেকে প্রতিবাদে নামতে চাইছে। বাংলায় কোনও বনধ হবে না। সব ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। সবথেকে বড় কথা এই ঘটনার পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে, সব সত্য সামনে আনা হবে। দোষীদের বরদাস্ত করা হবে না। নিহত ছাত্রের পরিবারের পাশে থাকবে রাজ্য।
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও দাবি করেছিলেন, ইসলামপুরের ঘটনা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পিছনে বিজেপি ও আরএসএসের হাত রয়েছে। ইসলামপুর-কাণ্ডে নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে। যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশও যদি দায়ী হয়, তাহলেও ছেড়ে কথা বলবে না সরকার। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, দোষীরা কেউ ছাড় পাবে না।
তারপর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে আরএসএস। আরএসএসের দাবি, পার্থবাবু প্রমাণ দিন যে, ইসলামপুর-কাণ্ডে আরএসএসের ভূমিকা ছিল। তা না হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে পার্থবাবুকে। পার্থবাবু যদি নিঃশর্ত ক্ষমা না চান, তাহলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। এবং বৃহত্তর জন আন্দোলনে নামব।
উল্লেখ্য, ইসলামপুর স্কুলে দরকার বাংলা শিক্ষক। নিয়োগ করা হয়েছিল উর্দু শিক্ষক। তা নিয়েই উত্তেজনা ছড়ায়। শুরু হয় তীব্র ছাত্র আন্দোলন। তারই জেরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। গুলি চলে। সেই গুলিতে দুই ছাত্রের মৃত্যুও ঘটে। এখন কে গুলি চালাল, তা নিয়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি গ্রামে।