সন্ন্যাসিনী ধর্ষণকাণ্ডে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা, যিশুর বাণী তুলে কী বললেন বিচারক
রানাঘাটে সন্ন্যাসিনী ধর্ষণকাণ্ডে সাজা ঘোষণা করল নগর দায়রা আদালত। ধর্ষণের ঘটনায় যাবাজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত একজন। অপর পাঁচজন ডাকাতির ঘটনায় কারাদণ্ডে দণ্ডিত।
রানাঘাটে সন্ন্যাসিনী ধর্ষণ মামলায় দোষীসাব্যস্ত নজরুল ইসলামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করল নগর দায়রা আদালত। বাকিদের মধ্যে চারজনকে ১০ বছরের ও একজনকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন বিচারক। বুধবার নগর দায়রা আদালতের বিচারক কুমকুম সিনহা সাজা ঘোষণার পর বলেন, 'স্বয়ং যিশুও এদের ক্ষমা করবেন না। এটা ক্ষমহীন অপরাধ।'
মঙ্গলবারই সন্ন্যাসিনী হত্যাকাণ্ডে দোষীসাব্যস্ত করা হয়েছিল অভিযুক্ত ছজনকে। তবে গণধর্ষণের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছিলেন বিচারক। তিনি বলেন, পারিপার্শ্বিক প্রমাণে দেখা গিয়েছে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি সেদিন। সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। সেই অভিযোগে দোষীসাব্যস্ত নজরুল ইসলামের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করা হয়। সেইসঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাকে। অনাদায়ে আড়াই বছরের কারাদণ্ডের কথা ঘোষণা করেন বিচারক।
ডাকাতির ঘটনায় সেলিম শেখ, খালেদার রহমান, মিলন সরকার ও ওহিদুল ইসলামকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর গোপাল সরকারকে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে সাত বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন বিচারক। এই পাঁচজনের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে দেড় বছরের জেল।
এদিন বিচারক কুমকুম সিনহা যিশুর কথা তুলে ধরে বলেন, এই অপরাধ ক্ষমাহীন। আর আগের দিনই তিনি বলেছিলেন, যে বাংলায় সিস্টার নিবেদিতা, মাদার টেরেজারা অসহায় গরিব আর্তের সেবা করে গিয়েছেন, সেই বাংলাতেই একজন সন্ন্যাসিনী ধর্ষিতা হচ্ছেন, তা আমাদের লজ্জার।
সরকারি আইনজীবী বলেন, আদালতের রায়ে আমরা খুশি। আমরা সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছিলাম, তা পেয়েছি। অভিযুক্তের আইনজীবী জানান, বিচারক সাজা ঘোষণা করেছেন, তা নিয়ে দ্বিমত হব না। কিন্তু আমরা এই সাজা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে উচ্চতর আদালতে যাব।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৩ মার্চ রানাঘাটের গাংনাপুরের ডনবসকো পাড়ায় কনভেন্ট স্কুলের পাঁচিল টপকে সাত দুষ্কৃতী নিরাপত্তারক্ষীকে বেঁধে রেখে স্কুলে লুঠপাট চালায়। দোতলায় উঠে ৭৪ বছরের এক সন্যাসিনীকে ধর্ষণ করা হয়। শেষমেশ রান্নাঘরে ঢুকে খাওয়াদাওয়া করে তারা মূলগেট দিয়ে পালিয়ে যায়। স্কুলের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে দুষ্কৃতীদের সেই ছবি। এই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি।