বিক্রি হওয়া ১৭ শিশুর পরিচয় জানতে আধিকারিকের বাড়িতে হানা সিআইডি-র
যাঁদের হাতে শিশুদের সুরক্ষা নির্ভর করে, তাঁরাই ‘বিক্রি’ হয়ে গিয়েছিল শিশু পাচার চক্রের হাতে। ফলে চন্দনার হোম থেকে ‘বিক্রি’ হয়ে যাওয়া ১৭ শিশুর আসল বাবা-মা’র হদিশ রাখেননি তাঁরা।
জলপাইগুড়ি, ৬ মার্চ : যাঁদের হাতে শিশুদের সুরক্ষা নির্ভর করে, তাঁরাই 'বিক্রি' হয়ে গিয়েছিল শিশু পাচার চক্রের হাতে। ফলে চন্দনার হোম থেকে 'বিক্রি' হয়ে যাওয়া ১৭ শিশুর আসল বাবা-মা'র হদিশ রাখেননি তাঁরা। শিশুপাচারের তদন্তে নেমে এখন ওই শিশুদের বাবা-মায়ের খোঁজ জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। কাদের কাছে শিশুদের বিক্রি করা হয়েছে সেই লম্বা তালিকা ইতিমধ্যেই প্রস্তুত। কিন্তু কাদের কাছ থেকে শিশুদের পেয়েছিল পাচারকারীরা তা এখনও অজানাই রয়ে গিয়েছে।
আর ৭ শিশুর প্রকৃত পরিচয়ের তদন্তে নেমে সিআইডি আধিকারিকদের হাতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জলপাইগুড়ি শিশুপাচারকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত চন্দনা চক্রবর্তীর কলকাতার বাড়ির খোঁজ পেয়েছে সিআইডি। তেঘরিয়া মেন রোডে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল চন্দনা চক্রবর্তী। ওই বাড়িতে অপরিচিত ব্যক্তির আনাগোনা ছিল বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তাই তাঁরা মনে করছেন, এই বাড়িকেও শিশু পাচারের আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করা হত।
এদিকে শিশু পাচারের ঘটনায় সরকারি আধিকারিকদের যোগসূত্র সামনে এসে পড়েছে। ক্রমশই বাড়ছে সেই তালিকাও। দার্জিলিংয়ের শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মৃণাল ঘোষ ও শিশু কল্যাণ সমিতির সদস্য দেবাশিস চন্দ গ্রেফতারের পর এবার জলপাইগুড়ি শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সাস্মিতা ঘোষকে সাসপেন্ড করা হয়। জেলাশাসক রচনা ভগৎ তাঁকে আগেই শোকজ করেছিলেন। কিন্তু শোকজের উত্তরে সন্তুষ্টি না মেলায় তাঁকে সাসপেন্ড করা হল। অভিযোগ, চন্দনাদেবীর সংস্থার মাধ্যমে দত্তকের নাম করে শিশু পাচারের ঘটনায় সাস্মিতা ঘোষের মদত ছিল। রবিবার তিন ঘণ্টা তাঁকে জেরা করা হয়।
উল্লেখ্য, এই সাস্মিত ঘোষ শিশউ পাচারে ধৃত মৃণাল ঘোষের স্ত্রী। সোমবার গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধারের জন্য মৃণাল ঘোষকে নিয়ে তাঁর শিলিগুড়ির বাড়িয়ে হানা দেয় সিআইডি। তদন্তকারীরা মনে করছেন, মৃণাল ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে শিশু পাচারের নথি উদ্ধার হতে পারে। ২০১৪ ও ১৫ সালে যাদের বিক্রি করা হয়েচিল, তাদের আসল পরিচয় মৃণাল ঘোষের বাড়ি থেকে জানা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।