শিশুপাচারকাণ্ডে জুহির গ্রেফতারের পর চাপ বাড়ল বিজয়বর্গীয়-রূপা-দিলীপদের
শিশুপাচারকাণ্ডে দলের মহিলা মোর্চা নেত্রী জুহি চৌধুরীর গ্রেফতারের পর চাপ বাড়ল কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ও দিলীপ ঘোষদের। এবার সিআইডি-র নজরে দিল্লির বৈঠক।
জলপাইগুড়ি, ১ মার্চ : শিশুপাচারকাণ্ডে দলের মহিলা মোর্চা নেত্রী জুহি চৌধুরীর গ্রেফতারের পর চাপ বাড়ল কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ও দিলীপ ঘোষদের। এবার সিআইডি-র নজরে দিল্লির বৈঠক। তদন্তকারীর খতিয়ে দেখবেন বিজেপির উচ্চপর্যায়ের নেতৃত্ব কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও রূপা গঙ্গোপাধ্যায়দের সঙ্গে জুহির কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। অন্যদিকে জুহির আত্মগোপনে মদত দেওয়ায় বিজেপির রাজ্য সভাপতির ভূমিকাও সিআইডি খতিয়ে দেখবে শিশু পাচারের তদন্তে।[শিশুপাচারকাণ্ডে ভারত-নেপাল সীমান্ত থেকে অবশেষে গ্রেফতার বিজেপি নেত্রী জুহি চৌধুরী]
এইসব প্রশ্নের মুখোমুখিও হতে হবে জুহি চৌধুরীকে। কেননা সিআইডি নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এবার জুহিকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন সিআইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা। সেখানে জুহির মুখে আর কোন বিজেপি নেতা বা নেত্রীর নাম উঠে আসে, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।[শেষ রক্ষা হল না, মোবাইল ফোনই ধরিয়ে দিল বিজেপির মহিলা মোর্চা নেত্রী জুহিকে]
সিআইডি ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছে, জলপাইগুড়ি শিশু পাচার কাণ্ডে চন্দন চক্রবর্তীর হোমের আড়ালে দত্তকের নামে শিশু বিক্রির যে ব্যবসা চলত, তা নিয়ে বহুবার দিল্লি দরবার করেছেন জুহি। হোমের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ থেকে শুরু করে প্রকল্পের টাকা পাইয়ে দেওয়া ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেখতেন জুহি। এ জন্য জুহির শর্ত প্রযোজ্য ছিল।[শিশুপাচারকাণ্ডে বিজেপি নেত্রী জুহি চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগের আটকাহন]
সম্প্রতি চন্দনা চক্রবর্তীকে নিয়ে কেন্দ্রীয় শিশু কল্যাণমন্ত্রী মানেকা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করার কথাও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। এবং সেই কারণে চন্দনা চক্রবর্তীর দিল্লি যাওয়ার টিকিটও কনফার্মড ছিল। কিন্তু তার আগেই সিআইডির জালে বন্দি হতে হয় চন্দনাদেবীকে। ফলে জুহির সঙ্গে মানেকা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে আর যাওয়া হয়নি।
এরপর শিশু পাচারকাণ্ডে উঠে আসে জুহির দিল্লি যোগের বিষয়টি। জুহিও আত্মগোপন করে। তাঁর অজ্ঞাসবাস নিয়ে রাজ্য বিজেপিতেই শুরু হয় অন্তর্দ্বন্দ্ব। বিজেপি দু'ভাগ হয়ে যায় জুহি ইস্যুতে। জুহির আত্মগোপন করে থাকা ঠিক নাকি ভুল, তা নিয়েই দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছয়। রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে পরিচিত বিজেপির মহিলা মোর্চা সম্পাদক জুহি চৌধুরীকে পূর্ণ সমর্থন দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এই গা ডাকা দিয়ে থাকার বিরোধিতা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
এরপর অস্বস্তি বাড়িয়ে গতকাল শিশুপাচরকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত চন্দনা চক্রবর্তীর মুখেই কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম শোনা যায়। দিল্লিতে জুহি চৌধুরী তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল আলোচনার জন্য। পাশের ঘরে জুহির সঙ্গে বিজয়বর্গীয় ও রূপার বৈঠক হয় বলেও জানান চন্দনাদেবী। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি অস্বস্তিতে পড়ে চন্দনার এই দোষারোপে। তারপর বিজেপি নেত্রী জুহি চৌধুরীর গ্রেফতারের পর নতুন কের চাপ সৃষ্টি হল বিজেপিতে।