নাম না করে বিজেপিকে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর, ‘ভেদাভেদের প্ররোচনায় কেউ পা দেবেন না’
‘নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ নয়। কেউ ভেদাভেদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। বাংলাকে ধমকানো চমকানো যাবে না। অপপ্রচারের চেষ্টা হলে রুখে দাঁড়ান।’
জলপাইগুড়ি, ২৮ মার্চ : জলপাইগুড়ির সরকারি জনসভা থেকে নাম না করে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার জলপাইগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠকের পর মঞ্চ থেকে তাঁর সাফ কথা, 'নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ নয়। কেউ ভেদাভেদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। বাংলাকে ধমকানো চমকানো যাবে না। অপপ্রচারের চেষ্টা হলে রুখে দাঁড়ান।' [বিজেপিকে রুখতে উন্নয়নই হাতিয়ার, শিশু পাচারে কড়া মুখ্যমন্ত্রী, 'কাউকেই রেয়াত নয়']
এদিন সবাইকে সমান চোখে দেখার বার্তা দিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, 'আমি সেই ধর্ম বিশ্বাস করি না যে ধর্ণ অপরকে ভালোবাসে না। আমি সেই ধর্মকে ভালোবাসি, যে ধর্ম নিজেকে ভালোবাসে, অন্যকে ভালোবাসতে শেখায়। আমি হিংসার দল করি না। কোথায় গিয়ে কে কী খাবে, সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। রাজনীতি করলে রং দেখা যাবে না। আমি সকলকে অনুরোধ করবে কেউ রাজনীতির রং দেখে কাজ করবেন না। একজন মায়ের কাছে যেমন তাঁর সব ছেলেরাই সমান। আমাদের সরকারের কাছে সবাই সমান। আমরা মানুষের স্বার্থে কাজ করি। এটাই বাংলার মহত্ব, যা সারা পৃথিবীকে পথ দেখাবে।
মমতা বলেন, বিগত সরকারের আমলের ৪০ হাজার কোটি টাকা দেনা শোধ করতে হচ্ছে। দিল্লির সরকার দেয়নি কিছু, কথা বলে বড্ড বেশি। সাতটি চা বাগান অধিগ্রহণ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু ভোট শেষ হতে আর সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা হয়নি। আমরা তা করি না, কথা দিলে কথা রাখি। দেনা থাকা সত্ত্বেও আমরা দু' টাকা কেজি দরে চাবাগান শ্রমিকদের চাল দিয়েছি। আমরা চা বাগান শ্রমিকদের পাশে আছি। মানুষকে পরিষেবা দিতে আমরা দু'বার ভাবি না। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিই না। সেই লক্ষ্যেই ১০০ কোটি টাকার চা শিল্প তৈরি হচ্ছে।
মমতার কথায়, এই সরকার মানবিক লক্ষ্যে কাজ করে। সেই লক্ষ্যেই ৩২ লক্ষ তফশিলি ছাত্রছাত্রীদের বই ও স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে। সবুজ সাথী প্রকল্পে ৩৯ লক্ষ সাইকেল দেওয়া হয়েছে। আরও ৩৫ লক্ষ সাইকেল দেওয়া হবে। কন্যাশ্রীদের ভাতার জন১ নাম লিখিয়েছ ৪০ লক্ষ ছাত্রী। এই প্রকল্প তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে। ১ কোটি সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীকে স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে রাজ্যের মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। আর কোনও রাজ্য এই কাজ করতে পারেনি। আমাদের রাজ্য মডেল হচ্ছে অন্যত্র।
জলপাইগুড়ি জেলায় অনেক কাজ হয়েছে। বিশ্ব ক্রীড়াকেন্দ্র হয়েছে। চার লেনের রাস্তা হচ্ছে। সার্কিট বেঞ্চের কাজ প্রায় শেষের পথে। এবার জলপাইগুড়িতে মেডিকেল কলেজ হবে। পাঁচটি ওভারব্রিজ হবে। আনন্দ চন্দ্র কলেজে সায়েন্স ব্লক তৈরি হবে। এই জেলাতেই চা শিল্পে ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হচ্ছেহবে। আরও উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে জেলার জন্য। রাস্তাগুলো হয়ে গেলে ছ'ঘণ্টায় কলকাতা পৌঁছে যাবেন জেলার মানুষ। তিনি এদিন জলপাইগুড়ির মঞ্চ থেকে বার্তা দেন, রাজ্যে কারও চাকরি সঙ্কটে নেই।