কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাধা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী! ভুক্তভোগী বাংলার মানুষ, বিস্ফোরক রাজ্যপাল
রবিবার রাতের তেহট্টে শহিদ জওয়ানের শেষকৃত্যে যাওয়ায় বিজেপি সাংসদকে বাধা দেওয়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (jagdeep dhankhar) । এদিন বহরমপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করে ফের একবার ওই বিষয়েই সরব হলেন তিনি। একইসঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতির নিরাপত্তা তুলে নেওয়া প্রসঙ্গেও আক্রমণ করেছেন রাজ্য প্রশাসনকে।


জেলা সভাপতির নিরাপত্তা তুলে নেওয়ায় আক্রমণ
শুভেন্দু অধিকারীর অরাজনৈতিক সভায় হাজিরা দেওয়ার পরেই মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতি মোশারফ হোসেনের নিরাপত্তারক্ষী তুলে নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। যা নিয়ে এদিন রাজ্য প্রশসনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন রাজ্যপাল। তিনি উল্লেথ করেন, কিছুদিন আগে মুর্শিদাবাদের সভাধিপতি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর দুজন নিরাপত্তারক্ষী ছিল, কিন্তু রাজ্য সরকার তা তুলে নিয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যের সমস্ত মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া রাজ্যের কাজ। কিন্তু কোনও রাজনীতিকের নিরাপত্তা তুলে নেওয়াটা প্রজাতন্ত্রের ওপরে আঘাত করা। কটাক্ষ করে তিনি বলেন, রাজনৈতি আচরণ ঠিক হলে তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়। না হলে তুলে নেওয়া হয়।

শহিদ জওয়ানের শেষকৃত্যে যাওয়া বিজেপি সাংসদকে বাধা দেওয়ায় কটাক্ষ
মঙ্গলবার রাজ্যপাল টুইট করে ভিডিও শেয়ার করে জেলার পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। রবিবার রাতে তেহট্টে শহিদ জওয়ান সুবোধ ঘোষের শেষকৃত্য হয়। সেখানে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে আপ্যায়ন করা হলেও, রানাঘাটের বিজেপি সাংসদকে সেখানে ঢুকতেই বাধা দেওয়া হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকরা প্রথমে বলেন, অনুমতি নেই। পরে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখার পর তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার করা টুইটে রাজ্যপাল রাজ্যের পুলিশ নিরপেক্ষ কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এদিন সেই প্রসঙ্গ ফভের তুলে রাজ্যপাল বলেন, সাংসদ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হতে পারে, কিন্তু তিনি ভিডিও দেখে আতঙ্কিত হয়ে উঠছেন। বিজেপি সাংসদের সঙ্গে যা করা হয়েছে তা অন্যায়। সরকারি আধিকারিকদের আচরণ রাজনৈতিক নেতাদের মতো হওয়া উচিত নয় বলেও ফের একবার তিনি মন্তব্য করেন।

কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুযোগ না নেওয়ায় সমালোচনা
এদিন তিনি রাজ্য সরকারের সমালোচনা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে যোগ না, দেওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, সারা দেশের কৃষকরা টাকা পেলেও পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা কেন্দ্রের টাকা পাননি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই এই প্রকল্পে বাধা দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন রাজ্যপাল। তিনি কটাক্ষ করেন বলেন, অন্নদাতা মানুষের পেটে লাথি মারা হয়েছে।

বিজনেস সামিট নিয়ে কটাক্ষ
এদিন রাজ্যপালের মুখে ফের উঠে এসেছে রাজ্য সরকারের শিল্প সম্মেলন প্রসঙ্গ। তিনি বলেন প্রতিবছর রাজ্যে শিল্প সম্মেলন হয়। বিধানসভায় হাজার হাজার কোটি টাকার শিল্প হওয়ার কথা ঘোষণা করা হলেও, আজ পর্যন্ত তা হয়নি। ১৮ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হলেও, মুখ্যমন্ত্রী তার জবাব দেননি বলে অভিযোগ করেন রাজ্যপাল।

তিনি কারও লোক নন
তিনি বিজেপির লোক। তৃণমূলের অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্যপাল এদিন বলেন, তিনি কারও লোক নন। পশ্চিমবঙ্গের জনতার সেবা করার জন্য তিনি এসেছেন। রাজনীতির সঙ্গে তাঁর কোনও লেনদেন নেই। কে জিতল, কে হারল তা তিনি দেখবেন না, মন্তব্য করেন রাজ্যপাল।
বুধবার ঝটিকা সফরে মুর্শিদাবাদে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। দার্জিলিং থেকে হ্যালিকপ্টারে বহরমপুর স্টেডিয়ামে মানেন তিনি। এরপর পরে সড়ক পথে ৫১ পীঠের অন্যতম শক্তি পীঠ কিরীটেশ্বরী মন্দিরে সস্ত্রীক পুজো দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এরপর তিনি হাজারদুয়ারি পরিদর্শন করেন। রাজ্যপাল বলেছেন, পুজো দিয়ে তিনি রাজ্যের মানুষের জন্য সুখ ও শান্তি কামনা করেছেন।
শুভেন্দু দলের নীতী নির্ধারণ কমিটির সদস্য, দলবদলের জল্পনার অবসান ঘটানোর চেষ্টায় সুখেন্দুশেখর