নোবেলকাণ্ডে সিবিআইকে ভর্ৎসনা, ব্যর্থতার সাফাই শুনে কী বললেন প্রধান বিচারপতি
শান্তিনিকেতন থেকে রবীন্দ্রনাথের নোবেল চুরির পর কেটে গিয়েছে ১৩ বছর। এখন পর্যন্ত কোনও সাফল্য পায়নি সিবিআই। সেই কারণেই সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্রঝান বিচারপতি।
নোবেলকাণ্ডে আজ পর্যন্ত কোনও কিনারা করতে না পারায় সিবিআইকে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার এক জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'আপনারা তো এতদিন কোনও কিনারাই করতে পারেননি, তাহলে সিআইডিকে বাধা দিচ্ছেন কেন? সিআইডি তদন্ত করতে চাইলে আপনাদের অসুবিধা কোথায়?'
[আরও পড়ুন:নোবেল চুরির তদন্ত দেওয়া হোক সিআইডিকে, জনস্বার্থ মামলা দায়ের]
শান্তিনিকেতন থেকে রবীন্দ্রনাথের নোবেল চুরির পর কেটে গিয়েছে ১৩ বছর। এখন পর্যন্ত কোনও সাফল্য পায়নি সিবিআই। সেই কারণেই সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাজ্য পুলিশ দিয়ে তদন্ত করতে চান নোবেল-কাণ্ডের। সিআইডিকে এই তদন্তভার তুলে দেওয়ার জন্য তিনি চিঠিও লেখেন কেন্দ্রকে।
এবার সেই দাবিতেই হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হল। সেই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি রাকেশ তিওয়ারি সিবিআইকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন। প্রধান বিচারপতি এদিন বলেন, 'নোবেল আমাদের জাতীয় সম্পদ। অথচ তা উদ্ধারের জন্য সে অর্থে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ এখনও নিতে পারেনি সিবিআই। কেন আপনারা কিনারা করতে পারলেন না এত বছরেও?'
সেইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, 'আপনারা তো এতদিনে কোনও সূত্রই খুঁজে পাননি। সদিচ্ছা থাকলে কি কোনও সূত্র বের করা যেত না? আপনারা তো নিজেরাই নিজেদেরকে দেশবিরোধী করে তুলছেন। এমতাবস্থায় সিআইডি যদি নোবেল চুরির ঘটনায় তদন্তভার নিতে চায়, আপনাদের আপত্তি কোথায়? আমি মনে করি, আপনাদের আপত্তি থাকা উচিত নয়।'
সিবিআই-এর তরফে এ প্রসঙ্গে দাবি করা হয়, 'আমরা দুবার রিপোর্ট জমা দিয়েছি। নোবেল চুরির কিনারা করার সর্বপ্রকার চেষ্টা করছি। সিআইডিও তদন্ত করলে তাঁদের অসুবিধা হতে পারে। সেই কথা জানান সিবিআইয়েপ আইনজীবী। এরই পরিপ্রেক্ষিতেই সিবিআইয়ের আইনজীবীকে দ্ব্যর্থহীনভাষায় ভর্ৎসনা করেন প্রধান বিচারপতি।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ শান্তিনিকেতন থেকে রবীন্দ্রনাথের নোবেল চুরি হয়। প্রথমে বীরভূম জেলা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তারপর এই ঘটনার পিছনে আন্তর্জাতিক যোগসূত্র উঠে আসায় তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইকে। কিন্তু সিবিআই আধিকারিকরা নোবেলচুরির কিনারা করতে এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ২০১০ সাল থেকে সিবিআই তদন্ত বন্ধ করে দেয়। সিবিআইয়ের এই ব্যর্থতার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের নেতৃত্বে সিট গঠন করেন। কিন্তু সিবিআই আজ পর্যন্ত তদন্তভার হস্তান্তর করেনি।