ভয়ের আবহাওয়া বাংলার রাজনীতিতে, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে কোন পথে কমিশন?
একবার নয়, দুই বার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে হয়েছিল রাজ্যের রাজ্য়ের এডিজি আইনশৃঙ্খলা জ্ঞানবন্ত সিংকে। সেই সময়ই থেকেই শোনা যাচ্ছিল, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যের রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয় কমিশন। এই আবহে এদিন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরা বলেন, 'আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেছি। বাংলায় ভীতি রয়েছে রাজনৈতিক মহলে। আমরা রাজ্যে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সুনিশ্চিত করব।' রাজ্যে ভোটারদের ভোটদান সুনিশ্চিত করতে বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। আদর্শ আচরণবিধি লাগু হওয়ার পর রাজ্যে আর কোনওরকম বাইক মিছিল করা যাবে। গ্রিন পুলিশ ও সিভিক পুলিশদেরও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ-সহ চারটি রাজ্যের নির্বাচন নিয়ে আগামীকাল রাজধানীতে বৈঠকে বসবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। প্রত্যেকটি রাজ্য থেকে তথ্য সংগ্রহের পর দিল্লিতে আগামীকাল আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের রূপরেখা তৈরি শুরু করবে নির্বাচন কমিশন।
আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে চিন্তিত সুনীল আরোরা
আজ সুনীল আরোরা বলেন, আমরা নিশ্চিত করব যে যেদিন রাজ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে, সেদিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে ভালো থাকে। সূত্রের খবর, কেন কলকাতা পুলিশের এলাকায় ভোটের সময় ও স্বাভাবিক সময় রাজনৈতিক অশান্তির সৃষ্টি হচ্ছে? সেই বিষয়ে কড়া ভাষায় সমালোচনা করা হয় জ্ঞানবন্ত সিংকে। পাশাপাশি ৫০ হাজারের কাছাকাছি জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারির নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও, মাত্র ৮ থেকে ১০ হাজার অপরাধীকে গ্রেফতার করা কাজ এগিয়েছে৷ সে বিষয় নিয়েও রিপোর্ট তলব করা হয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে।
পছন্দের জায়গায় পুলিশ আধিকারিকদের পোস্টিং
অন্যদিকে, জানা যাচ্ছে যে পছন্দের জায়গায় পুলিশ আধিকারিকদের পোস্টিং দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল মুখ্য় নির্বাচন কমিশনার। সূত্রের খবর, কমিশন এদিন জ্ঞানবন্ত সিংকে জানায়, একাধিক আধিকারিকের তিন বছরের মেয়াদ শেষে সম্প্রতি বদলি করা হয়েছে এবং তাঁদের জায়গায় বহু ক্ষেত্রে পছন্দের আধিকারিকদের পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। সেই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের নজরে এসেছে ৷
কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত
এসব অভিযোগ নিয়ে প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ করাও হতে পারে বলে জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তরফে। প্রসঙ্গত, আজ রাজ্য়ের মুখ্য় সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, ডিজি, এডিজি, স্বাস্থ্য় সচিব, শিক্ষা সচিব, নারী ও শিশু কল্য়াণ সচিব এবং পরিবহণ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ৷ এরপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সুনীর আরোরা।
রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক
এর আগে বৃহস্পতিবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ রাজ্য়ের সব রাজনৈতিক দল এবং প্রশাসনিক কর্তা ব্য়ক্তিদের নিয়ে বৈঠক করল৷ আর সেই সঙ্গেই রাজ্য়ে ২০২১-র বিধানসভা নির্বাচনের বাদ্য়িও কার্যত বেজে গেল৷ মুখ্য় নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরা দুই দফায় তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন৷ যেখানে সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি নিয়ে হাজির হয়েছিল বিরোধী বিজেপি, বাম ও কংগ্রেস৷
বিএসএফের বিরুদ্ধে ভোটাদের ভয় দেখানোর অভিযোগ
অন্যদিকে, শাসক দল তৃণমূলের তরফে বিএসএফের বিরুদ্ধে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে ভোটাদের ভয় দেখানোর অভিযোগ করা হয়েছে কমিশনের কাছে৷ অন্য়দিকে, রাজ্য়ের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে এডিজি আইনশৃঙ্খলা জ্ঞানবন্ত সিংকে একাধিক প্রশ্ন করে কমিশনের আধিকারিকরা৷ সূত্রের খবর, তাঁর উত্তরে খুব একটা সন্তুষ্ট হননি মুখ্য় নির্বাচন আধিকারিক৷