জঙ্গলমহলের উন্নয়নের স্বপ্নে ভরা দু’চোখ, অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরে মমতাকে বার্তা ছত্রধরের
ছত্রধরের অপেক্ষায় এখন প্রহর গুনছে লালগড়। প্রায় ১১ বছর পর মিলেছে মুক্তি। এবার তিনি ফের আলোর পথে ফেরার চেষ্টায় করছেন। সাধারণ মানুষকে নিয়ে আবার তিনি জঙ্গলমহলের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করবেন। তাই জেল থেকে বেরিয়ে ছত্রধর জানিয়ে দিলেন, আমার আর দিদির দেখা স্বপ্ন এক।

জঙ্গলমহল নিয়ে স্বপ্ন
তাঁর কথায়, রাজ্যে এখন পট পরিবর্তন হয়েছে। বাম জমানার অবসান ঘটেছে। রাজ্যে ক্ষমতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তিনিও জঙ্গলমহল নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেমনটা আমিও দেখেছিলাম। অনেক কাজ হয়েছে, অনেক কাজ বাকিও। তাই বাকি কাজ করতে হবে। তিনি চান জঙ্গলমহলের মানুষকে নিয়েই সেই কাজ করতে।

তৃণমূলের সঙ্গে থেকেই কাজ
ছত্রধরের এই বয়ান একপ্রকা জানিয়েই দিচ্ছে তিনি তৃণমূলের সঙ্গে থেকেই কাজ করবেন। ফের জঙ্গলমহলে তিনি প্রাসঙ্গিক করে তুলবেন নিজেকে। তৃণমূলকেও হারানো জমি ফেরত দেওয়ার কাজ শুরু করবেন। তাই জেল থেকে বেরিয়েই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশস্তি করেছেন।

জঙ্গলমহলের জন্য অনেক পদক্ষেপ
তিনি এমন কথাও বলেছেন, জঙ্গলমহলের উন্নয়নে জনসাধারণের কমিটি গড়ে তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলাম। সেই আন্দোলনে আমি পাশে পেয়েছিলাম তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এখন তিনি মুখ্যমন্ত্রী। জঙ্গলমহলের জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন।

ছত্রধর মাহাতো জঙ্গলমহলের জন্য
এদিন জেল থেকে বের হওয়ার পরই ছত্রধরকে অভিনন্দন জানান তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। তিনিও জানান জঙ্গলমহলে উন্নয়নে তৃণমূল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। এজন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ধন্যবাদ। ছত্রধর মাহাতো জঙ্গলমহলের মানুষের জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। এবার তিনিও এই উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে সামিল হবেন।

ছত্রধর ফের ফিরছেন লালগড়ে
রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন ছত্রধর মাহাতো। কলকাতা হাইকোর্টে এই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মেয়াদ কমে ১০ বছর হয়। তারপর অবশেষে আসে মুক্তির দিন। সমস্ত আইনি জটিলতা ও মামলার ফাঁস কাটিয়ে ছত্রধর ফের ফিরছেন লালগড়ে। এবার তিনি কোন দলে যোগ দেবেন। তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।

সিপিএমকে শুইয়ে দিয়েছিলেন লালগড়ে
জঙ্গলমহলে জনসাধারণের কমিটির নেতা ছিলেন তিনি। একার হাতে সিপিএমকে তিনি শুইয়ে দিয়েছিলেন লালগড়ে। কিন্তু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সফর চলাকালীন ল্যান্ডমাইনে বিস্ফোরণকাণ্ডে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। মাওবাদী তকমার পাশাপাশি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। এছাড়া আরও অনেক মামলা হয় তাঁকে ঘিরে।

তবে কি তৃণমূলেই যোগ
এখন সমস্ত মামলা থেকে তিনি মুক্ত। ফিরছেন জঙ্গলমহলে। লালগড়ে ফিরে তিনি কোন দলের মুখ হয়ে ওঠেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। ইতিমধ্যেই তৃণমূল ব্লক সভাপতি তাঁকে পুষ্পস্তবক দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন। স্বভাবতই তাঁর তৃণমূল-যোগই স্বাভাবিক। কেননা আগেও তিনি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাঁদে কাঁধ মিলিয়ে রাজনীতি করেছেন।