আজ মহাষ্টমীর রাতে কলকাতাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি জগদ্ধাত্রী পুজোর চন্দননগর
আজ মহাষ্টমী। কলকাতার দুর্গাপুজোর ভিড়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো। অষ্টমীর রাতে রেকর্ড ভিড়ের অপেক্ষায় সমস্ত পুজো কমিটি। পুলিশ-প্রশাসন তৈরি সেই ভিড় সামাল দিতে।
আজ মহাষ্টমী। কলকাতার দুর্গাপুজোর ভিড়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো। অষ্টমীর রাতে রেকর্ড ভিড়ের অপেক্ষায় সমস্ত পুজো কমিটি। পুলিশ-প্রশাসন তৈরি সেই ভিড় সামাল দিতে। মঙ্গলবার বিকেল থেকেই কাতারে কাতারে দর্শনার্থী ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। রাতভর ঠাকুর দেখার ইচ্ছা নিয়ে হাজির আট থেকে আশি। কাল মহানবমীতে রাজ্যজুড়ে একদিনের জগদ্ধাত্রী পুজো। আর চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী আরাধনা তো চারদিনের। অষ্টমীতে তাই চুটিয়ে আনন্দ নিতে মণ্ডপে মণ্ডপে জনসুনামি।
সব বয়সের মানুষ বেরিয়ে পড়েছেন মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা দর্শনের জন্য৷ জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই বাঙালির কাছে একটাই নাম চন্দননগর৷ জগদ্ধাত্রী পুজো আর আলোকসজ্জা- দুই ক্ষেত্রেই জগদ্বিখ্যাত চন্দননগর৷ চন্দননগরের আলোকসজ্জার জন্যই তো বাঙালির আরও টান বেড়েছে জগদ্ধাত্রী-দর্শনে।
কলকাতার মতোই তৃতীয়া থেকে ভিড় জমতে শুরু করেছে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা দর্শনে। মাঝে নাদার হানায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল ঠিকই, এখন একেবারে মেঘমুক্ত আকাশে তারাদের আলো আর চন্দননগরের জগদ্ধাত্রীর আলো মিলেমিশে একাকার।
শুধু ঐতিহ্য-সাবেকিয়ানাই নয়, চন্দননগেরর জগদ্ধাত্রী পুজোতেও রয়েছে থিমের লড়াই৷ এক মণ্ডপ আর এক মণ্ডপকে টেক্কা দেওয়ার নেশায় কত না শিল্পসুষমার প্রদর্শন হয়। শিল্পীদের দীর্ঘদিনের সাধনার বহিঃপ্রকাশ হয় মণ্ডপে মণ্ডপে। এবার চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো হচ্ছে ১১৭টি, ভদ্রেশ্বরে ৩৯টি। রংবেরংয়ের থিম, আলোকসজ্জার পাশাপাশি আকাশের ড্রোন আর সিসি ক্যামেরাতেও সেজেছে চন্দননগর।
মণ্ডপে নানা চাকচিক্যের মাঝে প্রতিমাসজ্জায় কিন্তু বিরাজ করছে সাবেকিয়ানাই। সব মণ্ডপেই বড় বড় ঠাকুর, সবই সাবেকি ঢঙের। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শুধু বদলায় সাজ। কোথাও সোলার, কোথাও জরি, আবার কোথাও সোনালি সাজ৷ ২৫ ফুটের নীচে কোনও প্রতিমা নেই বললেই চলে। সেই শারদোৎবের সময় থেকেই চন্দননগরবাসী অপেক্ষায় থাকেন জগদ্ধাত্রী উৎসবের। এখানেও যে দুর্গাপুজোর মতোই চারদিনের জগদ্ধাত্রী আরাধনা।
কিন্তু কোন আঙ্গিকে তৈরি হয়েছিল চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী আরাধনার এই মিথ? কথিত আছে, কৃষ্ণনগরের মতো চন্দননগরেও জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা হয়েছিল মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের হাত ধরে। চন্দননগর চাউলপট্টি বাজারে গঙ্গার পাড়ে যেখানে হাট বসত, সেখানেই ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরির সাহায্যে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়। এই ইন্দ্রনারায়ণ ছিলেন কৃষ্ণচন্দ্রের সঙ্গী। কৃষ্ণচন্দ্রের নির্দেশেই এখানে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন হয়। পরে আলোকসজ্জা ও অন্যান্য আনুসাঙ্গিক কারণে বাড়তে থাকে জনপ্রিয়তা। বাড়তে থাকে পুজোর সংখ্যা। এখন এলাকাজুড়ে উৎসবের পরিবেশ।