বাংলার রাজনৈতিক ‘হিংসার ইতিহাস’ই আট ধাপে নির্বাচনের কারণ, মমতাকে বার্তা কেন্দ্রের
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন একমাসজুড়ে এবার আট ধাপে প্রসারিত হতে চলেছে। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন একমাসজুড়ে এবার আট ধাপে প্রসারিত হতে চলেছে। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা উড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে, রাজ্যে অনিয়ন্ত্রিত হিংসার ফলেই বাংলার ভোটকে আটটি দফায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আট দফার নির্বাচনের পিছনে নির্বাচন কমিশনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। অভিযোগ করেছিলেন, বিজেপির উপকারের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশেই আট দফায় ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি প্রশ্ন ছুড়েছিলেন, ২৩৪টি আসন নিয়ে তামিলনাড়ুতে যদি এক পর্যায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে, তবে পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪টি আসনের জন্য কেন আট দফার দরকার হল?
যদিও মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা ব্যাখ্যা করেছিলেন, রাজ্যের সুরক্ষাজনিত উদ্বেগের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বিজেপির এক নেতা দাবি করেছেন যে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দিকে আঙুল তোলার আগে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা ভেবে দেখুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাশাপাশি বিজেপি এই যুক্তিও দেখিয়েছে, "রাজ্যে একাধিক পর্যায়ের নির্বাচন নতুন কিছু নয়। ২০১১ সালের নির্বাচন ছয় দফায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল নির্বাচন। ২০১৬ সালের নির্বাচনও সাত দফায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মাওবাদী অঞ্চলে দুটি পর্বে ভাগ করে নির্বাচন হয়েছিল। ২০১১ সালে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই একাধিক দফায় নির্বাচনের সওয়াল করেছিলেন, এখন কেন তিনি বিরোধিতা করছেন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনকে তামিলনাড়ুর নির্বাচনের সাথে তুলনা করা মোটেও ন্যায়সঙ্গত নয়। উভয় রাজ্যেরই আলাদা ইস্যু রয়েছে। কত দফায় নির্বাচন হবে, তা বিভিন্ন রকম পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গে হিংসার ইতিহাস রয়েছে। তামিলনাড়ুতে নির্বাচনের ব্যয় নিয়ে সমস্যা রয়েছে। বাংলাতে আরও সুরক্ষা বাহিনী প্রয়োজন, অন্যদিকে তামিলনাড়ু ব্যয় পর্যবেক্ষক প্রয়োজন, ইনকাম ট্যাক্স ও আইএএস অফিসারদের তাই ময়দানে নামানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন আরও জানায়, কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনীর দাবির কারণেই নির্বাচনকে বিভিন্ন পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। বাহিনীকে রাজ্যের এক অংশ থেকে অন্য অংশ, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে হবে। নীতিগতভাবে, এটি নিখুঁত যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয় বলেই আধিকারিকদের দাবি।