
গ্রুপ সি-গ্রুপ ডি নিয়োগে ব্যাপক কারচুপি রাজ্যে, আদালতে রিপোর্ট পেশ সিবিআইয়ের
গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি থেকে শুরু করে নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগ বা একাদশ-দ্বাদশে নিয়োগ- সর্বত্রই কারচুপি হয়েছে। আদালতে রিপোর্ট জমা দিয়ে সিবিআই জানাল এ কথা। তদন্তের সময় কমিশনের ডেটাবেস বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। এরপর নাইসা প্রাক্তন কর্মীর বাড়ি থেকে সিবিআই তিনটি হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করা হয়। এই হার্ডডিস্ক ও কমিশনের ডেটাবেস পরীক্ষা করে সিবিআই রিপোর্টে কারচুপি হয়েছে বলে জানায়।

সিবিআই জানায়, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের ওএমআর শিট মূল্যায়নের বরাত দেওয়া হয়েছিল নাইসা কমিউনিকেশন প্রাইভেট লিমিটেড নামক একটি সংস্থাকে। মূল্যায়নের পরে নম্বর সম্বলিত চূড়ান্ত তালিকা কমিশনকে দেয় নাইসা। নম্বর পাওয়ার পর কমিশন সেটা নিজেদের ডেটাবেসে আপলোড করে।
সিবিআই তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, সমস্ত আসল ওএমআর শিট স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসেই স্ক্যান করা হয়েছিল। তদন্তের সময় কমিশনের ডেটাবেস বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। এরপর নাইসার এক প্রাক্তন কর্মী পঙ্কজ বনসলের বাড়ি থেকে সিবিআই তিনটি হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করে। ওই তিনটি হার্ডডিস্কে ওএমআর শিটের স্ক্যান কপি এবং নম্বর ছিল।
সিবিআই জানায়, ওই তিনটি হার্ডডিস্ক এবং কমিশনের ডেটাবেস পরীক্ষা করে দেখা যায় যে বিস্তর কারচুপি করা হয়েছে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি থেকে শুরু করে নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগ বা একাদশ-দ্বাদশে নিয়োগে। এরপর আদালতের নির্দেশমতো গাজিয়াবাদ থেকে পাওয়া সব নথি স্কুল সার্ভিস কমিশনকে তুলে দিয়েছে সিবিআই। আদালত সেইমতো অবৈধ নিয়োগ হওয়া চাকরিপ্রাপকদের তালিকা প্রকাশ করতে নির্দেশ দেয় কমিশনকে।
তিনদিন আগে হাইকোর্টের একটি পর্যবেক্ষণে এসএসসি গ্রুপ ডি-তে আরও ১০০ অবৈধ নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিচারপতি। তা নিশ্চিত করতে ওএমআর পরীক্ষা করার নির্দেশ দেন তিনি। বিচারপতি ১০০টি ওএমআর শিট সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে নির্দেশ দেয় স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। শিটগুলি পরীক্ষা করে জানার চেষ্টা হবে এদের মধ্যে কারা ভুয়ো। বিচারপতি ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে কাদের ভুয়ো নিয়োগ করা হয়েছিল গ্রুপ ডি-তে, তা বের করতে নির্দেশ দেন।
শিটগুলি পরীক্ষা করে চূড়ান্ত তালিকা ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতে পেশ করতে হবে বলে জানান বিচারপতি। কলকাতা হাইকোর্ট এখন পর্যন্ত গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতিতে ৫৯৩ জনকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছে। যদিও সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়ে ভুয়ো নিয়োগ প্রাপকদের প্রত্যেককে জেরা করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তারপর হাইকোর্টে গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় দুর্নীতির আরও উদাহারণ তুলে ধরেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
'ব্যক্তিগত স্বাধীনতা নষ্টের চেষ্টা হচ্ছে', পর্যবেক্ষণ করে শুভেন্দুকে বড় স্বস্তি হাইকোর্টের