নারদ মামলায় এবার সাংসদদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চেয়ে স্পিকারকে চিঠি সিবিআইয়ের
নারদা মামলা নিয়ে চাপ বাড়ছে। কেন মুকুল-শুভেন্দুকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই বিতর্কের মধ্যেই ফের চিঠি সিবিআইয়ের। জানা যাচ্ছে, সাংসদদের এবার গ্রেফতার করতে চেয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিল সিবিআই।
নারদা মামলা নিয়ে চাপ বাড়ছে। কেন মুকুল-শুভেন্দুকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই বিতর্কের মধ্যেই ফের চিঠি সিবিআইয়ের। জানা যাচ্ছে, সাংসদদের এবার গ্রেফতার করতে চেয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিল সিবিআই। জানা যাচ্ছে, আজ বুধবার এই সংক্রান্ত চিঠি যায় লোকসভার স্পিকারের কাছে।
যদিও এখনও এই বিষয়ে পালটা কিছু জানানো হয়নি। যদিও এর আগে নারদ মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের তিন সাংসদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি চেয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়েছিল সিবিআই।
নারদা-কাণ্ডে সম্ভবত সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিট জমা দিতে পারে সিবিআই। সেখানে আরও বেশ কয়েকজন সাংসদের নাম থাকতে পারে। এমনটাই সিবিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬-য় এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে নারদ নিউজের পক্ষে সংস্থার কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েল একটি স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আনেন। সেই ভিডিয়োতে দেখা যায়, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের একাধিক সাংসদ এবং বিধায়ক ব্যাবসায়ী পরিচয় দেওয়া ম্যাথু স্যামুয়েলের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নগদে নিচ্ছেন।
ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সিবিআই তদন্তের দাবি তোলে। কলকাতা হাইকোর্টে হওয়া একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট তদন্তের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ওই তদন্তকারী সংস্থাকে। ২০১৭-র ১৬ এপ্রিল ১৩ জনের বিরুদ্ধে নারদ মামলার এফআইআর নথিভুক্ত করে সিবিআই। দুর্নীতি দমন আইনের ৭ এবং ১৩ (২) ধারায় মামলা দায়ের করে তারা।
ওই ১৩ জনের মধ্যে নাম ছিল পাঁচ তৃণমূল সাংসদ- কাকলি ঘোষ দস্তিদার, সৌগত রায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার, সুলতান আহমেদ, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ও বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যের বর্তমান তিন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, আইপিএস সৈয়দ মহম্মদ হাসান মির্জা এবং মুকুল রায়, মদন মিত্র, ইকবাল আহমেদের।
তবে সাংসদ সুলতান আহমেদের তদন্ত চলাকালীন মৃত্যু হওয়ায় এই মুহূর্তে এফআইআরে অভিযুক্তের সংখ্যা ১২।
সিবিআই সূত্রে খবর, এর আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে তিন সাংসদ সৌগত রায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কাকলি ঘোষ দস্তিদারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমোদন চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়।
স্পিকারের সবুজ সঙ্কেত পেলেই ওই তিন জনের নাম উল্লেখ করা হবে সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিটে। যদিও বছরখানেক আগে এই আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্পিকারের তরফে কোনও অনুমতি পাওয়া যায়নি। তাই নতুন করে ফের স্পিকারের কাছে অনুমতি চেয়ে চিঠি দিল সিবিআই। ফলে প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি এবার সাংসদদেরও কি গ্রেফতারের প্রস্তুতি সিবিআইয়ের?
তবে কোনও শর্তে আগাম জামিনের আবেদন করবেন না বলে জানিয়েছেন প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত। বাংলা এক সগবাদমাধ্যমকে পাল্টা তৃণমূল সাংসদের প্রশ্ন, ''এতে ভয় পাওয়ার কী আছে? ভয়ের কথাগুলো সংবাদমাধ্যম মনে করতেই পারে। আমরা রাজনীতি করি। তাই দু'দিনের জন্য জেলে গেলেই বা কী হবে? আমি কোনও পদক্ষেপ করছি না।''
উল্লেখ্য এর মধ্যে একাধিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। নারদা মামলায় ইতিমধ্যে তিন বিধায়ককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে শোভন চট্টোপাধ্যায়। যদিও প্রশ্ন উঠেছে বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি না নিয়েই বিধায়কদের গ্রেফতার করা হয়েছে। যা অবৈধ। যদিও এই নিয়ে এই মামলা চলছে।
Recommended Video
তবে কেন মুকুল শুভেন্দুকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে এই গ্রেফতারের পরেই প্রশ্ন উঠছে। যদিও বছরখানেক আগেই সারদা এবং নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের যেন ছেড়ে দেওয়া না-হয়- এই অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন আব্দুল মান্নান। শুধু তাই নয় এই বিষয়ে একটি মামলাও হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।