বয়ান-নথিতে কতটা মিল, তৃতীয় দিনের সাড়ে তিন ঘণ্টা জেরার পরও তলবের সম্ভাবনা পরেশ অধিকারীকে
প্রথম দিনে তিন ঘণ্টা, দ্বিতীয দিন সাড়ে ৯ ঘণ্টা এবং তৃতীয় দিন সাড়ে তিন ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে স্কুল শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে। এসএসসি মামলায় টানা তিনদিন জেরার পর এবার বয়ানের সঙ্গে মেলানো হবে নথি।
প্রথম দিনে তিন ঘণ্টা, দ্বিতীয দিন সাড়ে ৯ ঘণ্টা এবং তৃতীয় দিন সাড়ে তিন ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে স্কুল শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে। এসএসসি মামলায় টানা তিনদিন জেরার পর এবার বয়ানের সঙ্গে মেলানো হবে নথি। তারপর ফের ডাকা হতে পারে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীকে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত জেরা করা হয়। তাঁকে ফের তলবের সম্ভাবনা রয়েছে।
টানা তিনদিন জেরার পরও অন্ত নেই। ফের ডাকা হতে পারে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে। এদিন মূলত তাঁকে প্রামাণ্য নথি আনতে বলা হয়েছিল। সেইমতো সমস্ত নথি নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে পৌঁছে গিয়েছিলেন পরেশ অধিকারী। তারপর তাঁকে জেরা শুরু করা হয়। তিনি যে সমস্ত নথি সঙ্গে করে নিয়ে যান, তা খতিয়ে দেখা হয়। এখন পরেশ অধিকারীর এই তিনদিনের বয়ানের সঙ্গে নথি মিলিয়ে দেখা হবে।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পরেশ অধিকারীর তিনদিনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিওগ্রাফিও করা হয়। বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার সময়ই তাঁকে নোটিশ ধরানো হয়। তাঁকে জানানো হয় শুক্রবার ফের তাঁকে হাজিরা দিতে হবে। সেইমতোই পরেশ অধিকারী হাজির হন নথি নিয়ে। তবে এদিন জেরার মাঝে আর নোটিশ ধরানো হয়নি পরদিনের জেরার জন্য। তবে তাঁকে ফের ডাকার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গিয়েছে বিশেষ সূত্রে।
শুক্রবার একটানা সাড়ে ৯ ঘণ্টা তাঁকে জেরা করা হয়েছিল। এদিন করা হল সাড়ে তিন ঘণ্টা। সিবিআই তদন্তকারী অফিসাররা মনে করছেন মন্ত্রী-কন্যাকে চাকরি দেওয়ার পিছনে আরও অনেকে জড়িয়ে রয়েছেন। তাঁদের নাম জানাই তদন্তকারীদের উদ্দেশ্য। সেই লক্ষ্যেই বারবার পরেশ অধিকারীকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা কার মাধ্যমে চাকরি পেয়েছিলেন। এবং কীভাবে তাঁর চাকরি হয়েছিল, তাও জানতে চান তদন্তকারীরা। মন্ত্রী-কন্যাকে চাকরি দেওয়ার নেপথ্যে কাদের সংযোগ রয়েছে বা কারা মধ্যস্থতাকারী তা জানতে তৎপর সিবিআই। এদিন তাই কললিস্টও খতিয়ে দেখা হয়। সেইসময় কার সঙ্গে কথা হয়েছিল, কী কথা হয়েছিল, তা জানাই সিবিআই তদন্তকারী অফিসারদের উদ্দেশ্য।
এসএসসির একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতিতে নাম জড়ায় রাজ্যের বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর। কী করে মেধা তালিকায় না থেকেও চাকরি পেয়ে গেলেন পরেশ-কন্যা অঙ্কিতা, তা জানার চেষ্টা চালায় সিবিআই। সেই লক্ষ্যে মঙ্গলবার রাত আটটার মধ্যে নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু তারপর থেকে রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান পরেশ অধিকারী। বুধবার সারাদিন তাঁকে নিয়ে নাটক চলে। তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠে।
আদালত অবমাননার মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটের মধ্যে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল আদালতের তরফে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিনি সিবিআই কাছে হাজিরা দেননি। ফলে সিবিআই তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করে। তার অদ্যাবধি পরেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় নেমে তিনি সটান নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে হাজিরা দেন। তারপর শুরু হয় জেরা।
বৃহস্পতিবার প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা দেরা করা হয় তাঁকে। তারপর জেরা চলাকালীনই তাঁকে নোটিশ ধরানো হয়। নোটিশে তাঁকে শুক্রবার হাজিরা দিতে বলা হয়। সেইমতো তিনি শুক্রবার বেলা ১১টার আগেই হাজির হয়ে যান সিবিআই দফতরে। সাড়ে ৯ ঘণ্টার বেশি জেরার পরে ফের এদিন নোটিশ দেওয়া হয় শনিবার হাজিরার জন্য। শনিবার তাঁকে সাড়ে তিন ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে। এখন ফের তাঁকে তলবের সম্ভাবনা রয়েছে।