মন্দিরে পশুবলি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা কলকাতা হাইকোর্টে
পশু বলির বিরোধিতায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে।
প্রচলিত প্রথা পশু বলির বিরোধিতায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে। আগামী শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করণ নায়ার রাধাকৃষ্ণাণ ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি সম্ভাবনা রয়েছে।
মন্দিরে পশুবলি বন্ধের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন জনৈক এক সাধু সন্ন্যাসী। তাঁর আইনজীবী মেঘনাথ দত্ত জানান, 'ধর্মের দোহাই দিয়ে পুজোয় মন্দিরে বা মন্দির চত্বরে পশুবলি বন্ধ করা হোক। ঈশ্বরের নামে এইভাবে মন্দির চত্বরে পশুবলি করতে দেওয়া যায় না। এটা সংবিধান বিরোধী ও আইন বিরুদ্ধ। তাই মন্দির চত্বরে ধর্মের দোহাই দিয়ে প্রাণী হত্যা বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে মামলা হয়েছে।'
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ত্রিপুরার সব মন্দিরে ঈশ্বরের নামে পশুবলির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ত্রিপুরা হাইকোর্ট। ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জয় করোল ও বিচারপতি অরিন্দম লোধের ডিভিশন বেঞ্চ এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আদালতের নির্দেশ মেনে ৫১৮ বছরের ইতিহাস ভেঙে এবার পশু বলি হয়নি ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে। শুধু ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরেই নয় ত্রিপুরার বিখ্যাত মন্দির ত্রিপুরাসুন্দরী ও চতুর্দশ দেবতার মন্দির সহ সমস্ত ধর্মীয় স্থানগুলিতে এবার শতাব্দীর প্রাচীন নৃশংস পশু বলি হয়নি। অধিকাংশ মানুষও আদালতের এই সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছেন। যদিও আদালতের এই নির্দেশ মানতে নারাজ কিছু মানুষ ও বেশ কিছু ধর্মগুরু। এখনও প্রাচীন পরম্পরা, রীতি নীতিকে দূরে সরাতে পারছেন না তারা।
জানা যায়, কয়েক বছর আগে ত্রিপুরার রাজবাড়িতে দুর্গাপূজা দেখতে গিয়েছিলেন রাজ্যের এক অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুভাষ ভট্টাচার্য। তিনি নবমী পুজোর দিন দুর্গামন্দিরে মহিষ বলি দেখে বিচলিত হয়ে যান। তিন বছর ধরে তিনি হিন্দু শাস্ত্রের নানা দিক খতিয়ে দেখেন। বেদ-উপনিষদ কোথায়ও লেখা নেই পশু বলি বন্ধ হলে ধর্ম পালনে বাধা তৈরি হবে। এরপর পশু বলি বন্ধের দাবিতে ত্রিপুরা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন তিনি। এই মামলার প্রেক্ষিতেই মন্দিরে পশু বলির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।