বিধাননগর পুরভোট : রাজ্য নির্বাচন কমিশন কি পারবে শাসকের রক্তচক্ষু এড়িয়ে বলিষ্ঠ হতে?
কলকাতা, ৫ অক্টোবর : তীব্র বিতর্কের মাঝে পড়ে বিধাননগর, আসানসোল এবং বালির পুরভোট গণনা স্থগিত রাখা হয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য। ঘোষণা করেছেন খোদ রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্ত রঞ্জন উপাধ্যায়। [ছাপ্পা, বুথ দখল, মারধরের অভিযোগে উত্তপ্ত বিধাননগর পুরভোট]
তবে তিনি কি পারবেন সাহসী পদক্ষেপ করতে? পারবেন শাসক দলের রক্তচক্ষু এড়িয়ে পুনরায় ভোটগ্রহণ পর্ব সারতে এই তিনটি এলাকার স্থানীয় ভোটে? প্রশ্ন কিন্তু উঠছে। কারণ, গত শনিবার বিধাননগর পুরভোটে সাংবাদিক নিগ্রহের পর এখনও সেভাবে কার্যকর ভূমিকা নেয়নি পুলিশ। [দেখে নিন বিধাননগর পুরভোটে চূড়ান্ত গোলমালের খণ্ডচিত্র]
শাসক দলের বিধায়ক ও ঘনিষ্ঠদের মদতে বিধাননগর পুর এলাকা দাপিয়ে বেড়ানো এই বহিরাগতরা সকলেই ছাপ্পা, বুথ দখল, মারধর করে সময়ে বেরিয়ে গিয়েছে এলাকা ছেড়ে। আর তাদের গোটা পরিকল্পনায় দেহরক্ষীর কাজ করেছে রাজ্য পুলিশ। [ভিডিও : পুলিশ নিধিরাম সর্দার, বহিরাগতদের দাপট বিধাননগরে, পুলিশের সামনেই চলছে মাটিতে ফেলে মার]
শনিবার পুলিশের সামনেই বোমাবাজি হয়েছে, সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধী- সকলকেই রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়েছে। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বেধড়ক মার খেয়েছেন সাংবাদিকেরা। অথচ নীরব দর্শক হয়ে থেকেছে পুলিশ। প্রশাসনের তরফে দায় চাপানোর চেনা প্রচেষ্টা চলেছে বিরোধীদের উপরে।
এসবের পরে বাম-বিজেপি ও কংগ্রেসের যৌথ আন্দোলনে, সুশলী সমাজের কড়া আক্রমণ, রাজ্যপালের সমালোচনা ও তীব্র বিতর্কের মাঝে পড়ে অবশেষে ভোটগণনা স্থগিত রাখা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন? শাসক দলের কাছের লোক বলে পরিচিত সুশান্ত রঞ্জন উপাধ্যায় কি পারবেন রক্তচক্ষু এড়িয়ে ভোট বাতিল করে পুনরায় ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত জানাতে?
সুশান্তবাবুর আগে মীরা পাণ্ডে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের চেয়ারে বসেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে মীরাদেবীর সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত চরমে ওঠে। এরপরে তাঁর মেয়াদ শেষ হলে নজিরবিহীনভাবে সুশান্তবাবুকে নিয়োগ করে রাজ্যের তৃণমূল সরকার।
সাধারণত প্রথা অনুযায়ী এতদিন সব রাজ্যেই নির্বাচন কমিশনারের পদে প্রাক্তন মুখ্যসচিব বা সমপর্যায়ের অফিসারদেরই বহাল করার চল ছিস। এই প্রথম ডব্লিউবিসিএস অফিসার সুশান্তবাবুকে নিয়োগ করা হয়। যার ফলে প্রথমদিন থেকেই বিতর্কের মধ্যে নিজের ইনিংস শুরু করেছেন সুশান্ত রঞ্জন উপাধ্যায়।
এহেন সুশান্তবাবু যিনি শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে, তিনি কতোটা বলিষ্ঠ পদক্ষেপ করতে পারেন সেদিকেই এখন তাঁকিয়ে ওয়াকিবহাল মহল।