বর্ধমান কাণ্ড : রাজ্য পুলিশের 'সিল' করা বাড়ি থেকে ৪০টি আইইডি উদ্ধার করল কেন্দ্রীয় বাহিনী
প্রথম থেকেই এই বর্ধমান কান্ডের তদন্তভার রাজ্যের দখলেই রাখতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা শাসক দল। এনএসজি-র হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া 'রাজ্য়ের বিষয়ে কেন্দ্রের নাকগলানো' বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বর্ধমান কাণ্ডে কেন্দ্রীয় বাহিনীর যে কতটা প্রয়োজনীয়তা ছিল তা এদিন প্রমাণ হয়ে গেল।
বৃহস্পতিবার সকালে শিমুলিয়া পৌঁছয় এনএসজি-র বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা। এরপর থেকেই স্নিফার ডগ নিয়ে তল্লাশি শুরু করে তারা। বর্ধমানের উপকন্ঠে বাদশাহী রোডে রেজাউলের তালা লাগানো বাড়ির ভিতরে ঢোকে এনআইএ দল। এরপর ঢোকে এনএসজির দল। বাড়ির একটি ছোট্ট শৌচাগারের মধ্যে গোপন কুঠুরির সন্ধান পায় তারা। সেখান থেকে এই বহুল পরিমাণে বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে বেশ কিছু রাসায়নিক এবং পাইপও উদ্ধার করেন তারা।
শুক্রবার সকাল থেকে সেই বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে এনএসজি
এর পরেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে রাজ্য পুলিশ ও সিআইডির ভূমিকা নিয়ে। গত ৭ অক্টোবর এই বাড়িতেই দলবল নিয়ে রাজ্যপুলিশ ও সিআইডি যৌথভাবে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল। অথচ বিস্ফোরক তো দূরের কথা কোনও সন্দেহজনক বস্তুই খুঁজে পাননি তারা। ফলে নিয়মমাফির একটি বড় তালা বাড়িতে লাগিয়ে চলে যায়। অনেকে মনে করছেন বর্ধমান কাণ্ডকে প্রথম থেকেই খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি রাজ্য। "ওখান থেকে আর কী পাওয়া যাবে" এই মনোভাব নিয়েই হয়তো সেদিন রাজ্যপুলিশ ও সিআইডি খালি চোখে তল্লাশি চালিয়েছিল। ফলে লুকিয়ে রাখা বহুল পরিমান বিস্ফোরক তাদের নাগালে আসেনি।
এদিকে এনআইএ-কে যেদিন তদন্তভার সরকারি ভাবে তুলে দেওয়া হল সেদিন হঠাৎই অতিসক্রিয় হয়ে পুলিশ খাগড়াগড়ে নমুনাসংগ্রহে গিয়েছিল এবং বিস্ফোরণস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া কিছু তাজা বোমা নিষ্ক্রিয় না করে ফাটিয়ে দেওয়ায় আগেই সমালোচনা মুখে পড়েছিল রাজ্যপুলিশ। অতএব সেদিন অতিসক্রিয়তা দেখানোয় সমালোচনার মুখে পড়েছিল রাজ্য পুলিশ ও সিআইডি। এদিন তল্লাশিতে গাফিলতির জন্য ফের সমালোচনার মুখে পড়তে হল তাদের।