বাংলায় সংখ্যালঘু মন পেতে হিন্দুত্ব থেকে সরছে বিজেপি! বেনজির সিদ্ধান্ত একুশে হেরে
একুশের নির্বাচনে বাংলাকে পাখির চোখ করেও হার মানতে হয়েছে। তবে গোহারা হেরেও বাংলা থেকে নজর ফেরাচ্ছে না বিজেপি। বরং হার থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।
একুশের নির্বাচনে বাংলাকে পাখির চোখ করেও হার মানতে হয়েছে। তবে গোহারা হেরেও বাংলা থেকে নজর ফেরাচ্ছে না বিজেপি। বরং হার থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। সেজন্য বিজেপি চিরাচরিত হিন্দুত্বকে বিসর্জন দিতেও পিছপা হচ্ছে না। সংখ্যালঘু মন পেতে তাই বেনজির সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে পদ্মশিবিরের নেতারা।
সংখ্যালঘুদের মন পাওয়ার চেষ্টা বিজেপির
বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘুদের মন পাওয়ার চেষ্টা নিরন্তর করে যেতে হবে। সেই মতো বাংলার সংখ্যালঘু সমাজকে প্রভাবিত করতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল বিজেপি। সংখ্যালঘু সমাজের বিজেপি নেত্রী ইশরাত জাহানকে এবার সংখ্যালঘু মোর্চার কেন্দ্রীয় সম্পাদক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর
বাংলার নির্বাচনী ফল স্পষ্ট করে দিয়েছে, সংখ্যালঘু সমাজ দু-হাত তুলে সমর্থন করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার জেরেই মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছে বিজেপিকে। এদিকে বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে পড়েছে। তাই সংখ্যালঘু মোর্চাকে এবার সক্রিয় করে তুলতে জোর দেওয়া হচ্ছে।
সংখ্যালঘু মোর্চাকে সক্রিয় করার পরিকল্পনা বিজেপির
বিজেপি নেতাদের একাংশ সংখ্যালঘু মোর্চা তুলে দেওয়ার সওয়াল করেছিলেন তাঁদের নিষ্ক্রিয়তা দেখে। তাই এবার সংখ্যালঘু মোর্চাকে সক্রিয় করার পরিকল্পনা সেরে ফেলল বিজেপি। বাংলার বিজেপ নেত্রী ইশরাত জাহানকে মোর্চার কেন্দ্রীয় সম্পাদক করার কথা ঘোষণা করছেন সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।
ইশরাতকে বিজেপিতে কেন্দ্রীয় পদ দেওয়ার ঘোষণা
তিন তালাক বিলোপের জন্য এই ইশরাত জাহানই মামলা করেছিলেন। সেই সূত্রেই বিজেপির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। তিন তালাক বিল পাসের পর ইশরাতকে বিজেপিতে নেওয়া হয় আনুষ্ঠানিকভাবে। এবার তাঁকে কেন্দ্রীয় পদ দিয়ে বিজেপি একপ্রকার বুঝিয়েই দিয়েছে বাংলার সংখ্যালঘু সমাজ এখন তাঁদের পাখির চোখ।
সংখ্যালঘু ভোটকে পাখির চোখ করে সিদ্ধান্ত
বিজেপির মহিলা মোর্চার সংখ্যালঘু শাখার আহ্বায়ক ছিলেন ইশরাত। এবার বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রচারকের তালিকাতেও রাখা হয়েছিল। তিনি প্রচারও করছিলেন বিজেপির হয়ে। কিন্তু কাঙ্খিত সাফল্য আনতে পারেননি। এবার তাঁকে আরও বড় আকারে ব্যবহার করতে চাইছে বিজেপি। সামনে আবার উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন।
শুধু হিন্দুত্ব দিয়ে হবে না, সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কও দরকার
বিজেপির অন্দরে সংখ্যালঘু সমাজ থেকে আসা নেতা-নেত্রীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। তাই বাধ্য হয়েই রণকৌশল বদল করছে বিজেপি। এবং তৃণমূলকে হারাতে যে শুধু হিন্দুত্ব দিয়ে হবে না, সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ককেও দরকার, তা এতদিনে বুঝেছে বিজেপি। সংখ্যালঘুরা এক হয়ে গেলে বিজেপির বংলা দখলের স্বপ্ন অধরা রয়ে যাবে, তা অঙ্ক দিয়ে বুঝিয়েছিলেন মুকুল রায়রা। কিন্তু বিজেপি হিন্দুত্বের পথ থেকে সরেনি। তাই যা হওয়ার ছিল, তা-ই হয়েছে।
বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যালঘু নেতারা দল ছাড়ার পর
ইতিমধ্যে রাজ্য বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন সংখ্যালঘু নেতা দল ছেড়েছেন। বিজেপির সমালোচনা করে দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে পা বাড়িয়েছেন মুকুল-ঘনিষ্ঠ কাশেম আলি এবং শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ কবিরুল ইসলামরা। তারপরই বিজেপি ভাবতে শুরু করেছে সংখ্যালঘুদের নিয়ে। তাঁদের গুরুত্ব আরোপ করতে চলেছে।
সংখ্যালঘুদের বাদ দিয়ে বাংলার নির্বাচন জেতা যাবে না
বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতিআলি হোসেন বলেন, সংখ্যালঘুদের বাদ দিয়ে বাংলার নির্বাচন জেতা যায় না। এটা পার্টিকে বুঝতে হবে। উত্তরপ্রদেশ-সহ যেসব জায়গায় বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে, সেখানে লংখ্যালঘুদের আস্থা অর্জন করতে হয়ছে, তারপরই সাফল্য এসেছে। বাংলাতেও তাই মনোযোগ দেওয়া উঠিত সংখ্যালঘু ভোটে।