মুকুল-দিলীপরা গৌণ, ভোট-জয়ে বিজেপি যাঁর উপর নির্ভরশীল বাংলা কি তাঁকে মানবে
মুকুল-দিলীপরা গৌণ, ভোট-জয়ে বিজেপি যাঁর উপর নির্ভরশীল বাংলা কি তাঁকে মানবে
২০২১-এর আগে বিজেপি ইতিমধ্যেই প্রচারে ঝড় তুলে দিয়েছে। অমিত শাহের ভার্চুয়াল সমাবেশের পর যুব মোর্চার নবান্ন অভিযান সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু বিজেপির এই নির্বাচনী প্রচারে বাংলার নেতৃত্বের কেউ বিশেষভাবে মুখ হয়ে উঠতে পারেননি। বিজেপি বুঝিয়েই দিয়েছে, তারা এবার বাংলায় প্রচারের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপরই রাখবে মূলতঃ।
বিজেপির প্রচার নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে দিল্লি থেকে
মুকুল রায়-দিলীপ ঘোষরা থাকা সত্ত্বেও বাংলায় বিজেপির প্রচার নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে দিল্লি থেকে। কোনও বাংলার মুখ নয়, বিজেপির নির্বাচনী প্রচারের সুর প্রথম বেঁধে দিলেন অমিত শাহ, তাঁর ভার্চুয়াল সমাবেশের মাধ্যমে। তারপর যুব মোর্চার ডাকে যদিও বা নবান্ন অভিযান হল, তার নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি যুব শাখার সর্বভারতীয় সভাপতি সংসদ সদস্য তেজস্বী সূর্য।
বাংলার নেতৃত্বের উপর ভরসা নেই বিজেপির
বাংলার সিংহাসন দখলের লড়াইয়ে বাংলার নেতৃত্বের উপর ভরসা নেই বিজেপির। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দলীয় সদর দফতর থেকে একটি মিছিলেন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু সেই মিছিলে দিলীপ ঘোষ একা ছিলেন নেতৃত্ব। তাঁর পাশে কোনও ভরসাযোগ্য মুখ দেখা যায়নি। বিজেপিতে বিভাজন স্পষ্ট করে দিয়েছিল এই নবান্ন অভিযান।
রাহুল নিস্ক্রিয়, বড়সড় ধাক্কা বঙ্গ বিজেপিতে
আর এই বিষয়টিকে আরও খারাপ দেখিয়েছে প্রবীণ নেতা রাহুল সিনহা ও তাঁর অনুগামীদের অনুপস্থিতি। রাহুল সিনহার মতো নেতা এই অভিযানে একেবারেই নিষ্ক্রিয় ছিলেন। তাঁর অনুপস্থিতি বিজেপির শক্তিকে অর্ধেক করে দিয়েছিল। শুধু দেখা গিয়েছে মুকুল রায় ও তাঁর অনুগামীদের। বিজেপির একটা বৃহত্তর অংশ বিরত থেকেছে এই অভিযান।
মুকুল জননেতা নন, কৌশলবিদ হিসেবে দলের সহায়ক
মুকুল রায় জননেতা নন। তাঁর নেতৃত্বে ময়দানে মানুষের ঢল নামবে না। তিনি নির্বাচনী মেশিনকে পরিচালনা করতে সক্ষম হবে। একজন গুরুত্বপূর্ণ কৌশলবিদ হয়ে দলকে সহায়তা করতে পারবেন নির্বাচনে। কিন্তু তাঁকে ময়দানে অগ্রভাগে দেখা গিয়েছে। তাঁকেই দেখা গিয়েছে বাংলার দায়িত্বে থাকা বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গিয়ার নিকটবর্তী হতে।
বাংলাতেও বিজেপির ভরসার নাম নরেন্দ্র মোদী
বিজেপি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, ২০২১ সালের নির্বাচনে কোনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ছাড়া তাঁরা লড়াই করবেন। এর অর্থ এই যে, ভোট টানতে বিজেপি কেবল নরেন্দ্র মোদীর ক্যারিশমার উপর নির্ভর করবে। এই মাসের শেষদিকে দুর্গাপুজো উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বঙ্গবাসীর উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা-বার্তা দেবেন। কার্যত নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
মোদী-মুখ আর অমিত শাহের মস্তিষ্কে বাংলার নির্বাচন
মোদী নিঃসন্দেহে দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ। কিন্তু সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী দেখা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় রাজ্যের নির্বাচনে তাঁর প্রভাব যথেষ্ট কম। তা সত্ত্বেও রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে মোদী-মুখে ভরসা রাখছে বিজেপি। তারপর অমিত শাহ নিয়ে জানিয়েছেন তিনি এবার নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বাংলার নির্বাচন করবেন। ফলে দিল্লি থেকেই এবার নিয়ন্ত্রণ হবে বাংলা নির্বাচনে বিজেপির প্রচার।
শক্তিশালী স্থানীয় মুখের প্রয়োজন বাংলার নির্বাচনে
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অন্যতম রাজনৈতিকভাবে স্বতন্ত্র রাজ্য। এখানকার নির্বাচনে এখন পর্যন্ত শক্তিশালী স্থানীয় মুখের প্রয়োজন হয়েছে। এমনকি জওহরলাল নেহরু প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মুখ ছিলেন বিধানচন্দ্র রায়। তাঁর একটা পৃথক সত্ত্বা ছিল এবং দলীয় হাইকমান্ডের উফর নির্ভরশীল না থকে যথেষ্ট স্বায়ত্তশাসন নিয়ে কাজ করেছিলেন।
বামেরাও বঙ্গে স্বতন্ত্র ছিল, তৃণমূল তো বাংলারই দল
কংগ্রেসের পতনের পরে বাংলায় যখন বাম শাসন শুরু হয়, তখনও দেখা যায় বাম শরিকের প্রধান সিপিএম পশ্চিমবঙ্গে পৃথক সত্ত্বা নিয়ে চলত। সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অধীন ছিল না বাংলা নেতৃত্ব। আর এখন ক্ষমতায় তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল তো পশ্চিমবঙ্গেরই দল। তাই বিজেপির দিল্লি-নির্ভরতা বাংলা কতটা মেনে নেবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।
মমতার 'পথেই' লকেটের আন্দোলন! পুলিশি হেফাজতে পটাশপুরের বিজেপি কর্মীর মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি