বনধ ডেকে বিজেপির সুবিধা করে দিল বামেরা, বললেন মমতা, দিলীপের যুক্তি ওসব নাটক
বনধ ডেকে বিজেপির সুবিধা করে দিল বামেরা। বামপন্থী দলগুলি বনধ ডেকে মানুষের হয়রানির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিল। তাই গণতান্ত্রিক পথেই আমরা সেই বনধের প্রতিরোধ করব।
কলকাতা, ২৬ ডিসেম্বর : বনধ ডেকে বিজেপির সুবিধা করে দিল বামেরা। কোর কমিটির বৈঠকের পর বামপন্থীদলগুলির দিকে তির ছুড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বিজেপি সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে, তারপর বামপন্থী দলগুলি বনধ ডেকে মানুষের হয়রানির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিল। তাই গণতান্ত্রিক পথেই আমরা সেই বনধের প্রতিরোধ করব।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই বনধ হবেই। আমরা রাস্তায় থাকব, রাস্তাতেই মোকাবিলা হবে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, বাম ও তৃণমূলের ঝগড়ার নাটক চলছে। দিল্লিতে ফ্লপ শো-র পর এ রাজ্যে বিজেপি-র উত্থান ঠেকাতেই এই সব নাটকের অবতারণা।
দলের তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রী যেমন রাস্তায় নেমে সেই বনধের প্রতিরোধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন নেতা-নেত্রীদের, তেমনই সরকারের তরফে মুখ্যসচিব জানিয়ে দিয়েছেন ২৮ ও ২৯ নভেম্বর সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের হাজিরা দিতে হবে। অন্যথায় দু'দিনের বেতন কাটা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সেইসঙ্গে রেল ও বিমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় কথা বলেছেন। পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার আর্জি জানিয়েছেন। পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী সমস্ত সরকারি পরবিহণ স্বাভাবিক রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বনধ নিয়ে নেতা-নেত্রী, মন্ত্রী-আমলাদের সতর্ক করার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নোট বাতিল কাণ্ডে লাগাতার আন্দোলনের পক্ষেই মত দিয়েছেন। সেইমতো সিদ্ধান্ত হয়েছে, টানা ন'দিন নোট বাতিলকাণ্ডে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ২৮ নভেম্বর কলেজ স্কোয়ার থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত্র পদযাত্রা।
এই পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেবেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। এরপর ২ ডিসেম্বর জমায়েত হবে রানি রাসমণি রোডে। সেখান থেকেই আরবিআই দফতরে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে। এছাড়া টানা ন'দিন কলকাতা ও জেলাগুলিতে ধারাবাহিক বিক্ষোভ, ধরনা, অবস্থান চলবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভাদেব চট্টোপাধ্যায়, মুকুল রায়, সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মতো কোর কমিটির নেতারা। সেইসঙ্গে এদিন বিশেষভাবে ডাকা হয়েছিল দলীয় সাংসদদের। মুখ্যমন্ত্রী এই বৈঠকে আগামী দিনের আন্দোলনের গতিপথ নির্দিষ্ট করে দেন প্রত্যেক নেতা-নেত্রীকে।