বিজেপিতে ২০ লক্ষ মুসলিমের যোগদান! একুশের আগে লক্ষ্যমাত্রা স্থির গেরুয়া শিবিরের
বিজেপিতে ২০ লক্ষ মুসলিমের যোগদান! একুশের আগে লক্ষ্যমাত্রা স্থির গেরুয়া শিবিরের
তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসানোর পরিকল্পনা প্রস্তুত করে ফেলেছে বঙ্গ বিজেপি। ২০২০-র ডিসেম্বরের মধ্যেই টার্গেট পূরণও করে ফেলতে চাইছে তারা। এবার ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে ২০ লক্ষ মুসলিম সদস্যকে দলে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই সেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে চাইছে বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চা।
তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরাতে
বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি বলেন, তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কে তাঁরা থাবা বসাতে উদগ্রীব হয়ে আছেন। মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রায় ১০০ শতাংশ তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক। সেখানে ভাঙন ধরানোই আমাদের উদ্দেশ্য। তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরাতে পারলে ২০২১-এ পরিবর্তনের কাজটা অর্ধেক সারা হয়ে যাবে।
২০ লক্ষ সংখ্যালঘুকে অন্তর্ভুক্ত করার টার্গেট
সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সভাপতি আলি হোসেন আরও জানান, ইতিমধ্যে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে ২০ লক্ষ সংখ্যালঘুকে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। আগামী চার মাসে এই লক্ষ্য অর্জন করা যাবে।
১২০টিরও বেশি আসনে মুসলিমরা নির্ধারক
মুসলিমরা রাজ্যের মোট ভোটারের ২৮-৩০ শতাংশ এবং রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১২০টিরও বেশি আসনে মুসলিমরা নির্ধারক শক্তি। আলি হোসেনের মতে, বিজেপি-বিরোধী দলগুলি বেশ কয়েক বছর ধরে বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল আখ্যা দিয়ে আসছে। কিন্তু মানুষ এখন বুঝতে পারছেন কারা আসলে সাম্প্রদায়িক।
বিজেপি 'সকলের উন্নয়নে' বিশ্বাস করে
আলি হোসেন বলেন, "সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেক বুদ্ধিজীবী এবং শিক্ষিত যুবক এখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কারণ তারা বুঝতে পেরেছেন যে বিজেপি 'সকলের উন্নয়নে' বিশ্বাস করে। বিরোধী দলগুলি নাগরিকত্ব সংশোধন আইন বা সিএএ নিয়ে মুসলমানদের বিভ্রান্ত করছে। এখন লোকেরা বুঝতে পেরেছে যে এর সঙ্গে নাগরিকত্বের কোনও যোগসূত্র নেই।
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলাগুলিতে মনোনিবেশ
মোর্চা সূত্রে জানা গেছে, বিজেপি টার্গেট করেছে রাজ্যের ১২০ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় ১০ লক্ষ মুসলমান এবং বাকি ১৭৪টি বিধানসভা থেকে ১০ লক্ষ মুসলমানকে। সদস্যপদ প্রচারের সময় উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মালদহ ও মুর্শিদাবাদের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলাগুলিতে মনোনিবেশ করতে চাইছে বিজেপি।
সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ফেরানোর প্রচেষ্টা
রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সংখ্যালঘুদের তাদের দলে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা বিজেপির বহুদিন ধরেই ছিল। কিন্তু সিএএ-বিরোধী আন্দোলন এবং প্রস্তাবিত এনআরসি নিয়ে প্রচারে সেই প্রচেষ্টা ধাক্কা খেয়েছিল। করোনা আবহে সিএএ-এনআরসি ভীতি কেটে যেতেই ফের শুরু হয়েছে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ফেরানোর প্রচেষ্টা।
বিজেপির উন্নয়নের অ্যাজেন্ডা বিশ্বাস ফিরিয়েছে
বিজেপির অভিযোগ, বিগত কয়েক বছর ধরে সংখ্যালঘুরা তৃণমূল সরকারের কাছে বঞ্চনার শিকার হয়েছে। বিজেপির উন্নয়নের অ্যাজেন্ডা তাদের বিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে। এখন বিজেপির প্রতি তারা আকৃষ্ঠ হচ্ছে। তৃণমূল অবশ্য বিজেপির এই অভিষন্ধি পূরণ হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। কারণ বাংলা দাঁড়ি্য়ে আছে বিশ্বাসযোগ্য ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির উপর।
রাজ্যের সর্বাধিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকেই বিশ্বাস
রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "সংখ্যালঘুরা কখনই বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে বিশ্বাস করতে পারে না। তৃণমূল রাজ্যের সর্বাধিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি, যা সমস্ত সম্প্রদায়ের বিকাশের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। ভবিষ্যতেও সকলের জন্য কাজ করবে।"
বিজেপি ছেড়ে ২ সদস্য ভিড়েছেন তৃণমূলে, তবু পঞ্চয়েত সমিতি বোর্ড গড়তে হুইপজারি