বাংলায় বর্ণবাদী রাজনীতি শুরু! ২০২১-এ তৃণমূল কংগ্রেসকে হারাতে মাস্টারস্ট্রোক বিজেপির
বাংলায় বর্ণবাদী রাজনীতি শুরু! ২০২১-এ তৃণমূলকে হারাতে মাস্টারস্ট্রোক বিজেপির
বাংলাতেও জাতপাত, ধর্ম-বর্ণের খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। ভোট মেরুকরণের লক্ষ্যে বর্ণবাদী রাজনীতি থেকে এতদিন মুক্ত ছিল বাংলা। কিন্তু ২০১৯-এ বিজেপির গুরুত্ব ও ক্ষমতা বাড়ার পর আর থেমে থাকল না বর্ণবাদী রাজনীতি। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে পুনরায় মেরুকরণের রাজনীতিতে ফায়দা লুটতে চাইছে
এবার বাংলাতেও বর্ণবাদী রাজনীতি!
এতদিন যা উত্তরপ্রদেশ-বিহারে দেখা যেত, এবার তা বাংলাতেও দেখা যাবে। সামনেই বিহারে নির্বাচন, সেখানে যেমন জাতপাতের রাজনীতি শুরু হয়েছে, তেমনই বাংলাতেও এখন থেকে শুরু বর্ণবাদী রাজনীতি। বাংলায়, ব্রাহ্মণ, বৈদ্য এবং কায়স্থ- এই অগ্রণী জাতিগোষ্ঠী বড় শহরগুলিতে আধিপত্য বিস্তার করে আছে। তারা হিন্দু জনসংখ্যার প্রায় ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ। এবং মোট ভোটারদের প্রায় ১২ থেকে ১৩ শতাংশ।
উচ্চবর্ণের পুরোপুরি আধিপত্য বাংলায়!
বাংলায় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে উচ্চবর্ণের পুরোপুরি আধিপত্য রয়েছে। বাংলার সমস্ত মুখ্যমন্ত্রী কেবল এই দল থেকেই উঠে এসেছেন। এখন পর্যন্ত প্রতিটি ক্যাবিনেটের মূল পদগুলি উচ্চবর্ণের নেতা-নেত্রীরাই আঁকড়ে থেকেছেন। সুতরাং, একথা বলা যায় যে, নীরবে উচ্চবর্ণের আধিপত্য থেকেছে বাংলায়।
অনগ্রসর জাতির মধ্যে বঞ্চনার প্রচার
গত কয়েক বছর ধরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস এবং বিজেপি সম্মিলিতভাবে অনগ্রসর জাতির মধ্যে এই বঞ্চনার বিষয়ে অবিচ্ছিন্নভাবে প্রচার চালিয়ে আসছে। বিজেপি এই জাতিগত বিভেদের বিষয়টি দিয়ে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ফায়দা তুলতে চেষ্টা করছে। এই ব্যাপারে অন্য সমস্ত দলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম বিজেপি।
উচ্চবর্ণের আধিপত্যকে ধ্বংস করতেই...
ওবিসি সম্প্রদায় বাংলায় হিন্দুদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যক। ওবিসিদের জন্য সংরক্ষণ রয়েছে ১৭ শতাংশ। এই তালিকায় কয়েকটি মুসলিম সম্প্রদায়ও রয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ নিজে ওবিসি গোষ্ঠী থেকে এসেছেন এবং গ্রামবাংলায় তাঁকে দলের মুখ হিসাবে ইতিমধ্যেই তুলে ধরা হয়েছে। উচ্চবর্ণের আধিপত্যকে ধ্বংস করতেই বিজেপি এই পরিকল্পনা নিয়েছে।
মতুয়া-সহ তফশিলি জাতি-উপজাতিরা
বাংলায় তফসিলি জাতিদের সংখ্যাও তুলনামূলকভাবে বেশি। জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ (হিন্দুদের প্রায় ৩০ শতাংশ) এসসি এবং ৫.৫ শতাংশ তফসিলি উপজাতি বা এসটি। এসসি-র মধ্যে একটি বড় ও প্রভাবশালী গোষ্ঠী হলেন মতুয়ারা। বামফ্রন্টকে সিংহাসনচ্যুত করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ২০১১ সালের রাজ্য নির্বাচনে সফলভাবে মতুয়া কার্ড খেলেন।
সিএএ-বাণে মতুয়াদের সম্মোহিত করেছে বিজেপি
কয়েক বছর ধরে বিজেপি এই সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে। মূলত ভারতীয় নাগরিকত্বের কার্ড খেলে বিজেপি এখানে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। বহুল আলোচিত সিএএ বা নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের মাধ্যমে বিজেপি প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে এখানে।
'পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের' উপরও প্রভাব বিস্তার
বাংলার ২৯৪টি আসনের মধ্যে ৭০-৭৫টি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি উচ্চবর্ণবিরোধী প্রচার চালাতে পারবে না। এই প্রতিবন্ধকতার কারণে দলটি তার মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করতে পারবে না। বিজেপি অতীতে উত্তরপ্রদেশে যেমন চেষ্টা করেছিল, তেমনই 'পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের' উপরও প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করবে।
বাংলায় গেরুয়া শিবিরকে ক্ষমতায় আনতে
এছাড়া আরএসএস-বিজেপি মনে করে যে, তৃণমূল কংগ্রেস, বাম, কংগ্রেস এবং আসাদউদ্দিন ওওয়াইসির অল ইন্ডিয়া মজিল-ই-মুসালিমেনের মধ্যে মুসলিম ভোট বিভক্ত হবে। আর এই বিভাজনের খেলাকে মাধ্যম করেই তারা ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় গেরুয়া শিবিরকে ক্ষমতায় আনতে সক্ষম হবে।
আলুর দামে রাশ টানতে উদ্যোগ মুখ্যমন্ত্রীর, ভিনরাজ্যে পাচার রুখতে বেঁধে দিলেন দাম