ঝোপ বুঝে কোপ মেরেছেন মমতা, উলুবেড়িয়া উপনির্বাচনের আগে ধাক্কা বিজেপিতে
দিল্লির অনুমোদনের জন্য যে নাম পাঠানো হয়েছিল রাজ্য বিজেপির তরফে, ঝোপ বুঝে সেখানেই কোপ মারল তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিখুঁত গেমপ্ল্যানে জোর ধাক্কা খেল বঙ্গ বিজেপি।
সদ্য তৃণমূত্যাগী মুকুল রায়কে উলুবেড়িয়া কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে চেয়েছিল একাংশ। কিন্তু মুকুল রায় স্বয়ং গররাজি নিজে প্রার্থী হতে। ভোটে লড়ার থেকে ভোট করানোতেই তিনি অনেক বেশি স্বাচ্ছ্যন্দ। তাই বিকল্প হিসেবে দিল্লির অনুমোদনের জন্য যে নাম পাঠানো হয়েছিল রাজ্য বিজেপির তরফে, ঝোপ বুঝে সেখানেই কোপ মারল তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিখুঁত গেমপ্ল্যানে জোর ধাক্কা খেল বঙ্গ বিজেপি।
[আরও পড়ুন:'বিদ্রোহী' ভারতী কি তবে বিজেপিতেই! দিলীপ-মুকুলকে চিঠিতে 'পালাবদলে'র জল্পনা]
উলুবেড়িয়া উপনির্বাচনের ঘোষণার পরই দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছিলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তার পরদিনই বিজেপি যাঁকে প্রার্থী করবে বলে ভেবেছিল, টোপ দিয়ে তাঁকেই ঘরে তুলে নিতে সমর্থ হল তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির হবু প্রার্থী তৃণমূলে নাম লেখানোয় উলুবেড়িয়া উপনির্বাচনের আগে জোর ধাক্কা নেমে এল বিজেপি শিবিরে।
বিজেপি ভেবেছিল বুদ্ধিজীবী সেলের কনভেনর তথা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরীকে উলুবেড়িয়ায় প্রার্থী করে লড়াইটা বিপক্ষ শিবিরে পৌঁছে দিতে। দীপ্তাংশুবাবু এর আগে আসানসোল বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। এবার সেই কর্নেলকে প্রার্থী করেই উলুবেড়িয়ায় তাক লাগাতে চেয়েছিল বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু কর্নেলকে তৃণমূল তুলে নেওয়ায় বিজেপির পরিকল্পনা ধাক্কা খেল।
এখন বিকল্প নাম স্থির করতে হবে বিজেপিকে। বিজেপির হাতে অবশ্য বিকল্প অনেক নামই রয়েছে। বিজেপি মোট পাঁচজনের নাম পাঠিয়েছিল, এখনও চারটি নাম তাঁদের হাতে রয়েছে। তারপর ভারতী ঘোষের হঠাৎ রাজনীতিতে প্রবেশ করার ভাবনা এবং বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশে রাজনৈতিক মহল অন্যরকম কিছু ভাবতে শুরু করেছে। উলুবেড়িয়াতে ভারতী ঘোষকে পার্থী করে বিজেপি পাল্টা দিতে পারে তৃণমূলকে।
উল্লেখ্য, শনিবার তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়র হাত ধরে মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ তিন নেতা যোগ দেন বিজেপিতে। মুকুল রায়ের বিজেপিতে যোগদানের পিছনে দীপ্তাংশুবাবুর ভূমিকাও ছিল বলে জানা গিয়েছে। দীপ্তাংশুবাবুর সঙ্গে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র সুসম্পর্ক রয়েছে। সেখানেই চিড় ধরিয়ে দিতে পেরেছে তৃণমূল। তারপর শিল্প বিশেষজ্ঞ সুপর্ণ মৈত্রও মুকুল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। সোনালি সিংহরায়েরও মুকুল-যোগ ছিল। তিনি মুকুল রায়ের 'রাজনৈতিক গুরু' মৃণাল সিংহরায়ের বোন। এই মৃণালবাবুর হাত ধরেই রাজনীতিতে উত্থান হয়েছিল মুকুল রায়ের। একেবারে গুরুকূল থেকেও এবার আঘাত নেমে এল মুকুলের উপর।