মমতার মন্ত্রিসভার তিন মন্ত্রী অসন্তুষ্ট! বিজেপির মহাপরিকল্পনা তৈরি একুশের বিধানসভা ভোটের আগে
মমতার মন্ত্রিসভার তিন মন্ত্রী অসন্তুষ্ট! বিজেপির মহাপরিকল্পনা তৈরি একুশের আগে
সব ঠিকঠাক চললে ২০২১ সালের মে মাসে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচন হওয়ার কথা। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার ও তার মন্ত্রি পরিষদকে করোনা সংকট মোকাবিলার চেষ্টা করে যেতে হচ্ছে। এর আগেই আম্ফান তাণ্ডব চালিয়ে গিয়েছে। এই জোড়া বিপর্যয় তৃণমূল মন্ত্রিসভার ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছে বঙ্গ বিজেপি।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা বিজেপির
তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিপরিষদের অন্তত তিনজন মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তাঁদের অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। এই অসন্তুষ্টিকেই বিজেপি হাতিয়ার করতে চাইছে। তৃণমূলকে ভাঙাতে এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা রচনা করতেও তা কাজে লাগবে বিজেপির।
ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে নিশানা সাধন পাণ্ডের
তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন কলকাতা পুরসভার সমালোচনা করে সরাসরি তোপ দেগেছিলেন মমতার মন্ত্রিপরিষদেরই সদস্য উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী সাধন পান্ডে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর বিদ্যুৎ ও জলের সমস্যা সমাধান করতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি প্রাক্তন মেয়র ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে আক্রমণ করেছিলেন।
সাধন পান্ডেকে দলের পক্ষ থেকে শোকজ নোটিশ
এরপর সাধন পান্ডেকে দলের পক্ষ থেকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছিল এবং পাবলিক প্ল্যাটফর্মে দলের বিরুদ্ধে সরাসরি কথা না বলার জন্য তাঁকে সতর্ক করা হয়েছিল। পান্ডের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে তাঁর সাথে এই আচরণে তিনি অসন্তুষ্ট এবং তিনি মনে করেন দল এখন কোনওরকম মতবিরোধ সহ্য করবে না।
ত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ শুভেন্দুর
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের আরেক সদস্য শুভেন্দু অধিকারীও ঘূর্ণিঝড় আম্ফান পরবর্তী সময়ে বাংলায় ত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনিও মনে করেন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। বাংলার মানুষ অসন্তুষ্ট এবং শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে জানিয়েছিলেন। তারপর এ নিয়ে পদক্ষেপ শুরু হয়েছে, কিন্তু বিলম্বিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও ব্যাপক দুর্নীতি দেখে বিরক্ত
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও তৃণমূলের আন্তঃদলীয় রাজনীতি এবং ব্যাপক দুর্নীতি দেখে বিরক্ত প্রকাশ করেন। উন্নয়নের বিষয়ে সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। আম্ফান সংকটের সময় দলীয় নেতৃত্বের কাছে বক্তব্যও পেশ করেছিলেন। এরপর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রশংসা করেছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। তিনি বলেছিলেন সুব্রতবাবু যদি কলকাতার মেয়র থাকতেন তবে তিনি আম্ফান সঙ্কটকে আরও ভালভাবে পরিচালনা করতে পারতেন।
বিজেপিতে যোগ দেবেন কিনা পরিষ্কার নয়!
তবে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই নেতারা বিজেপিতে যোগ দেবেন কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়। বিজেপির তরফে জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের কিছু মন্ত্রী ও বিধায়কের সঙ্গে বিজেপির যোগাযোগ রয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেক নেতা রয়েছেন, যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিতে ইচ্ছুক। আমরা মূল্যায়ন ও বিশ্লেষণ করার পরে তাঁদের দলে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করব।
মুকুলকে নিয়ে জল্পনার শেষ নেই, টুইটার-কাণ্ডের পরও বিজেপিতে সক্রিয়তা ঘোরতর প্রশ্নে