থমথমে সন্দেশখালিতে পালিত বনধ, ৩১শে আসছে বিজেপি প্রতিনিধি দল
বিজেপি-র বিজয় মিছিলকে কেন্দ্র করে গত সোমবার রাত থেকে অশান্তির সূত্রপাত হয় সন্দেশখালির ধামাখালিতে। সেই অশান্তি ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে। তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি, দু'পক্ষের মারামারিতে জখম হন অন্তত ২৬ জন। এরই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বনধের ডাক দেয় বিজেপি। একই সঙ্গে এদিন বসিরহাট মহকুমায় বনধ ডেকেছিল সিপিএমও। তাদের দাবি, এই সংঘর্ষে কয়েকজন বাম কর্মীও জখম হয়েছেন।
এদিকে, রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ব্যক্ত করেছে বিজেপি। কারণ গতকাল সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে বারবার তাঁকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে রাজ্য বিজেপি-র একটি প্রতিনিধি দল নবান্নে গিয়ে সন্ধেবেলা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। কেন ভোট-পরবর্তী হানাহানি হচ্ছে, কেন তা বন্ধ করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না, জানতে চান বিজেপি নেতারা। অভিযোগ, সঞ্জয়বাবু কোনও উত্তর দেননি। বিরোধীদের ওপর হামলা বন্ধে কোনও প্রতিশ্রুতিও দিতে চাননি।
গতকাল অর্থাৎ বুধবার বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সন্দেশখালি যায়। গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলে। শমীকবাবুরা চলে যেতেই সিপিএমের একটি প্রতিনিধি দল আসে। এই দলে ছিলেন সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, রেখা গোস্বামী প্রমুখ। সুজনবাবু বলেন, পুলিশের সামনেই বিরোধী দলের ওপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পুলিশ দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।
আরও পড়ুন: একটা বাড়িতে আগুন লাগালে গোটা গ্রাম জ্বালিয়ে দেব, তৃণমূলকে হুমকি বিজেপি-র
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই থমথমে ছিল গোটা সন্দেশখালি। বসিরহাট থেকে সন্দেশখালি যাওয়ার ৭২ নম্বর রুটের বাস বন্ধ ছিল। জায়গায় জায়গায় পথ অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। ভ্যাবলা স্টেশনে রেল অবরোধ হয়। তাদের পক্ষ থেকে ২৮ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসেও পাল্টা কয়েকজনের নামে এফআইআর করেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষ জানান, সন্দেশখালির ঘটনায় তাদের দল জড়িত নয়। বিজেপি-ই এলাকায় প্ররোচনা ছড়াচ্ছে। দলীয় কর্মীদের সংযত থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন নির্মলবাবু।
এদিন বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বলেছেন, প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে নালিশ জানানো হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি হাইকমান্ড একটি প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে। ওই দলে থাকছেন মুখতার আব্বাস নাকভি, মীনাক্ষি লেখি এবং সিদ্ধার্থনাথ সিং। এ ছাড়া, বাংলা থেকে দুই নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালি এবং বাবুল সুপ্রিয় দলটিতে থাকবেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তাঁরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে রিপোর্ট দেবেন। সেই ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় সরকার।