২০২১ ফিরে আসুক চাইছে না বিজেপি, ২০২৩-এর জন্য তৈরি একেবারে ভিন্ন কৌশল
বাংলার ভোটের দায়িত্ব বাংলার কারও উপর না ছেড়ে নিজেদের উপর রেখেছিলেন অমিত শাহ-জেপি নাড্ডারা। তার মাশুল গুণতে হয়েছে।
বিজেপি ২০২১-এর পুনরাবৃত্তি ঘটুক, তা একেবারেই চাইছে না। বিজেপি চাইছে নতুন করে স্বপ্ন বুনতে। সে জন্য একুশের পরিকল্পনা বিসর্জন দিয়ে ২৩শের পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য নতুন কৌশল প্রয়োগ করতে। আর সেই কৌশল নিয়ে বিজেপির বর্তমান ও প্রাক্তন সভাপতির মুখে শোনা গেল একসুর।
অতি লোভে তাঁতি নষ্ট হল ২০২১-এ
২০১৯-এ বঙ্গ নেতৃত্বের উপর নির্বাচনের ভরা দিয়ে বিজেপি প্রভূত সাফল্য পেয়েছিল। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায়কে নির্বাচক কমিটির আহ্বায়ক করে বিজেপি ২ থেকে তাদের আসন সংখ্যা বাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল ১৮-তে। কিন্তু তারপর অতি লোভে তাঁতি নষ্ট হল ২০২১-এ।
বঙ্গ নেতৃত্বের উপর ভরসা না করার মাশুল
২০১৯-এর সাফল্য দেখে বিজেপি ২০২১-কে পরিবর্তমের ভোট মনে করে বাংলার নেতৃত্বের উপর ভরসা না রেখে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাঁধেই দায়িত্ব রেখেছিল। কিন্তু ডেলি প্যাসেঞ্জারি করে বিজেপি পারেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো জননেত্রীর ভিতকে নাড়িয়ে দিতে। বঙ্গ নেতৃত্বের উপর ভরসা না করার মাশুল তাদের দিতে হয়েছে।
গ্রামের ভোটে বাংলার নেতৃত্বের উপর আস্থা
এবার তাই একেবারে ভিন্ন কৌশল নিয়ে এগনোর চেষ্টা করছে বিজেপি। এবার আর ভুল নয়, বঙ্গ নেতৃত্বের উপরই পঞ্চায়েত ভোটের ভার দিতে চাইছে বিজেপি। অর্থাৎ গ্রামের ভোটে বাংলার নেতৃত্বের উপর আস্থা রাখছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতারা বাংলার গ্রামের ভোটে ঝাঁপাবেন না।
বাংলার ভোটের দায়িত্বে যখন কেন্দ্রের নেতারা
একুশের বিধানসভা ভোটে বঙ্গজয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, ভিনরাজ্যের হেভিওয়েট মুখ্যমন্ত্রীরা এসেছিলেন বাংলায় ভোট প্রচারে। বাংলার ভোটের দায়িত্ব বাংলার কারও উপর না ছেড়ে নিজেদের উপর রেখেছিলেন অমিত শাহ-জেপি নাড্ডারা।
বিজেপিকে বহিরাগত তকমা দিয়েই কাজ হাসিল তৃণমূলের
একুশের নির্বাচনের ফল বেরোতেই স্বপ্নভঙ্গ হয় বিজেপির। ২০০ পারের স্বপ্ন নিয়ে বিজেপি এই লড়াই শুরু করেছিলেন। দেখা যায়, বিজেপি ৭৭-এই থেমে যায়। তৃণমূল ২০০ পার করে যায়। বহিরাগত তকমা দিয়েই তৃণমূল কাজ হাসিল করে নেয়। টানা তিনবার বাংলার ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল।
বিজেপি এবার গ্রামের ভোটে কাদের ভরসা করছে
রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এদিন বলেন, পঞ্চায়েত ভোট আমরা লড়ে নেব। পঞ্চায়েত ভোটে দিল্লির নেতাদের কোনও দরকার নেই। লড়বে বাংলার নেতারা। রাজ্য, জেলা ও মণ্ডল নেতৃত্বের উপর ভরসা করেই বিজেপি এবার গ্রামের ভোটে লড়বে।
তৃণমূলকে পঞ্চায়েত থেকে উৎখাত করতে প্রস্তুত
শুধু সুকান্ত মজুমদারই নন, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বর্তমান কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষও বলেছেন, এবার বাংলার নেতারাই বুঝে নেবে তৃণমূলকে। তৃণমূলকে পঞ্চায়েত থেকে উৎখাত করতে বাংলার মানুষ প্রস্তুত। অবাধ ভোট হলে কোনও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব না এলেও আমরা জিতব।
দিল্লির নেতারা বাংলায় আসছেন ২০২৪-এর লক্ষ্যে
তবে বাংলায় নেতারা এখন থেকেই আসছেন কেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে সুকান্ত মজুমদার ও দিলীপ ঘোষ এক সুরে বলেন, দিল্লির নেতারা বাংলায় আসছেন ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের জন্য। ২৪-এর লোকসভায় ২৫-এর লক্ষ্যে এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। আর রাজ্যের নেতারা প্রচার চালাচ্ছেন পঞ্চায়েত ভোটের লক্ষ্যে।
আদানি ইস্যুতে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ! পথে নেমে মোদী সরকারকে আক্রমণ কংগ্রেসের