নাগরিকত্ব আইনের ফায়দা নিতে এনআরসিতে হাঁসফাঁস! একুশে বুমেরাং হবে না তো বিজেপির
নাগরিকত্ব আইন প্রণয়ন করে বিজেপি ফায়দা লুঠতে চেয়েছিল। কিন্তু বিজেপির সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছে এনআরসি আতঙ্ক।
নাগরিকত্ব আইন প্রণয়ন করে বিজেপি ফায়দা লুঠতে চেয়েছিল। কিন্তু বিজেপির সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছে এনআরসি আতঙ্ক। নিজ ভূমে পরবাসী হওয়ার আতঙ্ক এখন তাড়া করে বেড়াচ্ছে বাংলার বুকে। ফলে পশ্চিমবঙ্গে নাগরিকত্ব আইনকে পুঁজি করে বিজেপি যে জাল বিস্তার করতে চাইছিল, তা এখন বুমেরাং হয়ে দেখা দিয়েছে তাদের কাছে্।
মুসলিম থেকে শুরু করে মতুয়া বা অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে, বলা যায় বঙ্গবাসীর কাছেই স্পষ্ট নয় কী ক্যাব, কী নাগরিকত্ব আইন আর কী এনআরসি। এই আইন হওয়ার পর মানুষের মনে আতঙ্ক, তাঁকে এবার নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। না দিতে পারলেই হতে হবে ঘরছাড়া, ভিটে-মাটি ছাড়া। পরিবার ভেঙে তছনছ হয়ে যাবে।
এই নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন কিংবা জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ নিয়ে যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তা কিন্তু অস্বাভাবিক নয়। পশ্চিমবঙ্গে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হিন্দুদের এই বিলের পক্ষে সমর্থন থাকলেও নাগরিকত্ব আইন সংশোধনীর অর্থ কী এবং এটি এনআরসির সঙ্গে কীভাবে সম্পর্কিত তা নিয়েও বিস্তর বিভ্রান্তি এবং জ্ঞানের অভাব রয়েছে।
বনগাঁ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে ঠাকুরনগর শহর। সেখানেই বাস মতুয়া সম্প্রদায়ের। মাতুয়ারা কেবল সুসংহত নয়, তারা জনবহুলও। আদমশুমারিতে তাদের রেকর্ড করা হয়নি। সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়ায় এবং তা আইনে পরিণত হওয়ায়, তারা অত্যন্ত খুশি।
ঠাকুরনগরের মতুয়াদের একাংশের মত, বাংলাদেশে আমরা নিপীড়িত ছিলাম। আমাদের ভারতে আসতে হয়েছে অত্যাচারিত হয়ে। ভারতে নাগরিকত্ব পাওয়া আমাদের অধিকার। আ্রবার একটা অংশ মনে করছে, সবই তো হচ্ছে- কিন্তু এরপর এনআরসি হলে কী হবে। একবার অসম এনআরসি'র কথা মনে করলেই আতঙ্কিত মানুষজন। সেখানে যে হিন্দুরাও বাদ পড়েছেন। আর সেই সংখ্যা অন্য সম্প্রদায়ের থেকে অনেক বেশি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্য নেতৃত্বকে প্রচার করতে বলেছিলেন, "প্রথমে সিএবি এবং তারপরে এনআরসি করা হবে। মানুষকে এ ব্যাপারে বোঝাতে হবে। শরণার্থীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই, কেবল অনুপ্রবেশকারীরাই এই আইনের কোপে পড়বেন। কিন্তু বঙ্গ বিজেপি মা্নুষকে তা বোঝাতে ব্যর্থ।
মানুষের মধ্যে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে 'শরণার্থী' এবং 'অনুপ্রবেশকারী' শব্দ দুটি বিজেপি ব্যবহার করছে হিন্দু ও মুসলিম অভিবাসীদের ভোদাভেদ করতে। অর্থাৎ শরণার্থী বোঝাতে হিন্দু বা অমুসলিমদের বোঝানো হচ্ছে। আর অনুবপ্রবেশকারী বলতে মুসলিমদের। বিজেপি নেতাদের কথাতেই তা বারবার স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
তারপর যুক্ত হয়েছে হিন্দুদের উপরও এনআরসিতে নিপীড়নের ঘটনা। অসমে বিজেপির বিরুদ্ধে বিজেপির প্রতিবাদ। হিন্দুদের গর্জে ওঠা- এসবের ফলে ফায়দা লুঠতে গিয়ে বিজেপিই পড়েছে চরম বিপাকে। নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে অনেকের উপকার করতে গিয়ে বিপদ ডেকে এনেছেন। বিজেপি হাঁসফাঁস হচ্ছে নাগরিকতক্ব আইন বা সিএএ এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ বা এনআরসি বোঝাতে গিয়ে।
'মুশারফকে আমরা নাগরিকত্ব দিতে পারি, কারণ উনি মামলায় ফেঁসে আছেন তো '!কটাক্ষ স্বামীর