বাংলা শিখতে হাতেখড়ি দেবেন রাজ্যপাল! মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকলেও দোটানায় বিজেপি
বাংলা ভাষা শিক্ষা জন্য তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে যে তারিখটিকে বেছে নিয়েছেন তাতে তাঁর শিক্ষার প্রতি অনুরাগই শুধু নয়, বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি শ্র্দ্ধাশীলতাও প্রকাশ পেয়েছে। এই অনু
রাজ্যপাল হাতেখড়ি দেবেন রাজভবনে। রাজভবনের সরস্বতী পুজোয় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালের আমন্ত্রণ রক্ষা করতে সম্মত হলেও এখনও স্পষ্ট নয় বিজেপি বিধায়ক বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আসবেন কি না!
বিজেপি এখনও দোটানায় রাজ্যপালের আমন্ত্রণের সাড়া দিয়ে রাজভবনের সরস্বতী পুজোয় আসবেন কি না। ২৬ জানুয়ারি রাজভবনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের হাতেখড়ি অনুষ্ঠান। রাজভবনের পূর্বদিকের লনে আয়োজন করা হয়েছে এই পূজার্চনার। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই রাজভবন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেযেও দোটানায় বিজেপি।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বাংলা ভাষা শেখার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন এদিন। এর আগে অনেক রাজ্যপালই বাংলা ভাষা শেখার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন বাংলায় এসে। কিন্তু কেউই সেটা বাস্তবায়িত করতে পারেনি। কিন্তু কেরালার বাসিন্দা সিভি আনন্দ বোস বাংলা শেখার ব্যাপারে একেবারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বাগদেবীর আরাধনা করে তিনি হাতখড়ি দিয়ে বাংলা শিক্ষায় প্রবেশ করতে চাইছেন। রাজ্য ও রাজ্যবাসীকে বুঝতে বাংলা শেখার পাঠ নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি পূর্বসুরিদের থেকে একেবারে স্বতন্ত্র। বয়স ৭২ হলেও তিনি এখনও শেখার ব্যাপারে এককাট্টা। তাঁর মাতৃভাষা মালওয়ালি। মালওয়ালি ছাড়াও তিনি হিন্দি ইংরেজিতে সাবলীল। এবার তিনি বাংলা শিখে ছাড়বেনস বলে পণ করেছেন। সে জন্য ঘটা করে হাতেখড়ি দিচ্ছেন রাজ্যপাল।
বাংলা ভাষা শিক্ষা জন্য তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে যে তারিখটিকে বেছে নিয়েছেন তাতে তাঁর শিক্ষার প্রতি অনুরাগই শুধু নয়, বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি শ্র্দ্ধাশীলতাও প্রকাশ পেয়েছে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমন্ত্রিচতের তালিকাও বেশ লম্বা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে অধ্যক্ষ বিমান বন্যো্রপাধ্যায়, পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও রয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র সাংবাদিক কুণাল ঘোষও।
এখন দেখার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যপালের হাতেখড়ির অনুষ্ঠানে রাজভবনে যান কি না। কারণ রাজ্যপালের হাতেখড়ি নিয়ে বাংলা ভাষা শিক্ষার ইচ্ছাপ্রকাশ নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষতার অভিযোগ এনেছেন। কিন্তু বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয়মন্ত্রী সুভাষ সরকার সম্পূর্ণ ভিন্নমত পোষণ করেছেন এ ব্যাপারে।
বিজেপি এই হাতেখড়িকে রাজনৈতিক স্টান্ট বলে অভিযোগ করে রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির স্বপন দাশগুপ্ত। এ বিষয়ে রাজ্যপালকে রাজ্য সরকারের জেরক্স মেশিন বলে কটাক্ষ করেন স্বপনবাবু। তিনি বলেন, রাজভবনে এভাবে হাতেখড়ির অনুষ্ঠান দেখে আমার যেমন কেমন কেমন লাগছে।
রাজ্যপালকে নিয়ে বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্তের প্রকাশ্য বিরোধিতা করে একেবারে উল্টো মতামত ব্যক্ত করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপবাবু এ প্রসঙ্গে বলেছেন, রাজভবনের দিকে চেয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। কেন্দ্রীয়মন্ত্রী সুভাষ সরকারও বলেন, রাজ্যপাল বাংলা শিখতে চেয়ে হাতেখড়ি দেবেন। এ বিষয়টি তো উৎসাহ দেওয়া উচিত।
রাজ্যপালের হাতেখড়ি ইস্যুতে বিজেপিতেই বিভাজন, স্বপন দাশগুপ্তের বিরোধিতায় দিলীপ-সুভাষ