ফিরল ‘ঝালমুড়ি রাজনীতি’র তত্ত্ব, অজ্ঞতার দাসত্ব ছাড়ার বার্তায় কী ইঙ্গিত বাবুলের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝালমুড়ি খাওয়া নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। তার জের এখনও চলছে। তবে তিনি যে ঝালমুড়ির রাজনীতিতে বাজিমাত করতে সমর্থ হয়েছিলেন, তা আজও বুক ফুলিয়ে বলেন বাবুল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝালমুড়ি খাওয়া নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। তার জের এখনও চলছে। তবে তিনি যে ঝালমুড়ির রাজনীতিতে বাজিমাত করতে সমর্থ হয়েছিলেন, তা আজও বুক ফুলিয়ে বলেন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। ফের নতুন মোড়কে সেই ঝালমুড়ি রাজনীতির উত্থাপন করে সমালোচকদের জবাব দিলেন বাবুল।
বাবুল এদিন টুইট করে সমালোচকদের জবাব দেন, 'অজ্ঞতার দাসত্ব কোরো না। সেদিন দিদির সঙ্গে গাড়িতে ঝালমুড়ি খেয়ে মিটিংটা না করলে আজ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোও হত না আর আসানসোলে ইএসআই হাসপাতালও হত না। তিনি এদিন আবারও বুঝিয়ে দিলেন ঝালমুড়িতে কাজ হয়েছিল সেদিন। কেননা রাজ্য সরকারের সহযোগিতা না পেলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ এতটুকু এগোত না।
২০১৫ সালের ৯ মে-র ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্য সফরে এসেছিলেন। অনুষ্ঠান ছিল নজরুল মঞ্চে। নজরুল মঞ্চ থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়িতে রাজভবনে এসেছিলেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তখন ভিক্টোরিয়ার সামনে গাড়ি থামিয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে ফুচকা ও ঝালমুড়ি খাইয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই রাজরহাটের এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দরাজ প্রশংসা করেছিলেন বাবুল।
তারপর বাবুলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তাঁরই পার্টি সতীর্থ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, মন্ত্রী হলে ভালো কথা বলতে হয় আমি জানি। বাবুল আমার বন্ধু। তাই তাঁকে আমি বলতেই পারি, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যখন এক গাড়িতে যান, ঝালমুড়ি খান, তখন তো জিজ্ঞাসা করতেই পারেন, কেন আমাদের কর্মীরা এত মার খাচ্ছেন। তৎকালীন রাজ্য বিজেপির সভাপতি রাহুল সিনহাও জানিয়েছিলেন, এটা বাবুলের ব্যক্তিগত অবস্থান।
Ignorance can be dangerous ! অজ্ঞতার 'দাস-ত্ব কোরো না • গাড়ির মধ্যে ঝালমুড়ি খেয়ে মিটিংটা না করলে ইস্টওয়েস্ট মেট্রো আর আসানসোলের ESI হাসপাতাল, দুটোর কোনোটাই হতো না • আর তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে ওঠো - শুভেচ্ছা রইলো 😂 https://t.co/okpfubEsHB
— Babul Supriyo (@SuPriyoBabul) September 9, 2018
[আরও পড়ুন: এক হয়েছে 'রাজা-রানি-বাদশা'! সিনেমার নাম নিয়ে বিরোধীদের নিশানা লকেটের ]
এরপর বাবুল জবাব দিয়েছিলেন টুইটে। তিনি লিখেছিলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য যখন একযোগে কাজ করে, তখন রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে রাখাই ভালো। প্রকল্পের কাজে সহযোগিতা করার জন্য রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি। তারপর ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখে তিনি লিখেছিলেন- যাঁরা দিদির সঙ্গে ঝালমুড়ি বৈঠকের সমালোচনা করেছিলেন, তাঁদের মুখগুলো একটু দেখতে চাই। তবে রূপা আর পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটতে চাননি।
[আরও পড়ুন: মমতা ঝোলেও আছেন, অম্বলেও আছেন! তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্ব-বিরোধিতার নালিশ অধীরের]
এতদিন পর আবারও সেই ঝালমুড়ির প্রসঙ্গ টেনে এনে বাবুল কী বোঝাতে চাইলেন। তিনি সমালোচকদের বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারকেও বিশেষ কিছু জানাতে চাইলেন? আপাতত সেই সমালোচনা তুলে রেখেই বলা যায়, বাবুল ঝালমুড়ি তত্ত্বে উন্নয়নের কথা সুস্পষ্ট। সেই কথাই ফলাও করে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। চুপ করিয়ে দিয়েছেন সমালোচকদের। বাবুলের এই টুইটকে সমর্থন করে এক ফলোয়ার লিখেছেন, অনুষ্ঠান করুন, ক্রিকেট দেখুন এবং ঝালমুড়ি খান পিসির সঙ্গে। চায়ের কাপে রাজনীতি থাকে না।
[আরও পড়ুন:পঞ্চায়েত-হিংসায় গুলিবিদ্ধ একরত্তি শিশুর প্রাণপণ সংগ্রাম, এসএসকেএমে ভর্তিতে হয়রানি]