মমতা-শুভেন্দুর সৌজন্যে বিড়ম্বনা বিজেপিতে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে পত্রবাণ পদ্ম-নেতার
মমতা-শুভেন্দুর সৌজন্যে বিড়ম্বনা বিজেপিতে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে পত্রবাণ পদ্ম-নেতার
সৌজন্যে বিড়ম্বনা বেড়েই চলেছে বঙ্গ বিজেপির। মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভায় সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার পর থেকেই বিজেপির অস্বস্তি বেড়েই চলেছে। বিজেপি নেতারাই এই অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শুভেন্দু অধিকারীর সৌজন্যে নীচুতলায় ভুল বার্তা যাচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নালিশ করলেন বঙ্গ বিজেপির নেতা।
বঙ্গ বিজেপির নেতা রাজকমল পাঠক শুভেন্দু অধিকারীর এই সৌজন্য প্রদর্শনের বিরুদ্ধে নালিশ করে চিঠি দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষকে। তিনি অভিযোগ করেন, নেতাদের সৌজন্যে ভুল বার্তা যাচ্ছে নীচুতলার নেতা-কর্মীদের কাছে। তিনি শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করলেও তাঁর নিশানায় যে বিরোধী দলনেতাই, তা স্পষ্ট।
বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে বিরোধী দলনেতা উপস্থিত হওয়ার পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির অন্দরে ঝড় উঠেছে। গেল গেল আওয়াজ উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যে ভুরি ভুরি অভিযোগ তুলে বিজেপি কেন্দ্র ও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল, তা জলে গেল বলে একাংশ মনে করছে। মমতা-শুভেন্দু সাক্ষাতে বঙ্গ রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে, চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে বিজেপির অন্দরে। এবার এই মর্মে বঙ্গ বিজেপির তরফে চিঠি পাঠানো হল কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদককে।
তবে যা লেখা হয়েছে, তাতে অনেকেই মনে করছেন মমতা-শুভেন্দু সৌজন্যের কথাই বলা হয়েছে। সূত্রের খবর, রাজকমল পাঠকের পত্রবাণে সেই সৌজন্যের কথা তুলে বলা হয়েছে বিজেপি নেতারা ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন। তাঁরা বিষয়টি মানতে পারছেন না। এই মর্মে তিনি শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিক্রিয়ার দাবি জানিয়েছেন। যাতে কর্মী ও সমর্থকদের কাছে দলের অবস্থান স্পষ্ট হয়, তার জন্যই তিনি ওই দাবি জানান।
বিজেপি নেতা রাজকমল পাঠক বলেন, যাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন, যাঁকে তিনি সারাক্ষণ আক্রমণ করছেন, তাঁকে কেন সাস্টাঙ্গে প্রণাম করবেন। আমাদের কর্মীরা বাড়ি ছাড়া। তাঁরা যদি দেখেন যাঁর বিরুদ্ধে তাঁদের আন্দোলন তাঁকে আমাদের নেতারা গিয়ে প্রণাম করছেন, তাঁদের মনে তো দ্বন্দ্ব জাগবেই। সেই জন্যই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে আমি অনুরোধ করেছি এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে।
তিনি আরও বলেন, যেটা রটনা হচ্ছে, এমন ঘটনা হয়তো ঘটেনি। সবটাই তৃণমূলের চাল। কেন্দ্র যেন এই মর্মে কড়া বার্তা দেয়। এই চিঠি প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, যিনি চিঠি দিয়েছেন এটা তাঁর ব্যাপার। তবে রাজনীতিতে সৌজন্যের জায়গা থাকা উচিত বলেই আমি মনে করি। উল্লেখ্য, ২৫ নভেম্বর বিধানসভার সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানের আগে বিধানসভার প্রথমার্ধের অধিবেশনের পর আচমকাই শুভেন্দু অধিকারীকে ডেকে পাঠান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তারপর তাঁরা পারস্পরিক নমস্কার প্রতি নমস্কার করেন। কিন্তু চর্চা শুরু হয়ে যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রণাম করেন। তার ফলে বিজেপি অস্বস্তিতে পড়ে।
শুভেন্দুর প্রতি মমতার 'সৌজন্যে’র অন্ত নেই! বিধানসভায় পুস্তিকা প্রকাশ করে দেখালেন প্রমাণ