বিজেপিতে আড়াআড়ি বিভাজন! দলের অন্তর্কলহ এবার পরিণত হয়েছে পোস্টার-যুদ্ধে
বিজেপিতে আড়াআড়ি বিভাজন! দলের অন্তর্কলহ এবার পরিণত হয়েছে পোস্টার-যুদ্ধে
বিজেপি এখন আড়াআড়ি দু-ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে বাংলায়। এক পক্ষ বাংলার বর্তমান বঙ্গ নেতৃত্ব। অন্য পক্ষ সাম্প্রতিক সাংগঠনিক রদবদলে জায়গা না পাওয়া বিক্ষুব্ধরা। তারা সমান্তরাল সংগঠন গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। দু-পক্ষই নিজেদের মতো করে ব্যানার যুদ্ধে নেমে পড়েছে। বিজেপিতে অন্তর্দ্বন্দ্ব একেবারে প্রকাশ্যে।
বিজেপির বিদ্রোহী নেতারা দল পাকাচ্ছে
বেশ কিছুদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে বিজেপির বিদ্রোহী নেতারা দল পাকাচ্ছে। আর তাঁদের পক্ষে পোস্টার পড়ছে, যেখানে টার্গেট করা হচ্ছে বঙ্গ বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বকে। নাম করেই কিছু জায়গায় বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন)অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেও পোস্টার দেওয়া হয়।
পাল্টা ব্যানার ও পোস্টার পড়ল বিজেপির
অনেক পোস্টারে অমিতাভ চক্রবর্তীকে তৃণমূলের দালাল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। তৃণমূলের ভোট-কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের অঙ্গুলিহেলনে তিনি চলেন বলেও ফলাও করে পোস্টার পড়ে। এই বিতর্কের মাঝে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছিল আগেই। এবার পাল্টা ব্যানার ও পোস্টার পড়ল রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর সমর্থনে।
বিজেপির মজদুর সেল দুই নেতার সমর্থনে পোস্টার দেয়
সোমবার সকালে বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বের ছবি প্রকাশ্যে নিয়ে এল ওই পোস্টার ও ব্যানার। যখন দলের একাংশ রাজ্য শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন, তখন দলের অপর অংশ বিজেপির বর্তমান নেতৃত্ব তথা সুকান্ত মজুমদার ও অমিতাভ চক্রবর্তীদের সমর্থনে পোস্টার-ব্যানার লাগাচ্ছেন। এদিন বিজেপির মজদুর সেল দুই নেতার সমর্থনে পোস্টার দিয়েছে।
রাজ্যস্তরের অনেক নেতানেত্রীরাও শান্তনুদের বিদ্রোহে শামিল
বিজেপির সাংগঠনিক রদবদলের পর থেকেই দফায় দফায় বিদ্রোহ চলছে। মতুয়া গড় থেকে শুরু হয় বিজেপির বিদ্রোহ। প্রথমে বিজেপির বিধায়করা বিক্ষুব্ধ হন মতুয়া গড়ে। পাঁচ বিধায়কের পর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয়মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। শুধু মতুয়া গড়ের নেতা-নেত্রীরাই নন, রাজ্যস্তরের অনেক নেতানেত্রীরাও শান্তনুদের বিদ্রোহে শামিল হন।
জয়প্রকাশ ও রীতেশকে শোকজের পর পোস্টার-যুদ্ধ
জয়প্রকাশ মজুমদার, রীতেশ তিওয়ারি, সায়ন্তন বসুর মতো নেতারাও শামিল হয়েছেন এই বিদ্রোহে। শান্তনু তাঁদের নিয়ে শুধু বৈঠক করেই ক্ষান্ত থাকেননি। বনভোজনের রাজনীতি শুরু করেন তাঁরা। তারপর জয়প্রকাশ ও রীতেশকে শোকজ করা হয়। সেই শোকজ নিয়েও বেসুরো মন্তব্য করেন শান্তনু। তিনি বলেন, আরও অনেক নেতা তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং করবেনও, তাঁদেরও কি শোকজ করবে বিজেপি, নাকি বাদ দিয়ে দেবে।
বিজেপিতে পোস্টার-ব্যানারের যুদ্ধ চলছে রমরমা
বিজেপি শান্তনুদের নিয়ে ঘোর বিপাকে পড়েছিল। পোর্টট্রাস্টে বিক্ষুব্ধদের মিটিংয়ের সময় পড়েছিল পোস্টার, বনগাঁয় বনভোজনের এলাকায় পোস্টার পড়েছিল। এবার তার পাল্টা সুকান্ত ও অমিতাভদের সমর্থনে পোস্টার পড়ল শ্যামবাজার, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে মুরলিধর সেন লেনের রাজ্য দফতরেও। মোট কথা বিজেপিতে এখন পোস্টার-ব্যানারের যুদ্ধ চলছে রমরমা।