মুকুল-প্রশ্নে দিশেহারা বিজেপি! শেষপর্যন্ত মূল্যায়নের পথে হাঁটলেন কেন্দ্রীয় নেতারা
শুক্রবার বিজেপির রাজ্য দফতরে বসেছিল জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক। সেই বৈঠকে জেলাস্তরের প্রত্যেকের কাছে থেকে মুকুল রায়কে নিয়ে মতামত নেওয়া হয়েছে।
মুকুলকে কি মেনে নেবেন বিজেপির নিচু স্তরের নেতারা। জল মাফতে চাইছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই কারণেই শনিবার রাজ্য কমিটির বৈঠকে তৃণমূল-ত্যাগী মুকুল রায়কে নিয়ে মূল্যায়ন করতে বসছে বিজেপি। মুকুল রায়কে নিয়ে কে কী ভাবছেন তা খোদ তৃণমূল স্তরের নেতাদের মুখ থেকে শুনতে চান বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
শুক্রবার বিজেপির রাজ্য দফতরে বসেছিল জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক। সেই বৈঠকে জেলাস্তরের প্রত্যেকের কাছে থেকে মতামত নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অমিত শাহের নির্দেশে রাজ্যে এসেছেন কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ ও সুরেশ পূজারি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক শিবপ্রকাশ জেলা সভাপতিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন, তৃণমূলস্তর থেকে উঠে আসা নেতাদের সঙ্গেও তিনি সরাসরি কথা বলছেন।
মুকুল রায়কে নিয়ে বিজেপির অন্দরে সংশয় বলতে শুধু সারদা ও নারদ-যোগ। এখনও মুকুল রায় মুক্ত নন সারদা-নারদকাণ্ডের অভিযোগ থেকে। তৃণমূল ত্যাগ করার পর সম্প্রতি ফের ইডি ও সিবিআই তাঁকে তলব করেছে নারদকাণ্ডে। ফলে মুকুল রায়কে দলে নিলে সারদা-নারদ কাঁটাকেও গিলতে হবে বিজেপিকে। তাই আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত এমন একজন নেতাকে দলে নিলে তাঁর কীরূপ প্রভাব পড়তে পারে, তা মূল্যায়ন করতেই রাজ্যে এসেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
এদিকে সারদা ও নারদকাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্লিনচিট দেওয়ার বিষয়টি বিজেপির রাজ্য তথা জেলাস্তরের নেতারা কেমনভাবে নিচ্ছেন, তাও জেনে নিতে চাইছে বিজেপি। ফলে রাজ্য কমিটির বৈঠকে এদিন মুকুল রায়কে নিয়ে সেই প্রশ্ন উঠেছে। মুকুলের বিজেপিতে আসা নিয়ে কী ভাবছেন সবাই, এটাই কমন প্রশ্ন ছিল বৈঠকের।
আসলে মুকুল রায়কে নিয়ে রাজ্য বিজেপি দুভাগ। একাংশ চাইছে মুকুল রায়কে দলে নিলে রাজ্য বিজেপি শক্তিশালী হবে। বিজেপির মতো তা দলে আসা মানে সংগঠনের শ্রীবৃদ্ধিও ঘটবে। তৃণমূল ভেঙে অনেক নেতাও ভিড় বাড়াবে বিজেপি। তৃণমূল কমবে, বাড়বে বিজেপি। এই অঙ্কে আদতে বিজেপিরই লাভ।
অপর অংশ আবার ভিন্নমত পোষণ করেছে। তাঁদের কথায়, মুকুল রায়কে দলে নেওয়া মানে সারদা ও নারদ-ইস্যুতে নেতিবাচক প্রচার হবে তাঁদের বিরুদ্ধে। সেটায় খারার প্রভাবই পড়বে। উপরন্তু মুকুল রায়কে দলে নিলে কতখানি সাংগঠনিক শক্তি বাড়বে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ কতজন তৃণমূল নেতা দল ছেড়ে বিজেপিতে আসবেন, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না।
এদিন বৈঠকে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি হবে মুকুল রায় ইস্যুতে। তারপর সেই রিপোর্ট পেশ করা হবে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের কাছে। তিনি তা দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। মুকুল রায়ও এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি কোন দলে যাবেন, তাঁর ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা কী হবে? ফলে তাঁদের কাছেও সময় থাকছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার।