মুকুলের থাবায় জঙ্গলমহলে বড় ভাঙন! জোর ধাক্কা তৃণমূলে, 'স্বপ্ন' দেখছে বিজেপি
পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্ব থেকেই শুরু হয়েছিল দলবদল। তা অব্যাহত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরেও। লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই বাড়ছে এই প্রবণতা।
পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্ব থেকেই শুরু হয়েছিল দলবদল। তা অব্যাহত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরেও। লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই বাড়ছে এই প্রবণতা। এরই মধ্যে পুরুলিয়া জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভালো ফল করেছে বিজেপি। সেই কারণেই এবার লোকসভা সাফল্য পেতে মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষরা ঘাঁটি গেড়েছেন জেলায়।
মুকুলের থাবা
বিজেপির দাবি, পুরুলিয়ায় তাঁদের শক্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে তৃণমূল ভেঙে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। এবারও তাঁর অন্যথা হল না। পুরুলিয়ায় এলে তৃণমূল শিবিরে থাবা বসানো চাই-ই মুকুল রায়ের। এবারও তাই তৃণমূলের প্রায় ৩০টি পরিবারকে গেরুয়া শিবিরে টানলেন তিনি।
৩০ পরিবার বিজেপিতে
পুরুলিয়ায় বিজেপির এক জনসভায় মুকুল রায়ের হাত ধরে দলে যোগদান করলেন তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি অর্জুন গড়াই। তাঁর নেতৃত্বেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসে ৩০টি পরিবার। এই সভায় মুকুল রায় ছাড়াও ছিলেনে বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী।
মুকুল-যোগে বৃদ্ধি
মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই বলেছিলেন, তৃণমূলের উপরতলা সাজানো থাকবে, নিচেরতলা ফাঁকা হয়ে যাবে। তৃণমূলের নেতা নয়, কর্মীরাই তাঁর প্রকৃত টার্গেট। সেইমতো জঙ্গলমহলকে টার্গেট করে তিনি তৃণমূলের ভিত নড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই কাজে তিনি অনেকটা সফলও।
মুকুল দক্ষ সংগঠক
তৃণমূলের জঙ্গলমহলের সংগঠন গড়ে তোলার কারিগর তিনি। ২০ বছর ধরে মুকুল রায় একার হাতে গড়েছেন তৃণমূলের সংগঠন। সেইমতো জঙ্গলমহলে তাঁর প্রভাব প্রতিপত্তি অনেকটাই। তৃণমূলের অধিকাংশ নেতা তাঁর অনুগামী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই জঙ্গলমহলে বিজেপিকে বাড়িয়ে চলেছেন তিনি।
দিলীপও কাণ্ডারি
মুকুল রায় একা নন, পুরুলিয়া-সহ জঙ্গলমহলের সংগঠন বৃদ্ধিতে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন। কারণ এটা দিলীপ ঘোষের হোমগ্রাউন্ড। সেখানে দিলীপ ঘোষ ভালো খেলবেন, সেটাই স্বাভাবিক। সেইমতো তৃণমূলে ভাঙন ধরানোর কাজ তিনিও করেছেন সন্তর্পণে।
মুকুল-দিলীপে সাফল্য
গতবার লোকসভায় পুরুলিয়া কেন্দ্রে বিজেপি চতুর্থ হলেও, মুকুল রায়ের যোগদানের পর এই কেন্দ্রে বিজেপি অনেক শক্তিশালী হয়েছে। দিলীপ ঘোষ তো ছিলেনই, মুকুল রায় আসার পর তৃণমূলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেই ভাঙনের পথ ধেরই জেলায় সংগঠন বাড়িয়ে চলেছে বিজেপি। তার ফলও পাচ্ছেন হাতেনাতে।
পঞ্চায়েতের ফলেই আশা
২০১৪ লোকসভায় বিজেপি এই কেন্দ্র ৮৬ হাজার ২৩৬ ভোট পেয়েছিল। কিন্তু বিজেপির বিশ্বাস জঙ্গলমহলে পালাবদলের সূচনা হয়েছে। সেই কারণেই পঞ্চায়েত ভোটে প্রভূত সাফল্য পেয়েছে বিজেপি। সেই সাফল্যকে পাথেয় করেই এই কেন্দ্রে জিততে পারবে বলে মনে করছে বিজেপি। ফলে এই জেলায় সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে তৃণমূল।