শান্তনুর মানভঞ্জন কোন সমীকরণে? মতুয়া ভোট ধরে রাখতে দিলীপ ঘোষের 'মাস্টারস্ট্রোক'
লক্ষ্য বিধানসভা নির্বাচন। সেদিকে নজর রেখে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব ঠেকাতে ও সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের মান ভাঙাতে উদ্যোগী বঙ্গ বিজেপি। অবশেষে ভাঙা হল বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলা। তৈরি হল নতুন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা। বিজেপির নবগঠিত বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হয়েছে শান্তনুর অনুগামী মনস্পতি দেবকে। অবশিষ্ট বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদে অবশ্য শংকর চট্টোপাধ্যায় বহাল রয়েছেন।

২০১৯-এ বনগাঁ ও ব্যারাকপুরে জয়লাভ করে বিজেপি
গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পাঁচটি লোকসভার মধ্যে বনগাঁ ও ব্যারাকপুরে জয়লাভ করে বিজেপি। বনগাঁয় সাংসদ নির্বাচিত হন মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রটি বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল এতদিন। সেই জেলা ভেঙে তৈরি হল বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা।

শংকর চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই বিবাদ শুরু হয় শান্তনুর
দলের বারাসত সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শংকর চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই বিবাদ শুরু হয় শান্তনুর। পরস্পরের মুখ দেখাও বন্ধ হয়ে যায়। শংকরের অপসারণ দাবি করে বিজেপির কর্মীদের একাংশ শান্তনুর কাছে স্মারকলিপিও জমা দেয়। শান্তনু তা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেন।

বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব
শান্তনুর অনুগামী ডাক্তার মনস্পতি দেবও বিভিন্ন সময়ে নাম না-করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শংকরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অকথা-কুকথা পোস্ট করেছেন। শংকর বনগাঁয় কোনও কর্মসূচি ঘোষণা করলে সেখানে থাকতেন না শান্তনু অনুগামীরা। আবার বারাসতে শান্তনুর কর্মসূচিতে শংকরও গরহাজির থাকতেন।

ময়দানে নামেন দিলীপ ঘোষ
শংকর ও শান্তনুর কাদা ছোড়াছুড়ি বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের কাছে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগ নিয়েও শান্তনু সুর চড়ান। অবশেষে রবিবার রাতে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ রাজারহাটের একটি হোটেলে শান্তনুকে ডেকে দলের লক্ষ্য বোঝানোর চেষ্টা করেন।

ভাঙন রুখতে জেলা 'ভাঙল' বিজেপি
জানা গিয়েছে সেই বৈঠকেই শান্তনুও দিলীপের কাছে কিছু দাবি জানান। সিদ্ধান্ত হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মতুয়াদের নাগরিকত্বের বিষয়টি দেখবেন। দলের জেলা সভাপতি শংকরের সঙ্গে শান্তনুর বিরোধ মেটাতে শেষ পর্যন্ত বারাসত সাংগঠনিক জেলাও ভেঙে দিল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। নবগঠিত জেলার সভাপতি করা হয়েছে শান্তনু অনুগামী মনস্পতিকে। তাঁর অধীনে থাকবে বনগাঁ মহকুমার গাইঘাটা, বনগাঁ উত্তর, বনগাঁ দক্ষিণ ও বাগদা বিধানসভা। বুধবার কলকাতায় দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

স্পষ্ট হচ্ছে দেওয়াল লিখন! বিজেপি ঘনিষ্ঠতা বাড়তেই মহারাজের সঙ্গে দুরত্ব তৈরি মমতার