বিজেপি জয়ের কড়ি পেয়ে গিয়েছে ২০২১-এর ভোটে! তৃণমূল-বামেদের টেক্কা এবার যে পথে
বিজেপি জয়ের কড়ি পেয়ে গিয়েছে ২০২১-এ! তৃণমূল-বামেদের টেক্কা এবার যে পথে
২০২১-এর বাংলা বিধানসভা নির্বাচনই পাথির চোখ বিজেপির। ২০১৯-এর সাফল্যের ধারাকে পাথেয় করে ২০২১-এর বিধানসভা ভোটযুদ্ধ জয়ের কড়ি হাসিল করতে চাইছে বিজেপি। আর আরএসএসের দেখানো পথে বিজেপি সেই টার্গেট ছুঁতে এবার কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে ময়দানে। 'ভদ্র'-সমাজকে বাইপাস করে তারা পিছিয়ে পড়া ও উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্যই এবার ঝাঁপাচ্ছে।
আরএসএসের দেখানো পথে সাফল্য দেখছে বিজেপি
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের অঙ্ক এবার সহজ নয়। নানা মেরুকরণেই এবার জয় হাসিল করতে হবে। তা বিজেপির থেকে ভালো কেউ জানে না, আর ভালো কেউ করতেও পারে না। বাংলায় গেরুয়া নিশান ওড়ানোর জন্যে আরএসএস সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে। এবার বিজেপি সেই পথ ধরেই সাফল্য নিয়ে আসবে বাংলায়।
২০১৯-এর সাফল্যের রাস্তা অনুকরণ করবে বিজেপি
বাম আমলে বাঙালি ভদ্রলোক শ্রেণির ভোট বিশেষ করে শহরের হিন্দু মধ্যবিত্ত শ্রেণি এবং উচ্চবর্ণের বাঙালিরা সাধারণত বামেদের দিকে ঝুঁকে থাকতেন। তৃণমূল সেই ভোটব্যাঙ্কে আঘাত হানতে সমর্থ হয়েছিল। বিজেপিও আংশিকভাবে সফল হয়ে প্রভাব বিস্তার করতে। তথাপি বাঙালি ভদ্রলোক শ্রেণিতে এখনও প্রভাব বেশি তৃণমূলের। তাই আবারও ২০১৯-এর সাফল্যের রাস্তাই অনুকরণ করতে লাগল বিজেপি।
আদিবাসী ও উপজাতি সম্প্রদায়কে টার্গেট বিজেপির
বিজেপি নির্বাচনী প্রচারে এবারও মূল ইস্যু করতে চলেছে বাংলায় দীর্ঘ-অবহেলিত এবং শোষিত আদিবাসী ও উপজাতি সম্প্রদায়কে। ২০১৯-এর বছরের লোকসভা নির্বাচনে এই পথে হেঁটেই ১৮ আসনে জয়লাভ করেছিল বিজেপি। সেই থেকে শিক্ষা নিয়েই বিজেপি আদিবাসী ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও বিস্তারলাভ করতে সচেষ্ট হয়েছে।
মিশন একুশে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে টার্গেট বিজেপির
উত্তরবঙ্গে রাজবংশী সম্প্রদায়, পাহাড়ে গোর্খা, জঙ্গলমহলে আদিবাসী-উপজাতি সম্প্রদায় উত্তর ২৪ পরগনা-নদিয়ায় মতুয়া গোষ্ঠী, এছাড়া তপশিলি জাতি-উপজাতি এবং ওবিসি সম্প্রদায়কে টার্গেট করেছে। তাঁরা অর্থনৈতিকভাবে সুবিধা পান না, পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন। এইসব দাবি তুলেই তাঁদের পাশে দাঁড়ানোপ লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে বিজেপি।
আদিবাসী ও উপজাতি ভোটেই জয় দেখছে বিজেপি
আরএসএস এক দশকের বেশি সময় ধরে আদিবাসী ও উপজাতি মহলে কঠোর পরিশ্রম করে চলেছে। মানুষকে তাঁরা বোঝাচ্ছে বাম এবং তৃণমূল আমলে তাঁরা অনেকাংশে অবহেলিত ছিল। তাঁদেরকে সামাজিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে। বিজেপি চাইছে আদিবাসী ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে শক্তিশালী ভিত তৈরি করতে।
কংগ্রেস-বাম-তৃণমূলকে মাত দিতে এক ইস্যু বিজেপির
বিজেপি বোঝাচ্ছে, প্রথমে কংগ্রেস, তারপরে বাম এবং এখন তৃণমূল একই পথ অনুসরণ করে চলছে। তাঁরা সর্বদা উচ্চবর্ণের ভদ্রলোকদের নিয়ে কাজ করছে। বাংলায় সিপিএমের প্রায় সমস্ত শীর্ষ নেতৃত্ব উচ্চবর্ণের বাঙালিদের নিয়ে গঠিত ছিল। এসসি, এসটি, ওবিসি এবং এমনকী বাম দলগুলির মহিলাদের প্রতিনিধিত্বও খুব কম ছিল।
তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যেখানে ফারাক বিজেপির
তৃণমূলও আদিবাসী ও উপজাতিদের বিরুদ্ধে একই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করে এসেছে। তৃণমূলের প্রায় সমস্ত শীর্ষ নেতৃত্ব ব্রাহ্মণ, কায়স্থ এবং বৈশ্য নিয়ে গঠিত। সেখানে এসসি, ওবিসি, এসটি এবং প্রান্তিকদের জন্য জায়গা সীমিত। অন্যদিকে, বিজেপি আদিবাসী এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়ের মানুষকে নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে এবং এই সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে অনেককে সিনিয়র পদ দিয়েছে।
আরএসএসের শ্রমেই ২০২১-এর জয়ধ্বজা দেখছে বিজেপি
বিজেপি উদাহারণস্বরূপ জানিয়েছে, রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ নিজে ওবিসি এবং উচ্চ পদে থাকা আরও অনেকেই সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির লোক। আরএসএস কয়েক দশক ধরে বাংলায় নিঃশব্দে এবং আশ্বাসের সঙ্গে কাজ করে চলেছে। উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহল এবং রাজ্যের অন্যান্য অনগ্রসর অঞ্চলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতি মনোনিবেশ করেছে। বিজেপি এবার সেই ফসল তুলতে চাইছে নিজের গোলায়।
'দলহীন' শুভেন্দুকে চান মুকুল! মুখে এক বললেও আস্তিনে লুকিয়ে অন্য তাস