তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েও শিকে ছিঁড়ল না! প্রার্থী হতে পারলেন না যাঁরা
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েও শিকে ছিঁড়ল না! প্রার্থী হতে পারলেন না যাঁরা
তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরই নেতা-নেত্রীরা বিদ্রোহ করে দল ছেড়েছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন প্রতিপক্ষ বিজেপি শিবিরে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল ক-দিন। কিন্তু বিজেপিতে গিয়েও লাভ হল না তাঁদের মধ্যে অনেকেরই। ছিঁড়ল না শিকে।
বিজেপির প্রার্থী তালিকায় তৃণমূলীদের ভিড়, দলে উল্টো স্রোত বইয়ে যাঁরা 'বেসুরো’
বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী সেনাবাহিনী কোন দেশের! ভারতের স্থান কত নম্বরে, সমীক্ষা রিপোর্ট
চাওয়া-পাওয়ার হিসেব মেলেনি অনেকেরই
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েও টিকিট মেলেনি অনেকেরই। কেউ কেউ বলেছিলেন টিকিট চাই না, সম্মান চাই। কিন্তু প্রার্থী বিতর্কেই যেহেতু দলবদল, তাই প্রার্থী হতে না পারার প্রসঙ্গ তো উঠবেই। বিজেপিতে যোগ দিয়েও এমন অনেকেই প্রার্থী হওয়া হয়ে ওঠেনি একুশের নির্বাচনে। চাওয়া-পাওয়ার হিসেব মেলেনি অনেকেরই।
মমতার ১০ 'টোটকা' একুশের ভোট-ইস্তেহারে, বাংলা হবে সমৃদ্ধশালী তৃণমূলের হ্যাটট্রিকে
তাঁদের কি একূল-ওকূল দু-কূলই গেল না!
জটু লাহিড়ী থেকে শুরু করে সোনালি গুহ, এমনকী দীপেন্দু বিশ্বাসের মতো তারকাও এবার টিকিট পাননি বিজেপিতে। তৃণমূল ত্যাগী বিজেপি নেতাদের নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তাই প্রশ্ন উঠেছে, যাঁরা পদ্মশিবিরে নাম লেখালেন, তাঁদের কি একূল-ওকূল দু-কূলই গেল না! বঙ্গ রাজনীতির ভোট চিত্রে এখন জোর চর্চা তৃণমূল ত্যাগী নেতাদের নিয়ে।
আদি বিজেপির নেতারা মানতে পারছেন না
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়ে বেশিরভাগই প্রার্থী হয়েছেন। তাঁদের অনেককে নিয়ে বিক্ষোক্ষও চলছে জেলায় জেলায়। আদি বিজেপির নেতারা তাঁদের মানতে পারছেন না। এতদিন যাঁদের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই ছিল, তাঁদেরকে জেতাতেই নামতে হবে ময়দানে, তা মানতে পারছেন না একটা বড় অংশের বিজেপি নেতা-কর্মী।
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে, তবু টিকিট মিলল না
আর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েও যাঁদের টিকিট মিলল না, তাঁদের মধ্যে আসবে জটু লাহিড়ীর নাম। তিনি অশীতিপর হওয়ায় তৃণমূল টিকিট দেয়নি। তারপরই মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে দল ছেড়েছিলেন জটু লাহিড়ী। একইভাবে বিজেপি শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন সোনালি গুহ, দীপেন্দু বিশ্বাস, গৌরীশঙ্কর দত্তরা। কিন্তু তাঁদের প্রার্থী করেনি বিজেপি।
প্রার্থীপদ চাই না সোনালির শুধু একটু সম্মান চাই
এর মধ্যে সোনালি গুহ তৃণমূলের প্রার্থী পদ না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। তারপর মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। বলেছিলেন প্রার্থীপদ চাই না। শুধু একটু সম্মান চাই। তৃণমূল অসম্মানিত হয়েছি, বিজেপিতে সাধারণ কর্মীর মতো কাজ করব। এরপর মনে করা হয়েছিল সোনালিকে টিকিট দেবে বিজেপি। কিন্তু তা হয়নি।
টিকিট না পাওয়ার তালিকায় আরও যাঁরা
দীপেন্দু বিশ্বাসকেও বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। তারপর দলবদল করে তিনি যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। বিজেপিও তাঁকে টিকিট টিল না। নদিয়ার তেহট্টের গৌরীশঙ্কর দত্তেরও একই অবস্থা। আর মালদহের হবিবপুরে তৃণমূলের টিকিট পেয়েও তা ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সরলা মুর্মু। বিজেপি তাঁকেও টিকিট দেয়নি। টিকিট না পাওয়ার তালিকায় রয়েছেন প্রাক্তনমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদাও।
১৮ কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম প্রকাশ বাকি, আশার আলো
এখনও ১৮ কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম প্রকাশ করতে বাকি বিজেপির। আর কলকাতার মধ্যেই দুটি কেন্দ্রে গররাজি বিজেপির প্রার্থী। এই অবস্থায় তৃণমূলত্যাগীদের নাম সেই তালিকায় থাকে কি না, তা-ই দেখার। এই সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অনেক নেতা আবার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তৃণমূলে ফিরতে আগ্রহী।
সবার আগে দেশ, তারপর দল! সঙ্ঘ-নীতি
এদিকে বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই পর্বে দলের অন্দরে যে ক্ষোভ বেড়েছে, তা প্রশমনের জন্য বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সঙ্ঘের নীতি কথা শুনিয়েছেন। টিকিট না পায়ে দলের আদি নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ নিরসনে সঙ্ঘ-শিক্ষার তিনমন্ত্র বিলিয়েছেন। বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন সবার আগে দেশ, তারপর দল।
সঙ্ঘ-শিক্ষার তিন মন্ত্র বিলোলেন দিলীপ
দিলীপ ঘোষ মনে করেন, সঙ্ঘ-শিক্ষার তিন মন্ত্র দলের মধ্যে একতা আনতে পারে। আদি-নব্য দ্বন্দ্ব ভুলে বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করাতে পারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। সেই চেষ্টাই বিজেপির রাজ্য সভাপতি করছেন। তার জন্য তিনি বেছে নিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়াকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন সঙ্ঘের তিন মন্ত্র মেনে চলতে।
নেশন ফার্স্ট, পার্টি সেকেন্ড, সেলফ লাস্ট
তিনি বলেন, সঙ্ঘ-শিক্ষার তিন মন্ত্র হল- প্রথমে রাষ্ট্র তারপরে দল এবং সবশেষে ব্যক্তি। ইংরেজিতে তিনি লিখেছেন নেশন ফার্স্ট, পার্টি সেকেন্ড, সেলফ লাস্ট। এই তিন মন্ত্র তিনি দলীয় কর্মী-নেতাদের উদ্দেশ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। এবং তা মেনে চলার আর্জি জানিয়েছেন সঙ্ঘের শিক্ষায় শিক্ষিত দিলীপ ঘোষ।
আধ্যাত্মিক কারণেও বিশ্বাস সঙ্ঘনীতিতে
এককালে সঙ্ঘের প্রচারক ছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি নিজে বিশ্বাস করেন সঙ্ঘের নীতি। সঙ্ঘের শিক্ষায় শিক্ষিত দিলীপ ঘোষ তাই বিধানসভা ভোটের আগে সেই নীতিকথাই দলের বিক্ষুব্ধদের শোনালেন। দিলীপ ঘনিষ্ঠদের কথায়, দিলীপ ঘোষ এই নীতি শুধু সংগঠনের দিক থেকে নয়, আধ্যাত্মিক কারণেও বিশ্বাস করেন।
তত্ত্বকথায় নিজের উদাহারণে বিদ্রোহ নিরসন
আরএসএসের শিক্ষা অনুযায়ী, সত্ত্ব গুণ রাষ্ট্র বা দেশকে ভালোবাসা, রজঃ গুণ হল সংগঠনের হয়ে লড়াই করা। সর্বস্ব সমর্পণ করা। আর সবথেকে নিকৃষ্ট হল তমঃ গুণ। অর্থাৎ নিজের কথা ভাবা। এখন বিজেপির নেতারা সেই ব্যক্তিস্বার্থের কথা চিন্তা করছেন। তাই এত দ্বন্দ্ব, এত ভেদাভেদ। তিনি এই তত্ত্বকথায় নিজের উদাহারণও তুলে ধরেন।
একুশে ধেয়ে আসতে পারে যে সব ঘূর্ণিঝড়, ১৬৯টি সাইক্লোনের তালিকায় কে করল নামকরণ
{quiz_541}