কুকুরের সঙ্গে তুলনা পুলিশকে, তপ্ত ইসলামপুরে উত্তেজক ভাষণ বিজেপি জেলা সভাপতির
রোষের আগুনে থমথমে ইসলামপুরে আরও উত্তাপ ছড়ালেন বিজেপি নেতা। বিজেপির জেলা সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তী পুলিশকে হুমকি দিলেন প্রকাশ্য সভায়।
রোষের আগুনে থমথমে ইসলামপুরে আরও উত্তাপ ছড়ালেন বিজেপি নেতা। বিজেপির জেলা সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তী পুলিশকে হুমকি দিলেন প্রকাশ্য সভায়। ইসলামপুরের দাঁড়িভিট গ্রামের মানুষকে উসকে দিলেন পুলিশের বিরুদ্ধে। এমনিতেই পুলিশের বিরুদ্ধে ফুঁসছে গোটা গ্রাম। তারপর সেই এলাকায় শান্তির বাতাবরণ তৈরি না করে বিজেপি নেতা দিলেন উত্তপ্ত জ্বালাময়ী ভাষণ।
বৃহস্পতিবার দাঁড়িভিট হাইস্কুলে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে ছাত্র আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় দুই ছাত্রের। অভিযোগ ওঠে, পুলিশের গুলিতেই নিহত হয় দুই ছাত্র। তারপর থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে রুষ্ট হয়ে রয়েছে গোটা গ্রাম। শনিবার সেই গ্রামে এসেই বিজেপির জেলা সভাপতি গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে নির্দেশ দিলেন পুলিশের সঙ্গে অসহযোগিতা করার।
বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, পাহারা দিতে হবে গ্রামে পুলিশ যে ঢুকতে না পারে। আর গ্রামে পুলিশ ঢুকলে যেন বেরোতে না পারে। গাছে বেঁধে রাখতে বললেন গ্রামবাসীদের। পুলিশের সঙ্গ সব ক্ষেত্রে অসহযোগিতা করতে হবে। কার্যত পুলিশ পেটানোর নিদান দিয়ে তিনি জানান, পুলিশ আহত হয়ে পড়ে থাকলেও কেউ তাঁকে তুলে নিয়ে যাবেন না হাসপাতালে। কুকুরকে তুলে নিয়ে যাবেন তো পুলিশকে নয়। এমনকী পুলিশের সন্তানদের সঙ্গেও একই ব্যবহারের কথা বলেন তিনি।
তাঁর কথায়, পুলিশ জল চাইলে, জল দেবেন না। কুকুরকে জল দেবেন। পুলিশের ছেলেমেয়েদের দুর্ঘটনায় পড়লে তাদেরও তুলে নিয়ে হাসপাতালে পাঠাবেন না, বরং মরা কুকুরকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। গরু-ছাগলকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। সেইসঙ্গে উত্তর দিনাজপুর এসপিকে তাঁর হুঁশিয়ারি, এই জেলায় এসে আগুন লাগিয়েছেন, এই আগুন না নেভালে ২০ দিনও তাঁকে জেলায় থাকতে দেব না।
তিনি বলেন, ঘটনার পরের দিন বিজেপি বনধ ডেকেছিল। সেদিন আমার অফিসে এসে পুলিশ আমাকে হুমকি দিয়ে গিয়েছিল, মেরে দেব, লাশ ফেলে দেব। পুলিশ তুমিও আত্মরক্ষার জন্য প্রস্তুত থেকো। মনো রেখো, পুলিশ যে ভাষায় কথা বলছে, গ্রামবাসীরাও একই ভাষায় তার উত্তর দেবে। নেতৃত্ব দেবে বিজেপি, স্পষ্ট কথা শঙ্কর চক্রবর্তীর।
এর আগে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে মুকুল রায়, কিংবা অন্যান্য বিজেপি নেতারা উত্তেজক ভাষণ দিয়ে কু-কথা রাজনীতি করেছেন। কু-কথার রাজনীতি করেছেন অনুব্রত মণ্ডল থেকে শুরু করে তৃণমূলের অনেক নেতাও। তার আগে সিপিএমের নেতারাও। পুলিশের মাথায় বোম মারব, অনাথ করে দেব, শ্মশানে পাঠিয়ে দেব, ছ-ইঞ্চি মাটিতে পুতে দেব, ইত্যাদি নানা কু-কথায় উত্তপ্ত হয়েছিল রাজ্য। এবার পুলিশ বয়কট ও অসহযোগিতার নিদান দিয়ে কু-কথার বাণ ছুঁড়লেন বিজেপির জেলা সভাপত শঙ্কর চক্রবর্তী।