সিঙ্গুর থেকে ডানলপ জট, হুগলি নিয়ে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে একাধিক ইস্যুতে অকপট লকেট
সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন ঘিরে গোটা দেশে ভোট -উৎসবের পারদ ক্রমেই চড়ছে। প্রথম দফা ভোট গ্রহণের সাথে সাথেই ভোটের ঢাকে কার্যত কাঠি পড়তে চলেছে।
সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন ঘিরে গোটা দেশে ভোট -উৎসবের পারদ ক্রমেই চড়ছে। প্রথম দফা ভোট গ্রহণের সাথে সাথেই ভোটের ঢাকে কার্যত কাঠি পড়তে চলেছে। এই ভোট উত্তাপের মধ্যেই মিশে রয়েছে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্খা,চাওয়া-পাওয়ার খতিয়ান। আর হুগলি লোকসভা আসনের সাধারণ মানুষের চাওয়া পাওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে 'ওয়ানইন্ডিয়া বাংলা' মুখোমুখি হয়েছিল এলাকার বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। হুগলির রাজনৈতিক ইস্যু ঘিরে একাধিক বিষয়ে খোলামেলা আলোচনায় পাওয়া গেল রাজ্য বিজেপির এই দাপুটে নেত্রীকে। আজ রইল এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব।
হুগলি কেন্দ্রে তো আপনার ভোটের প্রচার জোরদার.. সেখান থেকে জেতার বিষয়ে কতটা আশাবাদী আপনি? ভোটের ব্যবধানের নিরিখে কী আঁচ পাচ্ছেন?
দেখুন ,ব্যবধানটা তো সেভাবে বলা যায় না। তবে আমি নিশ্চিত যে আমি জিতব। এখানে মানুষের আশা অনেক.. মানুষ মোদীজিকে ভোট দেবেন বলে ইতিমধ্যেই মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছেন। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
হুগলিতে তো আপনি থাকছেন, প্রচার চালাচ্ছেন, কী মনে হচ্ছে, এখানের কোন বিষয়গুলিকে 'পরিবর্তন' করা খুবই জরুরি?
সবকিছু! ..প্রথম কথা সন্ত্রাস। হুগলি গোটাটাই এখন মাফিয়াদের 'ডেন'! বিভিন্ন রকমের দুর্নীতি হুগলি এলকায় চলছে। এখানের সন্ত্রাসকে বন্ধ করাই মূল লক্ষ্য আমার। মানুষ যদি একটু শান্তিতে থাকতে পারে ,..তাহলেই তো কাজকর্মের কথা ভাবতে পারবে ....তাই না?
সিঙ্গুর থেকে জুট মিল ইস্যু , হুগলির মানুষ একাধিক রাজনৈতিক পর্ব দেখেছে। এখানের শিল্প নিয়ে কী বলবেন?
সিঙ্গুর এখানের অনেকদিনের সমস্যা। সিঙ্গুরের কৃষকদের দিয়ে আন্দোলন করিয়ে নিজে তো মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গিয়েছেন। তারপর আর উনি কিছুই করেননি। কৃষকদের ন্য়ায্য জায়গা, ন্যায্য দাম ফিরিয়ে দেওয়াতো রয়েইছে আমার পরিকল্পনায়.. আর এখানের মানুষ শুধু কৃষি চাননা ,তাঁরা শিল্পও চান। আমি চাইব, শিল্পভিত্তিক কৃষি হোক, বা কৃষিভিত্তিক শিল্প হোক। জুট মিল যা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, সেখানে শ্রমিকরা যাঁরা কর্মহীন হয় পড়েছেন তাঁদের নিয়ে উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। জুটমিল চালু করাটা দরকার। .. এই পরিবারগুলো যাবে কোথায়? যাঁরা জুটমিলে কাজও করছেন তাঁদের মজুরি বাড়ানো হয়নি সেভাবে। কোথাও কোথাও ২-৩ টাকা করে মজুরি বাড়ানো হয়েছে। মোদীজির নীতি অনুযায়ী এঁদের পারিশ্রমিক ন্যূনতম ১৮ হাজার টাকা করার দিকটাও দেখতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসবার সময়ও এঁরা যে অবস্থায় ছিলেন , এখনও সেই অবস্থায় রয়েছেন। এটাতো হতে পারে না..!
শিল্পের প্রসঙ্গই যখন উঠল...তখন স্বাভাবিকভাবেই ডানলাপ কারখানার প্রসঙ্গ উঠে আসে। হুগলিতে ডানলপ কারখানা নিয়ে এলাকার মানুষ শুধু প্রতিশ্রুতি পেয়ে এসেছেন। আপনি কী বলবেন?
ডানলপ নিয়ে এতদিন 'ধাপ্পাবাজি' করা হয়েছে! মানুষকে ভুল বোঝানো হয়েছে। ডানলপের সামনে দিয়ে গেলে... কী যে করুণ অবস্থা এখন কারখানাটার..। সেসব আবার নতুনভাবে ফিরিয়ে আনতে হবে। সবকিছুই নতুনভাবে করা যায়.. এত সিন্ডিকেট আর তোলাবাজি চলছে .. যার জন্য কোনও সমস্যার কোনও মীমাংসা হচ্ছে না।
ডানলপকে পুনরোজ্জীবন দেওয়ার বিষয়ে বিজেপি সরকার কি নতুন করে ভাববে?
বলুনতো,.. ডানলপ ঘিরে যেসমস্ত জটিলতা বা বিভ্রান্তি রয়েছে তা এতদিন ধরে কেন ঠিক করা হয়নি? সেগুলো আগে দেখতে হবে। এবং নিশ্চিতভাবে আমরা এই ব্যাপারে উদ্যোগ নেব।
বিজেপি কেন্দ্রে আর হুগলিতে লকেট চট্টোপাধ্যায় জয়ী হলে, হুগলির মানুষ কোন কোন দিকের উন্নয়ন আশা করতে পারে?
মানুষ কাজ এক্সপেক্ট করতে পারেন। আমি মানুষের কাছে আবেদন করব, এখন ভোটটা যেন যায় কাজের নিরিখেই। যে কাজ করবেন তাঁর কাছেই যেন ভোটটা যায়। আমি হুগলির মানুষের ওপরেই এটা ছেড়ে দিয়েছি,যে যিনি তাঁদের হয়ে লড়তে পারবেন,তাঁকেই যেন ওঁরা বেছে নেন।
বীরভূম ছেড়ে আপনি হুগলি কেন্দ্র থেকে লড়ছেন। এই নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের কটাক্ষ আপনি ভয় পেয়েছেন। কী বলবেন?
এরকম কোনওই ব্যাপার নয়। বীরভূমে আমি কাজ করেছি,. মহিলা মোর্চার প্রেসিডেন্ট হিসাবে। সারা বাংলায় আমি কাজ করেছি, আগামী দিনে বাংলার মাটিতে রাজানীতি করব। ওঁরা নিজেদের 'মহান ' করে তোলার জন্য এরকম ভাবতে পারেন,তবে আমার কাছে প্রতিটি লোকসভাই একটা চ্যালেঞ্জ। এটা ভাবা ভুল যে আমি বীরভূম থেকে ভয়ে চলে এসেছি।
[আরও পড়ুন:গ্লাভস বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলে 'ওয়ানইন্ডিয়া'কে কী জানালেন মিমি?]
ছবি সৌজন্য: লকেট চট্টোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজ