নির্বাচনী প্রচারে গোল্ড হাবের পক্ষে সওয়াল ভারতীর, বিজেপির কপালে ‘চিন্তা’র ভাঁজ
সোনা আত্মসাতের মামলায় অভিযুক্ত প্রাক্তন পুলিশ সুপার তথা ঘাটাল কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ। সেই তিনিই নির্বাচনী প্রচারে এসে দাসপুর ও ঘাটালে গোল্ড হাব করার পক্ষে সওয়াল করলেন।
সোনা আত্মসাতের মামলায় অভিযুক্ত প্রাক্তন পুলিশ সুপার তথা ঘাটাল কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ। সেই তিনিই নির্বাচনী প্রচারে এসে দাসপুর ও ঘাটালে গোল্ড হাব করার পক্ষে সওয়াল করলেন। প্রতিশ্রুতি দিলেন, তিনি এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হলে দাসপুর-ঘাটালে স্বর্ণশিল্পের বিস্তারে তিনি গোল্ড হাব গড়ে তোলার ব্যাপারে তদ্বির করবেন।
দাসপুর এবং ঘাটালের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর করে এই স্বর্ণ শিল্পের ওপর। ঘাটাল লোকসভা এলাকার অধীন এই দুই বিধানসভার দু-লক্ষের বেশি মানুষ এই শিল্পের সাথে জড়িত। তাদের অনেকেই মুম্বই, গুজরাট বা অন্য এলাকাতে সোনার দোকানে কাজ করেন। নোটবন্দি ও জিএসটি-র পরে তাদের অনেকেই কাজ হারিয়ে এলাকায় ফিরে এসেছেন।
বিজেপির প্রার্থী গোল্ডেন হাব চেয়ে সেই নোটবন্দি ও জিএসটির খারাপ প্রভাবকেই সামনে এনে ফেললেন রাজনৈতিক মহলের একাংশের অভিমত। ঘাটাল ও দাসপুরবাসীও চান এলাকাতে সোনার কারবারিদের জন্য কিছু করুক রাজ্য সরকার। ভারতী ঘোষও তাই চান, কিন্তু সেই দাবি তুলতে গিয়ে নোটবন্দি-জিএসটির প্রভাবে কাজ হারানোর বিষয়টি সামনে চলে আসছে। তা বিজেপির পক্ষে বুমেরাং হতে পারে বলে মনে করছে একাংশ।
বর্ধমানে যেমন রাজ্য সরকার মিষ্টি হাব গড়ে তুলেছে, নানা এলাকাতে ক্ষুদ্র শিল্পের উন্নতিতে ক্লাস্টার গড়ে তোলা হয়েছে তেমনই আমরা চাই যে আমাদের এলাকাতেও সোনার কারবার ও ব্যবসা করার জন্য কোনও হাব গড়ে উঠুক বা কোনও পদক্ষেপ নিক রাজ্য সরকার। এমনটাই দাবি, অনিরুদ্ধ বেরা নামে এলাকার এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর।
নির্বাচনী প্রচারে এসে ভারতী ঘোষ বলেন, ঘাটাল ও দাসপুর এলাকাতে গোল্ড হাব গড়ে তোলা দরকার। এখানের হাজার হাজার মানুষ সোনার কারবারের সঙ্গে জড়িত। অন্য অনেক জায়গায় যদি এই ধরনের হাব হতে পারে তাহলে এখানে হবে না কেন? এটা হলে অনেকের কর্মসংস্থান হবে। সেইসঙ্গে সোনার করাবারিদের বিশ্বের বাজার ধরার ব্যবস্থা করাও দরকার বলে জানান ভারতী।
প্রসঙ্গত ঘাটাল এলাকার দাসপুর থানার একটি সোনা মামলায় অভিযুক্ত ভারতী ঘোষ। পুলিশ সুপার থাকাকালীন নিজের প্রভাব কাটিয়ে তিনি সোনার তোলাবাজি করেন এবং বেশি টাকা দেবেন বলে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সোনা নিয়ে সেই টাকা দেননি বলে অভিযোগ। সিআইডি সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে চার্জশিট জমা দিয়েছে। তাতে নাম আছে ভারতী ঘোষের।
[আরও পড়ুন:মামলায় জেরবার সৌমিত্র ঢুকতে পারবেন না বিষ্ণুপুরে, শিকেয় ওঠার আশঙ্কায় বিজেপির প্রচার ]
যদিও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এখনই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবে না পুলিশ। যদিও ভারতী ঘোষের দাবি তাঁর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ভারতী ঘোষ গোল্ড হাব করার পক্ষে সওয়াল করায় বাসিন্দারা বলছেন, এটা যদি বাস্তবে হয় তাহলে তারা অনেকটাই উপকৃত হবেন।
[আরও পড়ুন: ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় কার দখলে কটি আসন, আভাস জনমত সমীক্ষায়]
ভারতী ঘোষের এই কথাকে কটাক্ষ করছে তৃণমূল কংগ্রেস। জেলার সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, যিনি নিজেই সোনা মামলায় জড়িত তার মুখে এমন কথা মানায় না। আর আমাদের সরকার ইতিমধ্যেই এই এলাকার সোনার ব্যবসায়ী ও কারবারিদের সাহায্যের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।
[আরও পড়ুন: স্পেশাল অবজার্ভারের আরএসএস-যোগ, লোকসভা নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন মমতার]