For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

আমরা আমজনতা, কতটুকু আর বুঝি!

আমরা আমজনতা, কতটুকু আর বুঝি!

  • By গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
  • |
Google Oneindia Bengali News

সকলের নজর কোন কেন্দ্রে? এ প্রশ্ন বচ্চন সাহেব করলে রাজনীতিতে গোঁফ না ওঠা কিশোরও কম্পিউটর লক করার আগেই উত্তর দিয়ে দেবে। নন্দীগ্রাম।

আমরা আমজনতা, কতটুকু আর বুঝি!

কিন্তু যদি দ্বিতীয় নজর কাড়া কেন্দ্রটির কথা জিজ্ঞাসা করা হয় তাহলে মাথা চুলকে, ভুরু কুঁচকে একজন যা উত্তর দেবেন, অপরজন তাতে সায় দেবেন না। 'ফোন আ ফ্রেন্ড' করেও লাভ হবে না। অথচ এমনটি হওয়ার কথা ছিল না।

এ রাজ্যে নির্বাচনের বাঁশিতে ফুঁ পড়ার আগে থেকেই যে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দল ময়দানে খেলতে নেমেছিল তাদের ক্যাপ্টেনদের প্রথমজন যদি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাহলে দ্বিতীয়জন অবশ্যই ছিলেন দিলীপ ঘোষ। তবে দল যেহেতু ভারতীয় জনতা পার্টি অতএব ক্যাপ্টেনের নাম বলতে নেই। বিজেপি দলে মন কি বাত কেবল রেডিওতে জানান দিতে পারেন খোদ প্রধানসেবক, আমসিপাহীদের মনের কথাটি গোপনেই রাখতে হয়। অতএব দিলীপ ঘোষ মন কি বাত মনের মধ্যে রেখে দেন এবং তৃণমূলকে শাপশাপান্ত করেন।

যখন গ্যালারি থেকে নাগাড়ে জানতে চাওয়া হয় বিজেপি দলের ক্যাপ্টেন কে তখন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কথা মতো মুখে কুলুপ এঁটে থাকলেও মুচকি হাসেন দিলীপ ঘোষ। হাসার কারণ অবশ্যই থাকে। যদি বিজেপি দলের ইতিহাস আগাপাশতলা কেউ পড়ে দেখেন তাহলে বুঝবেন এরাজ্য বিজেপির হাতে গেলে দিলীপের হাতেই রাজদণ্ড যাওয়ার কথা। তাঁর ঠিকুজি কুলুজিতে একবার চোখ বোলালেই সমীকরণটা এক লহমায় পরিষ্কার হয়ে যাবে। কৈশোর থেকে তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের আগমার্কা সদস্য। তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে পাঠিয়েছে সেই আরএসএস। মোহন ভাগবতের সঙ্গে তাঁর যথেষ্ট দহরম মহরম।

আরএসএসের শিলমোহর ছাড়া বিজেপি কোনও জবরদস্ত প্রতিষ্ঠানের মাথায় কাউকে বসাবার হিম্মত এখনও দেখাতে পারেনি। এ রাজ্যেও তেমনটিই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হল না। দিলীপ ঘোষের নাম উঠেছিল খড়্গপুর বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য। সেটিই ছিল দিলীপবাবুর ভাতঘর। সেখান থেকে তিনি জিতেছিলেন।পরে মেদিনীপুর থেকে সাংসদ হয়ে সুবে বাংলার দায়িত্ব নিয়ে রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চষে বেড়াতে হয়েছে ঠিকই কিন্তু খড়্গপুরে তাঁর অনুগামীরা ধরেই নিয়েছিলেন ফের তিনি সেখানে ফিরবেন। যদিও তিনি লোকসভায় চলে যাওয়ার পর সেখানে বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হেরে গিয়েছেন তবু তাঁর অনুগামীরা ধরেই নিয়েছিলেন নির্বাচনের আগে ফের দিলীপ সেখানে হাজির হবেন। কিন্তু অনুগামীদের হতাশ করে দিলীপ দা ফিরলেন না খড়্গপুরে।

প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে যেদিন বাংলা মায়ের দামাল ছেলে মিঠুন চক্রবর্তীকে উড়িয়ে নিয়ে আসা হল সেদিনই কেমন হিসাবে গরমিল লেগেছিল। যাই হোক, এখনও পর্যন্ত দিলীপ ঘোষ মাঠে সরাসরি খেলবার জন্য ডাক পাননি। অথচ ডাক পেয়েছেন উঠতি খেলোয়াড় শুভেন্দু অধিকারী। একে মা মনসা তাতে মিঠুন দা! বিজেপি দল না হয় বাইরে মুখ খোলে না কিন্তু রাস্তায় ঘাটে পাগলে কী না বলে। তারা বলতে শুরু করল, হয় মিঠুন দা নয় শুভেন্দু হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ। দিলীপ দার মুখে হাসি কি তারপর থেকেই একটু ম্লান? কি জানি হবেও বা। যাই হোক দলে এসেই যখন শুভেন্দু যখন হুঙ্কার দিয়েছেন তাঁর এককালের কালীঘাটের দিদিকে পঞ্চাশ হাজার ভোটে হারিয়ে দেবেন সঙ্গে সঙ্গে দিলীপ আর দেরি করেননি। তিনি এককথায় শুভেন্দুর কথায় সায় দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের শিলমোহর পড়ে যেতেই শুভেন্দু দাঁড়িয়ে পড়লেন মন্দীগ্রামে। কিন্তু তখনই দু'একজন বলতে শুরু করল, নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর দাঁড়িয়ে পড়াটা কেমন যেন একটা গোলমেলে ব্যাপার হয়ে গেল। এত বড় ঝুঁকি নেওয়াটা মোটেও ভাল হল না। পাগলের কথাতে কোনও যুক্তি থাকে নাকি? কি জানি থাকতেও পারে। সমীকরণটা একবার দেখে নেওয়া যাক।

অঙ্ক কষে দেখতে পাচ্ছি নন্দীগ্রামে ৭০ হাজারের বেশি ভোট মুসলিম সম্প্রদায়ের, হিন্দু ভোট ১ লক্ষ ৮০ হাজারের অল্প ওপরে। শুভেন্দু প্রথম থেকে এবারের নির্বাচনকে ৭০ বনাম ৩০ এর ভোট বলে প্রচার করেছেন। অর্থাৎ তাঁর হিসেবে এ লড়াই হিন্দু বনাম মুসলিমের লড়াই। তার মানে দাঁড়ায় তিনি ধরেই নিয়েছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোট বাদ দিয়েই তাঁরা অঙ্ক কষবেন। বেশ তাই না হয় হল, কিন্তু তার ফলে নন্দীগ্রামে তাঁকে ব্যকফুটে খেলা শুরু করতে হল নাকি? কারণ তিনি ধরেই নিলেন ওই মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোট তিনি পাবেন না। অন্যদিকে মমতা প্রথম দিন থেকে প্রমাণ দিতে শুরু করেছেন তিনি অতিবড় হিন্দু পরিবারের মেয়ে। তিনি যে পুজোআচ্চায় কম যান না তা সকলেই জানেন তবু বিরোধীরা তাঁকে যেভাবে বরাবর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মসিহা বলে প্রমাণের চেষ্টা করেছে তার উত্তর দিতে দিদিকে মঞ্চে দাঁড়িয়ে চণ্ডীপাঠ পর্যন্ত করতে হয়েছে। বিজেপির কট্টর হিন্দু মন্ত্রী গিরিরাজ সিং অবশ্য তারপরেও মমতাকে ভেজাল হিন্দু বলে দাবি করেছেন। যাইহোক গিরিরাজ তো কত কিছুই বলেন। কিন্তু এটা বোঝা যাচ্ছে মমতাকে অহিন্দু প্রমাণ না করতে পারলে বিজেপির পক্ষে এইনন্দীগ্রামের মাঠে খেলা অতীব কঠিন হয়ে পড়বে। পাটিগণিত কষে দেখছি যদি সত্তর শতাংশ হিন্দু ভোটও শুভেন্দুর কপালে জোটে তাহলেও মমতার জয় আটকানো যাচ্ছে না কারণ সংখ্যালঘু ভোটের সিংহভাগ দিদির কপালে লেখা। এবং তার সঙ্গে নেই নেই করেও হিন্দু ভোটের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ যদি মমতার বাক্সে যায় তাহলেই তিনি ভিকট্রি বক্সে উঠে পড়বেন। এই সঙ্গে দিদির ভাগ্যে উপরি জুটেছে একনিষ্ঠ সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। বামেরা উজ্জীবিত হওয়ায় তাদের ভোটও গত লোকসভা নির্বাচনের মতো বিজেপিতে যাওয়ার সম্ভাবনা কমেছে। কাজেই আহত দিদি অনেক বেশি ফর্মে ফিরতে পারেন এবারের নির্বাচনে। সব মিলিয়ে শুভেন্দুর পক্ষে লড়াই অনেক কঠিন হয়ে গেল।

হ্যাঁ, এবারে একটু দিলীপদার দিকে ঘাড় ফেরাই। তাঁর মুখে কি পুরনো হাসি ফিরছে? কি জানি, আমরা আমজনতা, আমরা কি অত কিছু বুঝি। তবে এটা জানি মাঠে একাধিক সিংহ থাকা ভাল নয়। রইল বাকি মিঠুন দা। তা থাকুন, পরে দেখা যাবে। আপাতত দিলীপ দা চলচ্চিত্রে ফ্লপ হিরো হিরণ দাকে নিয়ে নিজের মাঠে ঘুরছেন, মুখে তাঁর হাসিটি দেখছি ফিরেছে। কেন? কি জানি, আমরা আমজনতা আর কতটুকু বুঝি।

অনলাইন ট্রেডিংয়ের দুনিয়ায় নয়া দিগন্ত খুলে দিচ্ছে এই সংস্থা! হোলিতে রয়েছে একাধিক দুর্দান্ত অফারঅনলাইন ট্রেডিংয়ের দুনিয়ায় নয়া দিগন্ত খুলে দিচ্ছে এই সংস্থা! হোলিতে রয়েছে একাধিক দুর্দান্ত অফার

English summary
BJP and TMC are making people confused amid West Bengal assembly election 2021
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X