বিজেপিতে আড়াআড়ি ভাঙন-জল্পনা ত্রিপুরায়, সুদীপ-চালে কাঁপছে বিপ্লব দেবের কুর্সি
এখনও দু-বছর হয়নি ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমকে হারিয়ে ক্ষমতায় এসেছি বিজেপি। এরই মধ্যে বিজেপি বড়সড় ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
এখনও দু-বছর হয়নি ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমকে হারিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। এরই মধ্যে বিজেপি বড়সড় ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ত্রিপুরায়। লোকসভা ভোটের আগেও ত্রিপুরা বিজেপিতে ভাঙন ধরেছিল। লোকসভা পর ফের ত্রিপুরায় বিজেপি আড়াআড়ি ভাঙনের মুখে। ত্রিপুরা বিজেপির দুই মুখ বিপ্লব দেব ও সুদীপ রায়বর্মনের বিরোধেই ভাঙন-জল্পনা তুঙ্গে।
ভাঙন জল্পনা, বিরোধ তুঙ্গে
বিজেপির ভাঙন জল্পনা চলছিল সেই লোকসভার আগে থেকেই। এবার প্রকাশ্যে চলে এল বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব। বিজেপির দুই প্রধান মুখ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব ও রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন বিরোধ তুঙ্গে উঠল। সুদীপ রায়বর্মন নিজেদের সরকারের বিরুদ্ধেই মহামিছিল করলেন ত্রিপুরায়।
বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মহামিছিল বিজেপির!
নারী নির্যাতন ইস্যুতে রাজধানী আগরতলায় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মহামিছিল করেন বিজেপি নেতা সুদীপ রায়বর্মন। নাম না করে সরকার ও প্রসাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। এই ঘটনার পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের শিবিরও। বিজেপির মহিলা মোর্টার তরফে পাল্টা মিছিলও করা হয়।
বিপ্লব দেব ও সুদীপ রায়বর্মনের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব
বিপ্লব দেব ও সুদীপ রায়বর্মনের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। সুদীপ রায়বর্মন একাধিকবার বিপ্লব দগেব সরকারের সমালোচনা করেন। বিজেপি সরকারের বিবিন্ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তিনি গর্জে ওঠেন। এর জন্য তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্তও করা হয়। তবু থেমে যাননি সুদীপ। তাঁর প্রতিবাদের ঝাঁঝ আরও বাড়িয়ে দেন।
সুদীপ নিজের ক্ষমতা দেখিয়ে দেন বিপ্লবকে
এবার শুধু মৌখিক প্রতিবাদ না করে রাস্তায় নেমে অনুগামীদের নিয়ে বিশাল মিছিল করেন সুদীপ রায়বর্মন। তিনি নিজের ক্ষমতা দেখিয়ে দেন বিপ্লব দেবকে। এই মিছিলে সুদীপ ঘনিষ্ঠ অনেক বিজেপি বিধায়ককেও দেখা যায়। ছিলেন অনেক বিজেপি নেতাও। প্রয়োজন হলে তিনি যে সরকার ফেলে দিতেও পারেন এমন বার্তাও দেন এই মিছিল থেকে।
সদলবলে বিজেপি ছাড়তে পারেন সুদীপ
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের নির্দেশেও পাল্টা মিছিল হয় আগরতলায়। মিছিল করে বিজেপির মহিলা মোর্চা। সেখান থেকে কটাক্ষ করা হয় সুদীপ রায়বর্মনকে। এরপরই বিজেপির অন্দরে উভয় শিবিরের ক্ষোভ আরও বেড়েছে। যে কোনও মুহূর্তে সদলবলে বিজেপি ছাড়তে পারেন সুদীপ রায়বর্মন।
যোগাযোগ শুরু করেছেন কংগ্রেসের সঙ্গে
বিশেষ সূত্রে খবর তিনি নাকি যোগাযোগ শুরু করেছেন কংগ্রেসের সঙ্গে। বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরতে পারেন সুদীপ রায়বর্মন। তিনি কংগ্রেসেই ছিলেন। কংগ্রেসের বিধায়ক হিসেবেই মানিক সরকারের শাসনামলে ত্রিপুরা বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা ছিলেন তিনি। কংগ্রেস ছেড়ে প্রথমে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন, তারপর তৃণমূল ছেড়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন।
সুদীপ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই শক্তিবৃদ্ধি
তাঁর নেতৃত্বে পুরো তৃণমূল টিম বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই গেরুয়া শিবির শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এবং রাজনৈতিক মহলকে চমকে দিয়ে ত্রিপুরায় মানিক সরকারের সিপিএমকে পরাজিত করে বিজেপি। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হল বিপ্লব দেব। সুদীপ রায়বর্মনের জোটে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ। কিন্তু কিছুদিন পরই উভয় নেতার দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছয়।
শূন্য থেকে ক্ষমতায় পৌঁছেছে বিজেপি
সুদীপের দাবি, তাঁর হাত ধরেই শূন্য থেকে ক্ষমতায় পৌঁছেছে বিজেপি। এখন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হয়ে অনৈতিকভাবে রাজ্য চালাচ্ছেন বিপ্লব দেব। তার প্রতিবাদ সেখানেই। তিনি তাই আগেও যেমন প্রতিবাদী ছিলেন, এখনও নিজেদের সরকারের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ করতে পিছপা নন। তাই করেছেন। তিনি মানুষের কথা বলেছেন। ভবিষ্যতেও বলবেন।