বিজেপি-সঙ্গ ত্যাগ করতে চলেছে আরও এক 'শরিক', ২০১৯-এর আগে মাথায় হাত মোদীর
বিজেপি বিরোধী দলগুলি যখন জোট গড়তে এককাট্টা, তখন একে একে শাসক শিবিরে ভাঙন-রেখায় নরেন্দ্র মোদী শিবির স্বভাবতই চিন্তিত।
আর মাত্র এক বছর। তারপরেই দিল্লির কুর্সি দখলের লড়াই শুরু হবে। এখন থেকেই অবশ্য ত্রাহি ত্রাহি রব ছুটেছে। বদলে যাচ্ছে রাজনৈতিক সমীকরণ। কে কার সঙ্গ নেবে, সেই অঙ্ক কষা শুরু করে দিয়েছে বিভিন্ন দল। বিজেপি বিরোধী দলগুলি যখন জোট গড়তে এককাট্টা, তখন একে একে শাসক শিবিরে ভাঙন-রেখায় নরেন্দ্র মোদী শিবির স্বভাবতই চিন্তিত।
ইতিমধ্যেই শিবসেনা এনডিএ ছেড়েছে। টিডিপিও বিজেপিকে চাপে রেখেছে। এবার বিজেপি সঙ্গ ত্যাগের ব্যাপারে স্পষ্ট করল পাহাড়ের দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। কলকাতার বসে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিনয় তামাং ঘোষণা করলেন, 'বিজেপির সঙ্গে জোট অতীত। ভবিষ্যতে বিজেপির সঙ্গে জোটের কোনও সম্ভাবনাই নেই।'
বিনয় তামাং স্পষ্টতই জানিয়ে দেন, 'পাহাড়ে যেমন বিমল গুরুং অতীত। আর মোর্চার সঙ্গে বিজেপির জোটও অতীত। আর ভবিষ্যতে তা হবেও না।' পাহাড়ের মোর্চা সমর্থিত বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার চ্যালেঞ্জের জবাব দিয়ে মোর্চা প্রধান তথা জিটিও চেয়ারম্যান বিনয় তামাং বলেন, 'ক্ষমতা থাকলে পাহাড়ে জিতে দেখাক বিজেপি। এবার পাহাড়ে বিজেপির জামানত জব্দ হবে।'
এদিন তিনি পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে জানান, 'বিমল গুরুংয়ের মোর্চার সঙ্গে জোট হয়েছিল বিজেপির। ২০১৪-র সঙ্গে ২০১৮-র বিস্তর ফারাক। সেদিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আর আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমূল বদলে গিয়েছে। পাহাড়ের মানুষ অন্ধকার ভেদ করে ফের আলোর রেখা দেখতে পেয়েছে। আর তারা অন্ধকারের দিকে ছুটবে না।'
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের দায়িত্ব নেওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ের উন্নয়নে জিটিএ গঠন করেছিলেন। সেই জিটিএর দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন তৎকালীন মোর্চা প্রধান বিমল গুরুংয়ের হাতে। কিন্তু তারপর ২০১৪-য় মোর্চা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে লোকসভা ভোটে লড়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে মোর্চা সু্প্রিমো বিমল গুরুংয়ের। জিটিএ-ও গুরুত্ব হারাতে থাকে।
শেষমেশ পাহাড় রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবেশ মোর্চা ও তৃণমূলের সম্পর্কে ফাটল ধরিয়ে দেয়। পাহাড় পুরভোটে মিরিক-জয় আর অন্য দুই পুরসভাতেও খাতা খোলে তৃণমূল। তাতেই ভয় পেয়ে যান গুরুং। এবং মিরিক জয়ের উৎসবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামিল হওয়ার পর থেকেই আগুন জ্বলতে শুরু করে। পাহাড় তিনমাস স্তব্ধ হয়ে যায়।
এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ে গুরুং-রাজ খর্ব করে উদয় হয় বিনয় তামাংয়ের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর হাতে তুলে দেন পাহাড় শাসনের ব্যাটন। মোর্চার সর্বেসর্বা হয়ে বিনয় তামাং যে তৃণমূলের সঙ্গেই চলবেন ভবিষ্যতে, তা এদিন স্পষ্ট করে দিলেন নিজেই। পাহাড়ের সাংসদকে বার্তা দিয়ে মোর্চার ভবিষ্যৎ অবস্থানও জানিয়ে দিলেন তামাং।