পাহাড়ে বনধের হুমকি গুরুংয়ের, পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীরও
কালিম্পং, ২৩ সেপ্টেম্বর : পুজোর আগে আবার অশান্তির আঁচ পাহাড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফর চলাকালীনই বনধের হঁশিয়ারি দিলেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুং। মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তাঁর প্রচ্ছন্ন হুমকি, '৪০০ কোটি টাকার হিসেব চাই। হিসেব না দিলে পাহাড় অচল করে দেওয়া হবে। পাহাড় জুড়ে চলবে অনির্দিষ্টকালীন বনধ। আর এ জন্য সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন মোর্চা সভাপতি।
২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হিসেব না দিলে পরদিন থেকেই বনধ শুরু করবে মোর্চা। মোর্চা নেতার এই হুঁশিয়ারির পরই পাল্টা জবাব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কালিম্পংয়ে তামাং বোর্ডের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা হুঁশিয়ারি, বনধের রাজনীতি বরদাস্ত নয়। পাহাড়কে রক্ষা করতে হবে যে কোনও মূল্যে।'
বৃহস্পতিবার লেপচা পরিষদের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, পাহাড়ের উন্নয়নে ইতিমধ্যেই ৪০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আর এই পরিসংখ্যানেই প্রবল আপত্তি বিমল গুরুংয়ের। তাঁর দাবি, মুখমন্ত্রী সঠিক পরিসংখ্যন দিচ্ছেন না। তিনি যে পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য ৪০০ কোটি টাকা ইতিমধ্যে দিয়েছেন, তার হিসেব দিন। আর এই চারশো কোটির হিসেব ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে না দিলে পাহাড় অচল করার ডাক দেবেন তিনি।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফরের আগের দিন থেকেই পাহাড়ে বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ অভিযানে সামিল হচ্ছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এমনকী মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কুশপুত্তলিকাও দাহ করেছে মোর্চা নেতা-কর্মীরা। এবার যুদ্ধ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া পরিসংখ্যানের সত্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন গুরুং। মোর্চা সভাপতির এই হুমকি ভালোভাবে নেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
মুখ্যমন্ত্রী চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পাহাড়ে বনধের রাজনীতি কোনওভাবেই তিনি বরদাস্ত করবেন না। মোর্চার নাম না করেই তিনি বলেছেন, তাঁর সরকার পাহাড়ে উন্নয়ন চায়, কেউ কেউ তাতে বাধা দিচ্ছে। কিন্তু উন্নয়নের কাজে বাধা তিনি কোনওভাবেই বরদাস্ত করবেন না। গুরুংকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, 'হাম ডরতে নেহি, কিসিকো ডরাতে নেহি।'
তিনি আরও বলেন, 'কাজ কর, সরকার টাকা দেবে। কাজ করার নাম নেই, শুধু বনধ করবে। তা চলতে দেওয়া যাবে না।' তাঁর বার্তা, 'পাহাড়ে উন্নতি চান তো?, তাহলে রাজনীতির লড়াই সরিয়ে উন্নয়নে সামিল হন। কারণ পাহাড় হাসলে, আমিও হাসব, আপনারাও হাসবেন।'