বিজেপিকে ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন বিমল গুরুংয়ের! কতগুলি আসনে ফ্যাক্টর জয়-পরাজয়ে
আর বিজেপিকে নয়, এবার তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করবেন পাহাড়ের নেতা বিমল গুরুং। খুল্লামখুল্লা তা জানিয়ে দিয়েছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার অবিসংবাদী নেতা বিমল গুরুং। এখন প্রশ্ন ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের তাঁর প্রভাব কতটা পড়বে। কতগুলি আসনে তাঁর প্রভাব রয়েছে? তৃণমূল কি আদৌ সেই ফায়দা তুলতে পারবে?

পাহাড়ের সমীকরণে বদল, মমতার মাস্টারস্ট্রোক
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক মাস্টারস্ট্রোকে পাহাড়ের সমীকরণ বদলে গিয়েছে। ২০২-এর আগে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছে পাহাড়ের রাজনীতি। বিমল গুরুংয়ের এক বার্তায় মুকুল রায়রা পাহাড় থেকে এক ঝটকায় নিচে পড়ছে। পাহাড় রাজনীতির খেলা ঘুরিয়ে দিয়ে্ছেন মমতা। নেপথ্যে নিশ্চিতভাবেই রয়েছে প্রশান্ত কিশোরের মস্তিষ্ক।

অঙ্ক কষা শুরু, গুরুংয়ের সমর্থনে কত আসনে ফায়দা
এখন অঙ্ক কষা শুরু হয়েছে এই নিয়ে যে, বিমল গুরুংয়ের প্রভাব কতগুলি বিধানসভা আসনে পড়তে পারে ২০২১-এ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গুরুং ফ্যাক্টর কাজ করবে পাহাড় ছাড়িয়ে সমতলেও। ২০২১-এর ভোটে যদি বিমল গুরুংয়ের সমর্থন পেয়ে যান মমতা, তাহলে উত্তরের ভোটে আধিপত্য তৃণমূলের হাতেই থাকবে। তৃণমূল বিশেষ প্রভাব ফেলতে সমর্থ হবে। শুধু পাহাড় নয়, সমতলের জেলাগুলিতেও প্রভাব খাটাতে পারবে তৃণমূল কংগ্রেস।

২০২১-এ তৃণমূলের সঙ্গেই থাকবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা
বিমল গুরুং জানিয়েই দিয়েছেন ২০২১-এ তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গেই থাকছেন। ফলে পাহাড়ের দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং, ফুলবাড়ি, নাগরাকাটা, আলিপুরদুয়ারের কিছুটা নিয়ে অন্তত ১০টি কেন্দ্রে বিমল গুরুংয়ের প্রভাব রয়েছে। ফলে পাহাড় ছাড়াও সমতলের আসন জিততেও বিমল গুরুংয় সহায়ক হবেন।

গুরুং-তামাংয়ের সমীকরণে তৃণমূলের ভবিষ্যৎ
বিমল গুরুংয়ের সমর্থন নিয়ে পাহাড়ে মাত দেওয়া খেলায় মমতা মাস্টারস্ট্রোক দিলেও, এখানে এবার আরও একটা ফ্যাক্টর কাজ করবে। তা হল- বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে বিনয় তামাংয়ের সমীকরণ কী দাঁড়াবে। বিমল গুরুং-রোশন গিরিরা পাহাড়ে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে যদি বিনয় তামাং-অনীত থাপারা বিগড়ে যায়, তবে ফের সমীকরণ বদলে যেতে পারে।

পাহাড়ের অন্যদলগুলির সমর্থন কি পাবেন গুরুং
সেইসঙ্গে পাহাড়ের অন্য ছোটোখাটো দলগুলির কী অবস্থান হবে, সেটাও নির্ভর করবে পাহাড় সমীকরণে। গোর্খা জনমুক্তি বিষয়টিকে কীভাবে নেয়, তারপর পাহাড়ের অন্যদলগুলির সমর্থন তিনি পান কি না, সেসব পরিস্থিতি খতিয়ে্ দেখেই রাজনৈতিক মহলের একাংশ মন্তব্য করতে চাইছে। তারা এ ব্যাপারে আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে নারাজ।

২০২১-এর আগে চূড়ান্ত নাটকীয় পরিস্থিতি পাহাড়ে
সবমিলিয়ে পাহাড়ে এখন চূড়ান্ত নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিমল গুরুংয়ের মন্তব্য নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি সেভাবে। তবে এটা স্থরি যে বিমল গুরুংয়ের মন্তব্য গেরুয়া শিবিরকে চাপে ফেলে দিয়েছে। পাহাড়ের রাজনীতি ফের অন্যদিকে মোড় নিতে চলেছে। ২০২১-এ অন্য লড়াই দেখা যাবে পাহাড়ে।

পাহাড় নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন অনেক নিশ্চিন্ত
পাহাড়ে পূর্ণাঙ্গ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থন আদায় করে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিমল গুরুং প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সমর্থন করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই। ফলে পাহাড় নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন অনেক নিশ্চিন্ত। এবার পাহাড় রাজনীতি ফের অন্য খাতে বইবে।

নীরব সমর্থন গুরুংয়ের প্রতি, লাভ ওঠাবে তৃণমূল
বিমল গুরুং শহরের বুকে দাঁড়িয়ে বলেন, তিনি একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই দেখতে চান। তাঁর এই মন্তব্য আলোড়ন ফেলে দেয় রাজ্য রাজনীতিতে। আর পাহাড়ের মানুষের নীরব সমর্থন যে গুরুংয়ের প্রতি রয়েছে তার প্রমাণ ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির মসৃণ জয়। ২০১৯-এ গুরুংপন্থীরা বিজেপিকেই সমর্থন করেছিলেন, বিনয় তামাংরা তৃণমূলকে।