বিধানসভা ভোট ২০১৬: মধুর সম্পর্ক টিকল না, তৃণমূলের সঙ্গে আড়ি রেজ্জাক মোল্লার!
কলকাতা. ১০ ফেব্রুয়ারি : মধুর মিলন ছিল অল্পদিনেরই। মনোমালিন্যের জেরে এবার তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেও ব্রেক আপ করলেন প্রাক্তন সিপিএম নেতা রেজ্জাক মোল্লা।
ঘোরতর দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে গত বছরই দল থেকে রেজ্জাক মোল্লাকে বহিষ্কৃত করেছিল সিপিএম। এরপর থেকেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে সুর নরম করতে শুরু করেন সিপিএম-এর আটবারের এই বিধায়ক। গত ১১ জানুয়ারি নবান্নে মমতার সঙ্গে রেজ্জাক মোল্লার বৈঠক নয়া জল্পনা উষ্কে দেয়।
জল্পনায় ইতি টেনে পরে স্থির করা হয় ১২ ফেব্রুয়ারি তৃণমূলে যোগ দেবেন রেজ্জাক। কিন্তু সেগুড়ে বালি। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগেই তৃণমূলের সঙ্গে আড়ি হয়ে গেল দোর্দণ্ডপ্রতাপ প্রাক্তন এই সিপিএম নেতার।
৭১ বছরের প্রবীন এই রাজনীতিবিদ সংবাদমাধ্যমের একাংশকে জানান, "তৃণমূল আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। পূর্ব ক্যানিং বিধানসভা কেন্দ্র থেকে আমাকে প্রার্থী করতে এখন অস্বীকার করছে তারা। ১৯৭২ সাল থেকে ওই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে আমি দাঁড়াচ্ছি।"
আর সেই কারণেই আপাতত তৃণমূল থেকে মন উঠেছে রেজ্জাক মোল্লার। তৃণমূলে যে আর তিনি যোগ দিচ্ছেন না তা মনে মনে স্থিরই করে ফেলেছেন। রেজ্জাক মোল্লা এও জানিয়েছেন, ভানগড় বিধানসভা কেন্দ্র থেকে অথবা হুগলি বা বর্ধমানের যে কোনও কেন্দ্র থেকে লড়ার প্রস্তাব দিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু সে প্রস্তাবে না করে দিয়েছেন রেজ্জাক।
আপাতত ফের সিপিএম-এ ফের ঢোকার জন্য বর্তমান নেতাদের সঙ্গে রেজ্জাক কথাবার্তা শুরু করেছেন বলে সূত্রের খবর। তবে, সিপিএম দলের নিচুতলার অধিকাংশ নেতা কর্মীরাই তাঁকে দলে ফেরত নেওয়ার ঘোর বিরোধী। এই অবস্থায় চলতি বছর বিধানসভা ভোটের আগে তিনি পুরনো দলে ফিরতে পারবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েই যাচ্ছে।
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রেজ্জাক মোল্লাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর সেবছর অক্টোবর মাসেই নিজের দল ভারতীয় ন্যায়বিচার মঞ্চ গঠন করেন মোল্লা। দলে থাকাকালীন যেভাবে দলের তিন শীর্ষ নেতা প্রকাশ কারাট, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও নিরুপম সেনকে ক্রমাগত আক্রমণ করে যাচ্ছিলেন রেজ্জাক দল থেকে বহিষ্কার হওয়ার পরেও তার স্বভাবে কোনও পরিবর্তন আসে। তারপর আবার তৃণমূলের দ্বারস্থ হওয়া সব মিলিয়ে সিপিএমের একটা বড় অংশ ক্ষুব্ধ রেজ্জাক মোল্লার বিরুদ্ধে।
সিপিএম-এ একাংশ তো রেজ্জাক মোল্লাকে ইতিমধ্যে 'চরম সুযোগসন্ধানী' আখ্যাও দিয়ে বসেছেন। নিজের সুবিধার জন্য মত, ভাবাদর্শ ভুলে তৃণমূলে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। সেখানে সুযোগ করতে না পেরে এখন দলে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পরে সুযোগ পেলে পাল্টি খেতে রেজ্জাক মোল্লা দুবার ভাববেন না বলেই ধারণা সিপিএম নেতাদের একটা বড় অংশের।