তৃণমূল কংগ্রেস বনাম বিজেপির যুদ্ধ এখন নিয়ত বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতিতে! এ এক নতুন ট্রেন্ড
তৃণমূল বনাম বিজেপির যুদ্ধ এখন নিয়ত বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতিতে! এ এক নতুন ট্রেন্ড
বাংলার রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে এখন সাংস্কৃতিক যুদ্ধ শুরু হয়েছে। তৃণমূল বলছে, বিজেপি আদৌ বাংলা সংস্কৃতি বোঝে না। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগসূত্র নেই। বিজেপি মূলত হিন্দি-অধ্যুষিত এলাকার দল। আর বিজেপি জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিতে আগ্রহী যে, জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ছিলেন বাংলার মানুষ।
মোদীর ভাষণ কৌশল
বিগত লোকসভা নির্বাচন থেকেই এই প্রবণতা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের সময় বিজেপি এই নতুন কৌশলটি নিতে শুরু করে। বাঙালি অনুভূতি জাগিয়ে তুলতে তিনি প্রথমে বাংলা ভাষায় কয়েকটি লাইন বলে শুরু করছিলেন ভাষণ। তারপরে হিন্দিতে বাকি ভাষণ দিয়েছিলেন।
বিজেপি ও বাংলা সংস্কৃতি
প্রধানমন্ত্রী একাই নন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তৃতাতেও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতো বাংলার মণীষীদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এটা যে বিজেপির একটা কৌশল ছিল তা স্পষ্ট। বিজেপির সঙ্গে যে বাংলার আত্মিক যোগ রয়েছে এবং তাঁরা যে বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে যোগসূত্র রেখে চলেন, তারই প্রমাণ এই ভাষণ।
তৃণমূলকে বাঙালি বিরোধী আখ্যা
রাজ্য বিজেপির নেতারাও তাঁদের বক্তৃতায় বাঙালি সংস্কৃতি ধরে রেখে তৃণমূলকে বাঙালি বিরোধী বলে অভিযোগ করেছেন বারবার। লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ১৮টি আসনে জয়ের রেকর্ড-সাফল্য সত্ত্বেও ২০১৯-এর ১৪ মে অমিত শাহের একটি নির্বাচনী জনসভা চলাকালীন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুরের মূল্য চোকাতে হয়েছিল।
বিজেপিকে বাঙালি বিরোধী আখ্যা
তৃণমূল অনেকাংশে সফল হয়েছিল বিজেপিকে বাঙালি বিরোধী হিসাবে তুলে ধরতে। বাংলায় লোকসভা নির্বাচনের শেষ পর্বে ভোটগ্রহণকারী নয়টি আসনের মধ্যে বিজেপি একটিও আসন জিততে ব্যর্থ হয়েছিল। যদিও বিজেপি নিজেকে বাঙালির দল হিসাবে উপস্থাপনের জন্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবিকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে।
মমতার কথায়, সরকারি ভাষায়
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়শই বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করেন তাঁর কথায়। প্রায়শই তাঁর বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে বাংলার মণীষীদের কথা উদ্ধৃত করেন। অন্যদিকে রাজ্য সরকার সরকারি সাইনবোর্ড এবং বিজ্ঞাপনে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়িয়ে তোলে। অর্থাৎ বাংলার সংস্কৃতিই এখন বিজেপি বনাম তৃণমূল লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।