পশ্চিমবঙ্গের চিত্র তারকারা কে কোনদিকে ঘেঁষছেন তার আন্দাজ ২১ জুলাই পাওয়া যাবে
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এই মুহূর্তে পালাবদলের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই। সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের শাসকদলের বিপর্যয়ের পরে বিজেপির উত্থানের পথটি আরও মসৃণ হয়েছে এবং এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা শুধুমাত্র দলভাঙা নেতা- কর্মীদের দিকে নয়, নজর রাখছেন সুশীল সমাজের উপরেও। বিশেষ করে বাংলা চলচ্চিত্রের কুশীলবদের দিকে। কারণ পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতির দিক পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় প্রভাব প্রথমেই দেখা দেয় এখানকার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেই।
আট বছর আগে যখন সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম কাণ্ডের পর তৃণমূল কংগ্রেস কলকাতার তখ্তের দিকে এগোতে শুরু করে এবং বামেদের পতন নিয়ে সবাই প্রায় নিঃসন্দেহ, তখন দেখা যায় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পরিবর্তন। কয়েকজন বর্ষীয়ান বামপন্থী ছাড়া তৃণমূলের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেন অনেকেই, আগে ও পরে।

টলিউডে বিজেপির সমর্থনের চোরাস্রোত বইছে তা অস্বীকার করা যায় না
অরে এবারে গেরুয়া বাহিনীর ক্রমাগত প্রভাববিস্তারের ফলে টলিউডেও দেখা যাচ্ছে এক চোরাস্রোত। মুখে এখুনি অনেকে কিছু বলতে না চাইলেও তলে তলে যে বিজেপির দিকে সমর্থন বাড়ছে, তা আঁচ করা যাচ্ছে। অবশ্য সেটা হলে যে খুব অবাক হওয়ার কিছু থাকবে তা নয়। শুধুমাত্র রাজনৈতিক সমর্থনের জন্যে সমর্থন বাড়ছে বিজেপির, তা নয়। টলিউড এখন নানা কারণে বিব্রত। চিটফান্ড কাণ্ডে তারকাদের নাম উঠে আসছে প্রায়ই। গ্রেফতার হয়েছেন এক প্রযোজকও। আর এই পরিস্থিতিতে যেখানে রাজ্যের শাসকদলের ভাবমূর্তি যথেষ্ট কালিমালিপ্ত হয়েছে চিটফান্ড কাণ্ডে, সেখানে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির দিকে একাধিক তারকা হেলে পড়লে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না।

একুশে জুলাই একটি ধারণা তৈরি হবে
তবে উপরি উপরি কিছু বোঝা না গেলেও কে কোন দিকে রয়েছেন তার একটা আন্দাজ আগামী ২১ জুলাই-এর 'শহীদ স্মরণ' জনসভাতেই পাওয়া যাবে বলে আশা করছে ওয়াকিবহাল মহল। বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় এবং মাধবী মুখোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই বিজেপির দিকে ঘেঁষে দাঁড়িয়েছেন। এমনকি, তৃণমূল কংগ্রেসের এক নব্যনির্বাচিত তারকা-সাংসদের কাছেও বিজেপিতে যোগদানের প্রস্তাব এসেছে বলে খবর। এমতাবস্থায় ২১ জুলাই-এর ভিড়ের মুখ দেখেই আন্দাজ হয়তো করা যেতে পারে কে কোন জার্সি পরে খেলছেন।

তারকাদের রাজনীতিতে নামানোর খেলা এবারে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে
তারকাদের ভোটার ময়দানে নামিয়ে দেওয়ার খেলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাজিমাত করতে চেয়েছেন সবার আগে। কিন্তু সেই খেলাই এখন বিজেপি নিজেদের হাতে নিয়ে নিতে চাইছে। কারণ আর কিছুই না, তারকা-সুশীল সমাজের সমর্থন পেলে রাজনীতিবিদদের কাজ অনেক সহজ হয়ে যায় জনগণের কাছাকাছি পৌঁছতে। তাছাড়া, তৃণমূলের গোষ্ঠীবাজি নিয়ে যারা এতিদন কিছু বলতে পারতেন না, তাঁরাও এবারে বিকল্প মঞ্চ পেয়ে গিয়েছেন। সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলিতে কে শেষ হাসি হাসে, এখন সেটাই দেখার।